সকল মেনু

সিঙ্গাপুরে জাতীয় গণহত্যা দিবস পালিত

হটনিউজ ডেস্ক:

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কাপুরুষের মতো ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মেতে ওঠে ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যায়, যা কালরাত হিসেবে পরিচিত।

সেই শহীদদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে সিঙ্গাপুরে আজ ‘জাতীয় গণহত্যা দিবস’ পালন করেছে বাংলাদেশ হাইকমিশন। দিবসটি উপলক্ষে আজ সকালে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে হাইকমিশন। হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিঙ্গাপুরে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যরা এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. তৌহিদুল ইসলাম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এসময় জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে পালিত হয় এক মিনিটের নীরবতা। অনুষ্ঠানে গণহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বাণী পড়ে শোনানো হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা মানবসভ্যতার ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কিত অধ্যায় – ২৫ মার্চ কালরাতের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও বাঙালির মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে এর তাৎপর্যের কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের হাইকমিশনার তার বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ২৫ মার্চ কালরাতসহ ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের জন্য আত্মদানকারী সকল শহীদের চরম ত্যাগের কথা বিনম্র চিত্তে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শিরোনামে ২৫ মার্চ রাতে নিরীহ বাঙালির ওপরে পাকিস্তানি শাসকদের পরিচালিত সুপরিকল্পিত গণহত্যা বিশ্বের ইতিহাসে একটি ন্যাক্কারজনক, চরম ধিকৃত এবং একইসঙ্গে ব্যতিক্রমী একটি ঘটনা। সুশিক্ষিত সেনাবাহিনীর হাতে নিজের দেশের সাধারণ মানুষের এমন নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হবার নজির বিশ্বের ইতিহাসে আর নেই। এই ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধের মাধ্যমে পাকিস্তানি শাসকেরা ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতির স্বাধীন জাতিসত্তা হিসেবে পৃথিবীর বুকে আত্মপ্রকাশের অদম্য স্পৃহাকে চিরতরে থামিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রাণীত স্বপ্নাতুর বাঙালি জাতিকে পাকিস্তানি জান্তারা সেদিন দাবিয়ে রাখতে পারেনি। দেশ ঠিকই স্বাধীন হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিসংবাদিত নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় আর্থ-সামাজিক অগ্রযাত্রার সকল ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে।’

হাইকমিশনার আরও উল্লেখ করেন, ‘গণহত্যার মতো ঘৃণ্য অপরাধ সংঘটিত করে কোনো মুক্তিকামী জাতির স্পৃহাকে তথা সত্য প্রকাশকে স্তব্ধ করা যায় না। প্রকারান্তে এমন অন্যায্য কর্মকাণ্ড সেই স্পৃহাকে আরও বাড়িয়ে দেয় ও লক্ষ্য অর্জনকে সহজতর করে। ঠিক এমনটি ঘটেছিল ১৯৭১ সালে বাঙালির মহান স্বাধীনতা আন্দোলনে – অত্যাচারী পাকিস্তানি জান্তাকে মেনে নিতে হয়েছিল পরাজয়ের অপমান। হাইকমিশনার গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলোর সাফল্য কামনা করেন এবং উপস্থিত সকলকে এ লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার অনুরোধ জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top