সকল মেনু

তদন্তে বেরিয়ে এলো গোবিন্দগঞ্জে বিস্ফোরণে মূল রহস্য: র‌্যাব

হটনিউজ ডেস্ক:

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে বিস্ফোরণের সঙ্গে জঙ্গি বা নাশকতা পরিকল্পনার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যদিও এটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) দুপুরে র‌্যাব সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাহিনীটির লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ।

তিনি বলেন, বুধবার বিকেল ৪টার দিকে গোবিন্দগঞ্জের মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামে কাসেম মিয়ার ছেলে বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা দ্রুত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং ছায়া তদন্তে নামে। ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে খায়রুজ্জামান নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব তদন্তে নিশ্চিত হতে পেরেছে যে, এটি কোনোভাবে জঙ্গি হামলা ছিল না। ওই ঘটনায় মেকুরাই নয়াপাড়া গ্রামে কাসেম মিয়ার ছেলে বাড়ির মালিক বোরহান উদ্দিন, একই গ্রামের অহেদুল মিয়া ও মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিড়াডাঙ্গা গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে রানা মিয়া নিহত হয়েছে।

এ ঘটনায় র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার ব্যক্তির নাম খায়রুজ্জামান।

খায়রুজ্জামানের জবানবন্দি ও সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ঘটনা সম্পর্কে র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার প্রধান বলেন, কিছুদিন আগে বগুড়ার মোকামতলায় একটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছিল। সেখানকার কেয়ারটেকার ছিলেন হাবিব। মাটি খনন করতে গিয়ে সেখানে থেকে মর্টার শেল উদ্ধার হয়। সেটি হাবিবের কাছ থেকে স্থানীয় ব্যক্তি বোরহান ও খায়রুজ্জামান সংগ্রহ করে এনে বোরহান উদ্দিনের বাসায় সংরক্ষণ করেন। এই প্রক্রিয়া মোট ৫ জন জানতেন।

হাবিবের কাছ থেকে সেটি নিয়ে খায়রুজ্জামান গত ২৩ মার্চ মোটরসাইকেলে করে নিয়ে বোরহানের বাসায় রাখে। অহেদুল মিয়া প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিস, স্বর্ণ মুদ্রা ও ম্যাগনেট জাতীয় জিনিস বিক্রি করতেন বলে এলাকায় পরিচিতি আছে। অহেদুলই জানিয়েছিলেন, ওই রকেট সদৃশ মর্টার শেলটি মূল্যবান হতে পারে।

নিহত রানা একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। তার কাছে এসব কাটাকাটি সম্পর্কে জ্ঞান ছিল। বোরহান উদ্দিন, খায়রুজ্জামান ও রানা গোবিন্দগঞ্জ বাজার ধরে ধারালো সামগ্রী কিনে করে বোরহানের বাসায় যায়। কিন্তু তাদের কারিগরি জ্ঞান না থাকলেও তারা সেটি কাটাকাটি বা ব্যবচ্ছেদের জন্য চেষ্টা করেন। ফলে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মর্টার শেলটি বিস্ফোরিত হয়।

এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে তিনজন নিহত হয়। হাবিব ও খায়রুজ্জামান একটু দূরে থাকায় বেঁচে যান।

সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে র‌্যাবের তদন্তে প্রতীয়মান হয় যে, এটি কোনো জঙ্গি হামলা ছিল না। লাভের আশায় স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় এটি করতে চেয়েছিল। অর্জিত মুনাফা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়ার পরিকল্পনাও ছিল বলে জানিয়েছে গ্রেফতার খায়রুজ্জামান। যদিও এটা দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ আরও বলেন, গ্রেফতার খায়রুজ্জামান ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তাকে গোবিন্দগঞ্জ থানায় সোপর্দ করা হবে।

তিনি বলেন, বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হলেও র‌্যাব মূল ঘটনা স্পষ্ট করেছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, গোবিন্দগঞ্জে জঙ্গি হামলা বা নাশকতার কোনো আগাম তথ্য ছিল না। আর এটি কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতাও নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে এ র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, ওই মর্টার শেল মাটির নিচে ছিল। কোন দেশ তৈরি করেছিল, কেমন ক্ষমতাসম্পন্ন ছিল তা জানার চেষ্টা করতে ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top