সকল মেনু

শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত ক্যাপ্টেন নওশাদ

হটনিউজ ডেস্ক:

হ্যাটস অফ ক্যাপ্টেন। সহকর্মীদের ক্যাপ খুলে স্যালুট আর সবার শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম। দক্ষ ও অভিজ্ঞ এ পাইলটের বিদায় শুধু বিমান নয়; এভিয়েশন খাতের জন্য বড় ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর সহকর্মীরা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের নাগপুর থেকে নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের মরদেহ ঢাকায় পৌছায়। বিকেলে বনানী কবরস্থানী মায়ের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় তাঁকে।

আকাশছোঁয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আকাশ জয় করা নওশাদ আতাউল কাইয়ুম ফিরছেন তাঁর প্রিয় বোয়িং এয়ারক্রাফটে। কিন্তু এবারের ফেরা একেবারেই অন্যরকম। যে এয়ারক্র্যাফটের ককপিটে বসে ঢাকার আকাশ থেকে ঢাকার মাটি ছুয়েছেন; সেখানে বৃহস্পতিবার ফিরল তাঁর নিথর দেহ।

অনাকাঙ্ক্ষিত, অপ্রত্যাশিত। চিরচেনা রানওয়েতে বিমান থেকে এদিন নামলেন না; নামানো হলো।

কর্মজীবনের অসামান্য অর্জন বিদায় বেলায় ক্যাপ্টেন নওশাদকে এনে দিল হ্যাটস অফ স্যালুট। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বিমান ও বেবিচকের ঊর্ধ্বতন কর্মকতা এবং সহকর্মীরা।

বিমান চালানোর মতো কঠিন আর চ্যালেঞ্জিং কাজটি যিনি অনায়াসেই করে যেতেন তাঁর বিদায়ে ক্ষতি পুরো এভিয়েশন খাতেরই।

নওশাদকে শ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দরে ছুটে আসা শোকাহত বন্ধু ও কোর্সমেটরা বলেন, নওশাদ ফ্লাইংকে অনেক ভালোবাসতো। কখনও কারও সঙ্গে তাঁর খারাপ আচরণ দেখেননি। বন্ধু হিসেবে যাকে যখন বিপদগ্রস্ত অবস্থায় দেখেছেন, তাঁকেই সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে গেছেন। অত্যন্ত মিষ্টভাষী লোক ছিলেন। খুবই সাধারণ চিন্তা-ভাবনার একজন মানুষ ছিলেন। খুবই মজার মানুষ ছিলেন। খুব হাসাতেন মানুষকে। বিমানের এ টু জেড সবাই তাঁকে এতো পছন্দ করে যে, এখানে সব ক্যাপ্টেনরা আছেন, অনেককে দেখবেন, এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন।

বাদ জোহর ১৮ বছরের কর্মস্থল বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় অনুষ্ঠিত হয় নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের জানাজা। এ সময় নিষ্পলক দৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফার্স্ট অফিসার মোস্তাকিম। সেখান থেকে অশ্রুসিক্ত চোখে বিদায় জানান সহকর্মীরা। পরে বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হয় তাঁকে।

অভিজ্ঞ ও দক্ষ পাইলট হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছিলেন ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুম। কয়েক বছর আগে চাকা ফেটে যাওয়ার পরও বিশেষ দক্ষতায় নিরাপদে বিমান অবতরণ করিয়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন তিনি।

২৭ আগস্ট বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট ওমান থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মধ্য আকাশে হার্ট অ্যাটাক করেন ক্যাপ্টেন নওশাদ। পরে বিমানটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফার্স্ট অফিসার মোস্তাকিম জরুরি অবতরণ করান ভারতের মহারাষ্ট্রের নাগপুরের বিমানবন্দরে। এরপর ক্যাপ্টেন নওশাদকে ভর্তি করা হয় নাগপুরের একটি হাসপাতালে। তবে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে গত সোমবার পৃথিবীকে বিদায় জানান পাইলট নওশাদ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top