সকল মেনু

সিরাজগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ভাঙচুর

হটনিউজ ডেস্ক:

সিরাজগঞ্জ শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল হাসপাতালের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসায় নিলুফা ইয়াসমিন (২৫) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে হাসপাতালের মালিক ডা. মো. আব্দুল আজিজ সরকারের ছোটভাই মো. আব্দুল রাজ্জাককে মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছেন নিহতের স্বজনরা। তবে এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালের সকল স্টাফ ও কর্মকর্তা-কর্মচারিরা গাঢাকা দিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান মৃতের স্বজনরা।

মৃত নিলুফা ইয়াসমিন জেলার তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের উত্তর মথুরাপুর গ্রামের শামসুল হোসেনের মেয়ে এবং পেশায় একজন নার্স ছিলেন বলে জানান তার স্বামী মো. রুবেল হোসাইন জানিয়েছেন। রুবেল নিজেও একজন ডিপ্লোমা চিকিৎসক।

মো. রুবেল হোসাইন বলেন, দুপুরের দিকে স্ত্রীকে নিয়ে এসে এখানে ভর্তি করি। তখন তাকে সকল প্রকার টেস্ট করলে সে সম্পূর্ণ সুস্থ আছে মর্মে রিপোর্ট আসে। এছাড়াও আমার স্ত্রী পেশায় একজন নার্স হওয়ায় তিনি স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন। তাকে আগে থেকেই নিয়মিত পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হতো জানিয়ে তিনি বলেন, তারা আজ (মঙ্গলবার) সিজার (অপারেশন) করবেন জানিয়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। এরপর রাত সাড়ে ৭টার দিকে রোগী মারা গেছেন বলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়।

হাসপাতালের মালিক ডা. আব্দুল আজিজ অপারেশন করতে চেয়েছিলেন জানিয়ে ওই রোগীর স্বামী আরও বলেন, ডাক্তার আজিজ সবকিছু ঠিকঠাক আছে জানিয়েই তাকে অপারেশনের জন্য নিয়ে যান। কিন্তু এখন তাকেসহ হাসপাতালের কোনো স্টাফকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

অন্যদিকে নিহতের বড় ভাই আল আমিন কাঁন্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, হাসপাতালে ডাক্তার আসার আগেই নার্সরা ইনজেকশন দিয়ে আমার বোনকে মেরে ফেলেছে। তিনি বলেন, আজ সন্ধ্যা ৬টার দিকে তারা আমার বোনকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। কিন্তু তখনও এনেস্থেসিস্ট আসেননি। তারও এক ঘণ্টা পর তিনি আসেন। এর ৩০ মিনিট অর্থাৎ রাত সাড়ে ৭টার দিকে বলা হয় আমার বোন মারা গেছেন।

তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ও অভিযুক্ত ডা. আব্দুল আজিজকে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম হীরা বলেন, বিষয়টি আমি মাত্রই জানলাম। এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিরাজগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. রাম পদ রায় বলেন, আমি একটু আগেই বিষয়টি জানলাম। এর তদন্ত করে হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ অনুযায়ী কোনও সত্যতা মিললে সেই অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘটনাস্থল থেকে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ আসলে সেই অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top