সকল মেনু

আজ বিদায় নেবে নুরুল হুদা কমিশন

হটনিউজ ডেস্ক:

আজ সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় নিচ্ছে কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় এ নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছে। নানা ঘটনায় আলোচিত-সমালোচিত এ কমিশনের পক্ষে আজ সোমবার সকাল ১১টায় নির্বাচন ভবনে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে আত্মমূল্যায়ন জানাবেন কে এম নুরুল হুদা।

২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশনে যোগ দিয়ে কে এম নুরুল হুদা নিজের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ তো একটাই।

দেশবাসীকে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া। সাংবিধানিক দায়িত্ব নিরপেক্ষভাবে পালন করব। কারো প্রভাবে প্রভাবিত হব না। আর বিএনপি একা নয়, ছোট-বড় সব রাজনৈতিক দলকে আস্থায় আনতে কাজ করে যাব। ’
সাত মাস পরই নুরুল হুদার বক্তব্যে পরিবর্তন আসে। ২০১৭ সালের ১৬ জুলাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা পুস্তকাকারে প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ক্ষমতার বাইরে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর প্রকাশ্য বা ঘরোয়া সভা-সমাবেশের বাধা দূর করার দায়-দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন নেবে না।

কে এম নুরুল হুদা কমিশনের অন্যতম লক্ষ্য ছিল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করা। এ লক্ষ্যে তিনি নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দল, সুধীসমাজ, গণমাধ্যম, পর্যবেক্ষক সংস্থা, নারী নেত্রী এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে প্রায় তিন মাসব্যাপী সংলাপের আয়োজন করেন। ২০১৭ সালের ১৫ অক্টোবর বিএনপির সঙ্গে সংলাপে অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের হাত দিয়েই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে। খালেদা জিয়া দেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাষ্ট্র পরিচালনার কাজে বিএনপি সরকার দেশে প্রকৃত নতুন ধারার প্রবর্তন করেছে। ’

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হয়। আওয়ামী লীগ নেতারা সিইসিকে সতর্ক হয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন। এ ছাড়া তিন মাসের ওই সংলাপে কারো কোনো সুপারিশ নিয়ে কমিশন সভায় কোনো আলোচনা হয়নি এবং তা পর্যালোচনা করে গ্রহণযোগ্য সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি বলে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার অভিযোগ আনেন। দায়িত্ব গ্রহণের কিছুদিন পরই অন্য নির্বাচন কমিশনারদের না জানিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের গণবদলির বিষয়টি নিয়েও সমালোচনা হয়।

নুরুল হুদা কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে পেরেছে দাবি করলেও ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ওই নির্বাচনপ্রক্রিয়া পর্যালোচনাবিষয়ক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, “সব নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘অংশগ্রহণমূলক’ বলা গেলেও ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ’ বলা যায় না। ”

টিআইবির ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়, তাদের গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত ৫০টির মধ্যে ৪১টি আসনে জাল ভোট; ৪২টি আসনে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর নীরব ভূমিকা; ৩৩টি আসনে নির্বাচনের আগের রাতে ব্যালটে সিল; ২১টি আসনে আগ্রহী ভোটারদের হুমকি দিয়ে তাড়ানো বা কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা; ৩০টি আসনে বুথ দখল করে প্রকাশ্যে সিল মেরে জাল ভোট; ২৬টি আসনে ভোটারদের জোর করে নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করা; ২০টিতে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার আগেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখা; ২২টিতে ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যাওয়া; ২৯টিতে প্রতিপক্ষের পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top