সকল মেনু

সম্পত্তিই কাল হলো শিশু ফাহিমের! নির্মাণাধীন ভবনে মিলল লাশ

হটনিউজ ডেস্ক:

কুমিল্লার বুড়িচংয়ে নির্মাণাধীন একটি ভবন থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, ওই শিশুকে হত্যার পর সেখানে ফেলে রাখা হয়েছিল। তার শরীরে রয়েছে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের শরিফপুর গ্রামে শিশুটির চাচার নির্মাণাধীন একতলা ভবনের একটি কক্ষ থেকে শনিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান বুড়িচং থানার দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) কাজি হাসান উদ্দিন।

নিহত শিশুটির নাম ফাহিম হোসেন (১৩)। সে ওই গ্রামের নিঃসন্তান কৃষক মন্তাজ উদ্দিনের দত্তক নেওয়া সন্তান। ফাহিম স্থানীয় জোহরা খাতুন বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। রবিবার সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন জানান, কৃষক মন্তাজ উদ্দিনের কোনো সন্তান নেই। এ জন্য প্রায় সাড়ে ১২ বছর আগে তিনি ৫ মাসের শিশু ফাহিমকে দত্তক নেন। দীর্ঘ সাড়ে ১২ বছর ধরে নিজের সন্তানের মতোই শিশুটিকে লালন-পালন করে আসছিলেন তিনি। নিজে কৃষক হলেও চেয়েছিলেন ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করবেন।

শিশুটির বাবা কৃষক মন্তাজ উদ্দিন জানান, শনিবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ পড়ে বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল ফাহিম। এরপর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তিনি স্থানীয় লোকজনসহ ফাহিমকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেন। কোথাও না পেয়ে নিখোঁজের বিষয়টি রাত ১০টায় মসজিদের মাইকে প্রচার করা হয়। পরে রাত ২টার দিকে তাঁদের বাড়ির ৫০ গজ উত্তরে বড় ভাই মতিন মিয়ার নির্মাণাধীন ভবনের ভেতরে গিয়ে একটি কক্ষে তার মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ এসে রাত ৩টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে।

স্থানীয়রা জানায়, নিজের সন্তান না হলেও মন্তাজ মিয়া ফাহিমের ভবিষ্যৎ চিন্তা করতেন। এ জন্য তাঁর সকল সম্পত্তি স্ত্রী ও দত্তকপুত্র ফাহিমের নামে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বিষয়টি তিনি প্রতিবেশী ও স্বজনদের জানান। এ নিয়ে মন্তাজের পরিবারের কয়েকজন তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন।

শিশুটির মা জোহরা আক্তার বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে ফাহিমকে বড় করেছি। কখনও তাকে কোনো কষ্ট পেতে দিইনি। আমার ছেলেটাকে এভাবে খুন করল কারা! পুলিশের কাছে আমার দাবি- দ্রুত খুনিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হোক। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, ছেলেটির শরীরে আঘাতের বেশ কিছু চিহ্ন রয়েছে। আমরা হত্যার পেছনে কে বা কারা আছে, সেটি তদন্ত করে দেখছি। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top