সকল মেনু

কোন রুটে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে পারে রাশিয়া, জানাল মার্কিন গবেষণা সংস্থা

হটনিউজ ডেস্ক:

বর্তমানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়া ও প্রতিবেশি ইউক্রেনের মধ্যে। যেকোনও সময় যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে দুই দেশের মধ্যে। রাশিয়া দাবি, ইউক্রেন যেন কখনওই ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্য না হয়। অন্যদিকে, ইউক্রেনের বক্তব্য- অস্তিত্ব রক্ষায় ন্যাটোতে যোগ দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীনতা অর্জনকারী দেশটির।

এমন পরিস্থিতিতে চরম উত্তেজনায় রয়েছে এই দুই দেশ। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দাবি, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আমেরিকার কাছে এমন সবধরনের ইঙ্গিত আছে।

যদিও সীমান্তে দেড় লক্ষাধিক সেনা মোতায়েনসহ বিপুল যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে মহড়া চালাচ্ছে রাশিয়া। তারপরও দেশটির দাবি করেছে, ইউক্রেনে হামলার ইচ্ছে তাদের নেই।
তবে রাশিয়া যদি ইউক্রেনে আগ্রাসন চালিয়েই বসে সেটি কোন কোন পথে হবে, তা নিয়ে ইতোমধ্যে হিসাব-নিকাশ সেরে ফেলেছে মার্কিন গবেষণা সংস্থা।

বেলারুশ

অন্যান্য সকল রুটের চেয়ে বেলারুশ রুটটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন মার্কিন গবেষকরা। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে স্বাধীন হওয়া এই দেশটির সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক খুবই ভাল। ইতোমধ্যে সেখানে নিজেদের ৮০ হাজার সৈন্য নিয়ে বেলারুশ সৈন্যদের সঙ্গে মহড়া দিচ্ছে রাশিয়া। তাদের সঙ্গে আছে স্বল্পপাল্লার ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র ও পর্যাপ্ত রকেট লঞ্চার। আছে এসইউ-২৫ গ্রাউন্ড অ্যাটাক এয়ারক্রাফট ও এসইউ ফাইটার।

পুতিন যদি ইউক্রেন সরকারের পতন নিশ্চিত করতে চায়, তবে উত্তরের বেলারুশ ধরে হামলা চালানোর সম্ভাবনাই বেশি। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা সিএনএ’র মুখপাত্র মাইকেল কফম্যান এমনটিই জানিয়েছেন।

ক্রিমিয়া

ক্রিমিয়া নামক অঞ্চলটি ২০১৪ সালে অধিগ্রহণ করে নেয় রাশিয়া। ফলে যুদ্ধ যে রুটেই শুরু হোক তার আঁচ সবার ক্রিমিয়াতেই গিয়ে পড়বে।

এই রুটে সম্ভাব্য হামলার কথা জানিয়ে ইন্টারন্যাশনার ইন্সটিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ-এর বেন বেরি বলেছেন, ক্রিমিয়া ধরে যদি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দিকে রুশ সেনারা এগোতে থাকে। তবে ইউক্রেনের বিপুল পরিমাণ সেনা দেশটির নিপার নদীর পুর্বপাশে আটকা পড়বে। সেক্ষেত্রে পশ্চিম, পূর্ব ও উত্তর মিলিয়ে ইউক্রেনের যোদ্ধাদের ঘিরে ফেলতে পারবে রাশিয়ার সেনারা।

এক্ষেত্রে যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিম থেকে রুশ সেনাদের টার্গেটে থাকবে মূলত খেরসন ও ওদেসা দখল করা। সেই সঙ্গে পূর্বের মেলিতোপোল ও মারিওপোলও থাকবে দখলের তালিকায়। এটা সম্ভব হলে ক্রিমিয়া ও অন্য রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে এক ধরনের যোগাযোগ সেতু তৈরি হয়ে যাবে।

ক্রিমিয়ার উপকূলে এরইমধ্যে রাশিয়ার যুদ্ধজাহাজ ঘোরাফেরা শুরু করেছে। আগ্রাসন শুরু হলে ওই জাহাজ থেকে আর্মার্ড ভেহিকেল ও ট্যাংক নামাতে পারবে রাশিয়া।

পূর্বের প্রস্তুতি

পূর্বাঞ্চলে সীমান্তজুড়েই হামলার পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে রাশিয়া। ‘সীমান্তের পুরোটাজুড়েই রাশিয়ার সেনা ছড়িয়ে আছে’ বলে জানালেন কফম্যান।

তিনি আরও জানান, তবে কিয়েভের দিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে চেরনোবিলকে এড়িয়ে যেতে পারে রুশ সেনারা।

অন্যদিকে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ-এর সেথ জোনসের মতে, রাশিয়ার দিক থেকে হামলা চালানো হলে নভে ইউরকোভিচি বা ত্রোয়েবোর্তনো শহর থেকেই সেটা শুরু হবে।

পূর্বের দুই শহর

রুশপন্থী বিদ্রোহীরা ২০১৪ সাল থেকেই ‍পুবের লুহানস্ক ও ডোনেস্ক দখল করে আছে। সেখানে রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে যোগ দেবে অন্তত ১৫ হাজার বিদ্রোহী। ইউক্রেন সরকারের মতে সংখ্যাটা আরও বেশি। পূর্বের রোস্তোভ এলাকায় রাশিয়ার অন্তত ১০ হাজার সেনা স্থায়ীভাবে মোতায়েন করা আছে। সম্প্রতি সেখানে আরও সেনার আনাগোনা বেড়েছে বলেও জানা গেছে।

পশ্চিমাদের ধারণা, ইউক্রেনের পূর্বের অঞ্চলগুলোতে রুশভাষী জনগণকে ‘রক্ষা করার’ মিশন দিয়েই হামলার সূচনা হতে পারে। বেন বেরি বললেন, যুদ্ধ যত ছোট আকারেই শুরু হোক না কেন, ইউক্রেনের এয়ার ডিফেন্স ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সামরিক কমান্ড অবকাঠামোগুলোও আক্রান্ত হবে। ভৌগলিক সীমার বাইরে সাইবার হামলার কথাও বলছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র: বিবিসি

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top