সকল মেনু

চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড : উপুড় হয়ে পড়েছিলো নায়কের রক্তাক্ত নিথর দেহ

হটনিউজ ডেস্ক:

১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৮। রোজ শুক্রবার। রাজধানীর বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচের দরজায় পড়ে ছিলো রক্তাক্ত এক নিথর দেহ। চারপাশে শত শত মানুষের উপচে পড়া ভিড়। উপুড় হয়ে পড়ে থাকা দেহটি আর কারও নয়, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীর।

আশি-নব্বই দশকের বাংলা সিনেমার সাড়া জাগানো অভিনেতা ছিলেন সোহেল চৌধুরী। ক্যারিয়ারের সোনালী সময়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ব্যক্তিজীবনে তিনি প্রয়াত চিত্রনায়িকা পারভীন সুলতানা দিতির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সোহেল-দিতি তারকা দম্পতির সংসারে লামিয়া চৌধুরী নামে এক মেয়ে ও শাফায়েত চৌধুরী নামে এক ছেলে রয়েছে।

দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী ওই হত্যাকাণ্ডের দিনই নিহত সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় আদনান সিদ্দিকীকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী আসামি আদনান সিদ্দিকীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার আসামিরা হলেন- ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, তারিক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, ফারুক আব্বাসী, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, আশীষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী ও শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন।

ঘটনার প্রায় ২৪ বছর পর গত ৫ এপ্রিল রাতে সেই হত্যা মামলার পলাতক ও চার্জশিটভুক্ত এক নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। গ্রেপ্তারের পর তাকে এই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম পরিকল্পনাকারী বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি বলেন, আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক বান্টি ইসলামের সঙ্গে মিলে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে হত্যার পরিকল্পনা করেন আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। ট্রাম্পস ক্লাবে জনসম্মুখে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে সোহেল চৌধুরী অপমান করেন। ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ট্রাম্পস ক্লাবে যাতায়াত করা শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। এক পর্যায়ে ইমন তাদের অনুরোধে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে রাজি হন এবং হত্যাকাণ্ড করেন।

১৯৯৯ সালে সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার চার্জশিট দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। যে কর্মকর্তা চার্জশিট জমা দিয়েছিলেন, তিনি অনেক আগেই অবসরে গেছেন। চার্জশিটের পর ২০০১ সালের ৩০শে অক্টোবর চার্জ গঠনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল এই মামলার বিচার প্রক্রিয়া।

কিন্তু মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৩ সালে একজন আসামি হাইকোর্টে একটি রিট করেন। তার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেয়।

ব্যাপক আলোচিত এই হত্যা মামলার কার্যক্রম দেড় যুগের বেশি সময় স্থগিত থাকার পর, ২০২২ সালে নতুন করে এর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে আশিষ রায় চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলাটি এখন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top