সকল মেনু

যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীদের সঙ্গে প্রাইভেটকারে উঠে সর্বস্বান্ত আরিফ

হটনিউজ ডেস্ক:

বাসায় ফিরতে বাসের জন্য রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোডে অপেক্ষা করছিলেন আরিফুল ইসলাম। তার মতো আরও কয়েকজন অপেক্ষা করছিলেন। কিছু সময়ের মধ্যে একটি প্রাইভেটকার আসে। সামনে থেকে ছুটে যান কয়েকজন। তাদের পিছু পিছু যান আরিফুলও।

একটি সিট পেয়ে তিনিও উঠে বসেন প্রাইভেটকারে। কিছু দূর যেতেই দুই পাশ থেকে দুজন চেপে ধরেন আরিফুলকে। এরপর তারা ফোন, নগদ টাকা ও বিকাশের পিন নম্বর নিয়ে নেন। সব লুটে নিয়ে চোখে স্প্রে করে গাজীপুরের কালিগঞ্জে রাস্তার পাশে আরিফুলকে ফেলে যান। গত ২০ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এরপর আরিফুল এ ঘটনায় খিলক্ষেত থানায় মামলা করেন। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগ বুধবার (১৬ জুন) রাতে এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করে।

গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের প্রধান মো. মানিক মিয়া, মো. জাকির হোসেন, আরিফ, হযরত আলী ও জাহিদ হোসেন।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, ভিকটিম আরিফুলের আশপাশে আরও কিছু লোক ছিল। তারাও বাসের জন্য অপেক্ষা করার অভিনয় করছিলেন। মূলত তারাও এই চক্রের সদস্য। হঠাৎ আসা একটি প্রাইভেটকারে অন্যদের সঙ্গে উঠতে গিয়ে ফাঁদে পড়েন আরিফুল।

আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ওই প্রতারক চক্র ঢাকার খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে ভুলতা-গাউছিয়া ও এয়ারপোর্ট থেকে ময়মনসিংহ, শেরপুরে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে কৌশলে যাত্রী উঠায়। পরবর্তী সময়ে যাত্রীর গলায় ইলেকট্রিক তার পেঁচিয়ে, গামছা দিয়ে চোখ ও হাত বেঁধে, মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে, গলায় ছুরি ধরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে যাত্রীকে নির্জন স্থানে ফেলে দিয়ে চলে যায়। তারা উক্ত ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে।

রাইড শেয়ারের আগে সতর্ক থাকতে নগরবাসীকে পরামর্শ দিয়েছেন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত এই কমিশনার। রাজধানীর সড়কগুলো সিসিটিভির আওতায় আনতে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।

এ কে এম হাফিজ আক্তার আরও বলেন, রাজধানীতে অনেকগুলো কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে। সেগুলো কেন্দ্র করে অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে। আমরা পুরো শহরকে সিসিটিভির আওতায় আনতে সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

রাজধানীর ফার্মগেট থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড হয়ে থাকে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এই সড়কে একাধিক উন্নয়নমূলক কাজ চলমান। তবে আগামী ১-২ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ সড়ক উন্নতমানের সিসিটিভির আওতায় আনাসহ তদন্তে অন্যান্য প্রযুক্তির সুবিধা যুক্ত হবে।

আসামিদের গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি সাদা রংয়ের প্রাইভেটকার যার রেজি: নম্বর ঢাকা মেট্টো-গ-১১-৭৪৫৭, একটি নকিয়া মোবাইল সেট, লোহার বাটযুক্ত একটি ছুরি, একটি সবুজ রংয়ের পুরাতন গামছা, একটি খাকি স্কচটেপ, লাল-কালো রংয়ের ইলেকট্রিক তার, কালো বাটযুক্ত একটি স্ক্রু ড্রাইভার ও একটি লোহার তৈরি লিভার উদ্ধার করা হয় বলে জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top