সকল মেনু

সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট তালা উপজেলায়,মাত্র দুটি নলকূপই ভরসা

হটনিউজ ডেস্ক:

গ্রীষ্মের তাপদাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তালা উপজেলায সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পানির প্রয়োজন তো অন্য কিছুতে মেটানো সম্ভব নয়।
তাই,যেভাবেই হোক সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে মরিয়া গৃহস্থলিরা। । আর যারা ক্লান্ত শরীরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে না পারছেন তাদের নগদ টাকার বিনিময়ে কিনতে হচ্ছে খাবার পানি। এভাবে গ্রীষ্মে খাবার পানি সংগ্রহে রীতিমত যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাদের।

প্রয়োজনের তাগিদেই উপজেলা সদরের আশপাশের বাসিন্দারা পানযোগ্য এক কলসি পানির জন্য কয়েক কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ছুটে পানি নিতে আসছেন তালা সরকারি কলেজ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়ি সংলগ্ন (নজরুল সাংবাদিকের জমিতে) অবস্থিত গভীর নলকুপ থেকে।

২০০০ সালের পর থেকে বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা এ উপজেলার স্যানিটেশন ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়ে। ২০০১ সাল থেকে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন তৈরিতে জরিপ অনুযায়ী জনসচেতনতা ও বাস্তবায়নে ২০০৩ সালে শতভাগ অর্জন করায় এক যুগান্তকারী সাফল্য। বর্তমান ২০ বছরের ব্যবধানে সঠিক তদারকি, রাজনৈতিক অস্থিরতা, প্রচার-প্রচারণা ও লোকবল সঙ্কটে তালার স্যানিটেশন ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে ২২৯টি গ্রামে ২লাখ ৯৯ হাজার ৮২০ জন জনসংখ্যা ছিল। বর্তমান বেসরকারি জরিপ অনুযায়ী এর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ২৯ হাজার। প্রকৃতপক্ষে শুমারি হলে লোকসংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে। এ উপজেলায় সরকারিভাবে ৪ হাজার ৯৬২টি নলকূপ থাকলেও এর মধ্যে ২ হাজার ৭৫০টি নিরাপদ পানি ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমানে ঐ সমস্ত নিরাপদ পানির উৎস অনেকটাই নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে উপজেলার প্রত্যেকটি বাসা বাড়িতে টিউবওয়েল থাকলেও ২০০৫ সালে নিরাপদ ও অনিরাপদ জরিপে লাল ও সবুজ রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়। বর্তমান ঐ চিহ্নিত ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলার ৮০ ভাগ মানুষ এখনো আর্সেনিকযুক্ত পানি পান করছেন।
তালা উপজেলার সর্বত্রই কৃষি কাজের জন্য অতিমাত্রায় সেচ পাম্প দিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে ভূগর্ভস্থ পানি। ফলে পানির লেয়ার নিচে নেমে যাচ্ছে। এ কারণে গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়ালেই পানি উঠছে না।আর উঠছে তা পানযোগ্য নয়।

সরজমিনে দেখাযায়, প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে উপজেলার মহান্দী, খলিলনগর, নলতা, গোনালি, শাহাপুর, খড়েরডাঙা, শিবপুর, গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দারা কলসি, ড্রাম, বোতল নিয়ে সাইকেল, মোটরসাইকেল ও ভ্যান যোগে ছুটছেন উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসা সামনে ও সরকারি কলেজ অভিমুখে।
শুধুমাত্র তালা উপজেলার লোকজন নই এখানে পানি নিতে আসছেন সূদর পাইকগাছা,কপিলমুনি থেকেও । সেখানে গিয়ে মিলছে পানি সংগ্রহ করতে যাওয়া মানুষের লম্বা লাইন। অনেক সময় ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করার পর মিলছে কাঙ্খিত পানি।
এদিকে উপজেলা সদরে এলাকায় গড়ে ওঠা পানি কোম্পানিতেও ভিড় করছেন স্বচ্ছল পরিবারের লোকজন। কিন্তু সেখানেও চাহিদা অনুযায়ী পানি সরবরাহ করতে হীমসিম খেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদহ, খরা, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এ সঙ্কট ঘনীভূত হচ্ছে। আগামি কয়েক বছরে এ সংকট আরো ব্যাপকতা লাভ করবে। তাই এখন থেকেই বিকল্প পথে মানুষকে সুপেয় পানি সরবরাহে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে।তাছাড়া আমরা গভীর নলকুপ বিভিন্ন স্থাসে বসিয়েছি বা বসানোর ব্যাবস্থা নিচ্ছি। কোন ভালো ফল পাচ্ছি না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top