সকল মেনু

ডালিয়াকে সেলাই মেশিন দিলেন তিলোত্তমা, পাশে থাকবে ছাত্রলীগ

হটনিউজ ডেস্ক:

সোমবার মধ্যরাতে নিউ মার্কেটের দোকান মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। রাতে সংঘর্ষ থামলেও পরদিন গত মঙ্গলবার দিনভর দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। এতে পথচারী নাহিদ হাসান নিহত হন। অর্ধশত শিক্ষার্থীসহ আহত হন শতাধিক।

নিউ মার্কেট এলাকায় দোকান মালিক ও কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষে নিহত কুরিয়ার সার্ভিসকর্মী নাহিদের পরিবারকে সেলাই মেশিন দিয়ে শোকার্ত এই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রলীগ নেত্রী তিলোত্তমা শিকদার। শুধু তাই নয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সঙ্গে তিলোত্তমা ওই পরিবারের কথা বলিয়ে দিয়েছেন। কিছুদিনের মধ্যেই একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করা হবে বলে তিলোত্তমা নিজের ফেসবুকে জানিয়েছেন।

তিলোত্তমা বলেন, নিউমার্কেটে সাদা পতাকা উড়ল,ছাত্ররা দাবী উত্থাপন করছে, ছাত্রদের দাবী মেনে নেয়ার প্রেক্ষিতে সমঝোতার চেষ্টাও চলছে তবে এই সবকিছুর মাঝে যেন আমরা কুরিয়ারকর্মী নাহিদের পরিবারকে না ভুলি।পরিবার চালাতে পেটের দায়ে মাত্র ৭ হাজার টাকার বেতনে ডেলিভারি ম্যানের চাকরীর পথ বেছে নিয়েছে। পরিবারে ৩ ছেলে নাহিদ বড় ছেলে, দুইভাই একজনের বয়স ৭ অন্যজনের বয়স ৩।

স্বাবলম্বী করার উদ্দেশ্যে ছুটে গিয়েছেন উল্লেখ করে তিলোত্তমা বলেন, নাহিদ আর ডালিয়ার প্রেমের বয়স ১ বছর আর বিয়ের বয়স ৬ মাস। নাহিদ সকাল ১০ টায় যখন বাসা থেকে বের হয়েছে তখন ডালিয়াকে বলে গিয়েছে এসে রাতে ডালিয়াকে ঈদের শাড়ী কিনে দিতে মার্কেটে নিয়ে যাবে। সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। ডালিয়া হয়ত শাড়ী পড়বে তবে নাহিদের দেয়া নয়। গতকাল একটি গণমাধ্যমে দেখলাম ডালিয়া ৮ম শ্রেণী পাশ করেছে, সেলাইয়ের কাজ জানে তাই দেখে আজ নাহিদের স্ত্রী ডালিয়া ও নাহিদের মায়ের জন্য সেলাই মেশিন নিয়ে ছুটে গেলাম কামরাঙ্গিরচর নাহিদ ডালিয়ার বাড়িতে। মেয়েটা কিছুটা স্বাবলম্বী হোক।

ছাত্রলীগ ডালিয়ার পাশে থাকবে জানিয়ে তিলোত্তমা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ভাইয়ের সাথে তাৎক্ষণিকভাবে কথা বলিয়ে দিলে তিনি পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন এবং ৫৬ নং ওয়ার্ডের কমিশনারের সাথে কথা বলে কিছুদিনের মধ্যে একটা ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা দেন।

প্রেমের সম্পর্ক ছিল নাহিদ ও ডালিয়ার। সম্পর্কটি চিরস্থায়ী করতে ছয় মাস আগে তারা বিয়ে করেন। সুখেই কাটছিল তাদের দিন। মাত্র ছয় মাসের মাথায় বিধবা হলেন ডালিয়া। মঙ্গলবার থেকে স্বামী নাহিদের ছবি দেখে দেখে কান্না করেই যাচ্ছেন স্ত্রী ডালিয়া। ডালিয়া শুধু বলেন, কর্মস্থলে গিয়েছিল আমার স্বামী, তাহলে কেন তাকে মেরে ফেলা হলো?

মঙ্গলবার ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচর দেওয়ানবাড়ি এলাকার বাসা থেকে বেরিয়ে কর্মস্থলের উদ্দেশে যান নাহিদ। পরে নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় তিনি আহত হন। শুভ নামে এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। তাৎক্ষণিকভাবে শুভ জানিয়েছিলেন, নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় নাহিদ আহত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন।

পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাহিদ মঙ্গলবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইসিইউর কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তৌফিক এলাহী। নিহত নাহিদরা তিন ভাই। সবার বড় তিনি। স্থানীয় বাড়ি কামরাঙ্গীরচর দেওয়ানবাড়ি এলাকায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top