সকল মেনু

কাঁচের বাক্সে জিয়াউর রহমানের মরদেহ দেখেছি : মির্জা ফখরুল

হটনিউজ ডেস্ক:

সরকারের ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে সরিয়ে নিতেই সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মরদেহ নিয়ে কথা বলা হচ্ছে বলে মনে করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি দাবি করেন, তিনি নিজে সেই মরদেহ দেখেছেন।

আজ শনিবার বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মরদেহ সম্পর্কে, তাঁর মরদেহ এখানে এসেছে কি-না সে সম্পর্কে কথাগুলো এখন তারা (আওয়ামী লীগ) বলেছে। আমি শুধু আজকে তার একটা প্রমাণ তুলে ধরতে চাই যে, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে সেই চট্টগ্রাম থেকে তোলা হয়, তারপরে তাঁর পোস্টমর্টেম করা হয়। ডা. তোফায়েল আহমেদ সাহেব মরদেহের পোস্টমর্টেম করেছিলেন এবং ২২টি বুলেট তাঁর শরীর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন।’

‘তারপর ব্রিগেডিয়ার আ স ম হান্নান শাহ (প্রয়াত) জিয়াউর রহমানের মরদেহকে সামরিক এয়ার ক্রাফটে করে কুর্মিটোলায় নিয়ে এসেছিলেন; যেটা আমরা সবাই স্বচক্ষে দেখেছি। আমার মনে হয়, তখন ড. মোশাররফ হোসেন সাহেব উপস্থিত ছিলেন। আমিও এসএ বারী এটি (উপপ্রধানমন্ত্রী) সাহেবের প্রাইভেট সেক্রেটারি হিসেবে সেখানে উপস্থিত ছিলাম। আমরা সেখানে দেখেছি, একটা কাঁচের বাক্স ছিলো, সেখান থেকে আমরা তাঁর মরদেহ দেখেছি’, যোগ করেন মির্জা ফখরুল।

বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে ‘২৮ আগস্ট ১৯৭১: জিয়াউর রহমান কর্তৃক রৌমারীতে স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের প্রথম বেসামরিক প্রশাসনের উদ্বোধন’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসব কথা বলেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে এই ধরনের কথাবার্তা বলার একটাই মাত্র উদ্দেশ্য, সেটা হচ্ছে, ইতিহাসকে বিকৃত করে দেওয়া, জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে সরিয়ে দেওয়া। এবং বাংলাদেশকে এই যে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করা হচ্ছে সেখান থেকে মানুষের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়া।’

‘সরকার ভণ্ড আর হিপোক্র্যাটে পরিণত হয়েছে’ উল্লেখ করে সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের এখন কোনো রাজনীতি নাই। তারা অন্তঃসারশূন্য একটা রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তারা জনগণের কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। তারা করোনার সমস্যার সমাধান করতে পারেনি। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান তারা করতে পারেনি। শিশুদের লেখাপড়া প্রায় ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে। সব অর্জনগুলো তারা ধ্বংস করে নিয়ে গেছে। সেজন্য তারা মিথ্যাচার করে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে চায়।’

সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন, ‘রৌমারী মুক্তিযুদ্ধের একটি গৌরবময় ইতিহাস, আমাদের গর্বের স্থান। জেড ফোর্সের অধীনে এই অঞ্চলটি ছিলো স্বাধীন দেশের মুক্তাঞ্চল। ২৮ আগস্ট জেড ফোর্সের কমান্ডার জিয়াউর রহমান সেখানে বেসামরিক প্রশাসনের উদ্বোধন করেন। ওই সময় রৌমারীর জনগন ট্যাক্স দেওয়ার জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকত। তারা জানে যে, তাদের ট্যাক্সের টাকায় মুক্তিযুদ্ধের প্রচেষ্টা আরও জোরদার হবে। জিয়াউর রহমান কেবলমাত্র একজন সমরনায়কই ছিলেন না। কিভাবে বেসামরিক প্রশাসন চালাতে হবে একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তিনি রৌমারীতে।’

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, ‘আজকে ইতিহাসের এমনই বিকৃতি ঘটেছে যে, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা কি-না এটাও আমাদের বক্তৃতা দিয়ে বলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিদেশিদের বক্তব্য কিংবা ইতিহাসের যে নির্মোহ সত্য এগুলোকে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকার প্রাণপন চেষ্টা করে যাচ্ছে। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা, জেড ফোর্সের বীরত্বগাঁথা, রৌমারীর সেই মুক্তাঞ্চলের আকাশ-বাতাস, বৃক্ষ-লতা সব কিছুই সাক্ষী দেবে যে, জিয়াউর রহমান মহান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এই অবৈধ সরকার, অনির্বাচিত সরকারের কথায় দেশবাসী মোটেও আলোড়িত হবে না। মিথ্যা আর কত টিকবে এখানে?’

বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আব্দুস সালামের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চিলমারী উপজেলার বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারী সরকার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top