অর্থনৈতিক রিপোর্টার: কিছু দিনের মধ্যেই থ্রিজি সুবিধা নিয়ে আসছে বাংলাদেশের প্রায় সবগুলো মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানি। থ্রিজি সুবিধার সুফল পেতে হলে ব্যবহার করতে হবে স্মার্টফোন। এদিক থেকে এগিয়ে আছে দেশীয় কোম্পানি ওয়ালটন। এরইমধ্যে থ্রিজি সেবার সর্বোচ্চ সুবিধা সম্বলিত ওয়ালটনের মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাজারে থ্রিজি সুবিধা সম্বলিত প্রিমো ডি-২ থেকে এক্স-২ সিরিজের মোবাইল সেট এরইমধ্যে দেশব্যপী ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সাশ্রয়ী মূল্য, উচ্চপ্রযুক্তির সেবা, আকর্ষনীয় ডিজাইনের কারণে ক্রেতাদের নজর কেড়েছে এই থ্রিজি সেটগুলো। বাজার আসার কয়েক দিনের মধ্যেই এক্স-২ সিরিজর মোবাইল সেট শেষ হয়ে যায়। কোনো কোনো শো-রুমে এই সেট কিনতে আসা ক্রেতাদের লম্বা লাইনও দেখা গেছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওয়ালটনের ডি এবং এক্স সিরিজের মোবাইল সেটে ভিডিও কলিং সুবিধা রয়েছে। আছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা।
উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর বিটিআরসি’র মাধ্যমে থ্রিজি প্রযুক্তির নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামের পর এরইমধ্যে থ্রিজি সনদ পেয়েছে গ্রামীণফোন, বাংলা লিংক, রবি ও এয়ারটেল। আগামী মাসেই উল্লিখিত মোবাইল অপারেটর কোম্পানী থ্রিজি সেবা চালু করতে যাচ্ছে । যদিও সরকারি মোবাইল সেবা প্রতিষ্ঠান টেলটিক অনেক আগে থেকেই থ্রিজি সেবা দিয়ে আসছে।
থ্রিজি (তৃতীয় প্রজন্ম) প্রযুক্তি হচ্ছে উচ্চ গতির মোবাইল ইন্টারনেট সুবিধা দেয়ার প্রযুক্তি। এর মাধ্যমে মোবাইলে ভিডিও কল থেকে শুরু করে টিভি দেখাসহ নানা সুবিধা পাওয়া যায়। পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্স, টেলিমেডিসিনের কাজ ঠিকঠাক করা যায় এই প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে। এর প্রধান সুবিধা হলো থ্রিজি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কথা বলার পাশাপাশি ব্যবহারকারী ভৌগলিক ভাবে যে অবস্থানে থাকবেন সেখানেই উচ্চ গতির ইন্টারনেট সুবিধা পাবেন। ব্যবহার করা যাবে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস), যার মাধ্যমে নিখুঁত পথ নির্দেশনা পাওয়া যায়।
এ প্রযুক্তির সাহায্যে ডিইসিটি এবং ওয়াইম্যাক্স সার্ভিস, ভয়েস কল, ভিডিও কল এবং ওয়্যারলেস ডাটা সবই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আদান-প্রদান করা যাবে। থ্রিজি প্রযুক্তি একই সঙ্গে ভয়েস সার্ভিস এবং উচ্চ গতিসম্পন্ন ডাটা সার্ভিস (১৪ এমবিপিএস পর্যন্ত ডাউনলিঙ্ক এবং ৫.৮ এমবিপিএস পর্যন্ত আপলিঙ্ক) সাপোর্ট করে। থ্রিজি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইলে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) ডিভাইসের মাধ্যমে এবং স্যাটেলাইটের সাহায্যে একজন ব্যবহারকারীর অবস্থান জানা সম্ভব হবে। থ্রিজি প্রযুক্তি কার্যকর থাকলে একটি সাধারণ থ্রিজি সাপোর্টেট মোবাইল হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে অনেকগুলো কাজ সম্পাদন করা যায়। মোবাইল হ্যান্ডসেটের মাধ্যমে ভয়েস সুবিধার পাশাপাশি ব্যবহারকারী ভৌগোলিকভাবে যে অবস্থানেই থাকুক না কেন উচ্চ গতির ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন। টিভি দেখা, খেলা দেখা, ভিডিও ক্লিপস আদান-প্রদান সবই সম্ভব হবে। থ্রিজি সাপোর্টেট মোবাইল সেটের সাহায্যে ভিডিও কনফারেন্স করতে পারবেন। ভিডিও টেলিফোনি পাওয়ারফুল ক্যামেরা, ইমেজ এডিটিং, ব্লগিং, ভিডিও কল, মুভি ট্রান্সফার সবই সম্ভব। বাণিজ্যিক কার্য সম্পাদনের ক্ষেত্রে যে কোনো জায়গা থেকে এমএস ওয়ার্ড, এক্সএল, পাওয়ার পয়েন্ট, পিডিএফ ফাইল এবং অন্যান্য ফরমেটের ফাইল পড়া ও সংশোধন করে আপলোড ডাউনলোডের মাধ্যমে তার ব্যবসায়িক কর্মসম্পাদন করতে পারবেন। কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম) মেইনটেইন করা সম্ভব থ্রিজি টেকনোলজির সাহায্যে। থ্রিজি প্রযুক্তি কার্যকর থাকলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে টেলি-মেডিসিন সার্ভিস আরও সহজ ও কার্যকরভাবে প্রদান করা সম্ভব হবে।
এটি তৃতীয় প্রজন্মের টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক। বাংলাদেশে এর আগে ব্যবহৃত নেটওয়ার্ক ছিল ২.৫ জি বা ২.৭৫ জি । ওয়ালটন সেট একই সিমে ও স্থানে দ্রুত গতির ব্রডব্যান্ড সংযোগও দিতে সক্ষম।
ওয়ালটনের উপ পরিচালক (সেল্যুলার ফোন ডিভিশন) এস এম রেজওয়ান আলম বলেন, থ্রিজি সেবার জন্য বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের সবচেয়ে উপযোগী সেট ওয়ালটন। পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ মানের বিক্রয়োত্তর সেবা। ওয়ালটনের রয়েছে শক্তিশালী সফটওয়্যার টিম। যারা প্রতিনিয়ত আপগ্রেডেশনের কাজ করছেন, নতুন ফার্মওয়্যার আপলোড করছেন। অনলাইনের মাধ্যমেও ক্রেতাদের সেবা দেয়া হচ্ছে। শিগগিরই গুগল প্লে সেন্টারে এসব সফটওয়্যার পাওয়া যাবে।
প্রকৌশলী মোসওয়ার হোসেন বলেন- উন্নত সেবা, সাশ্রয়ী মূল্য এবং দেশীয় ব্র্যান্ডের হওয়ায় ক্রেতারা ওয়ালটন মোবাইল কিনছেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের তরুন তরুণীদের মধ্যে ওয়ালটন নিয়ে এক ধরনের ক্রেজ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, কিছু দিনের মধ্যেই বাজারে আসছে ওয়ালটন ট্যাব। যার দামও থাকবে ক্রেতাদের হাতের নাগালে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।