সকল মেনু

চুরি হওয়া শিশু তাইবাকে ফিরে পেলেন মা

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে গত ২৩ ডিসেম্বর চুরি হওয়া দুই মাসের শিশু তাইবাকে বড়াইগ্রাম উপজেলা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় শিশুটিকে চুরির অভিযোগে শাকিলা নামের এক নারীকে আটক করা হয়। উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় শাকিলার বাড়ি থেকে তাঁকে আটক ও শিশুটিকে উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানায় আজ বৃহস্পতিবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) লিটন কুমার সাহা জানান, গত ২৩ ডিসেম্বর গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে কৌশলে সীমা বেগমের কাছ থেকে তাঁর শিশু সন্তানটি (তাইবা) নিয়ে পালিয়ে যান শাকিলা। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা তোফিজ মোল্লা মামলা দায়ের করলে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজসহ তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে গতকাল বুধবার রাতে কালিকাপুরের নিজ বাড়ি থেকে শাকিলাকে আটক করা হয়। এ সময় উদ্ধার করা হয় শিশু তাইবাকে। পরে তাইবাকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।’

এসপি বলেন, ‘শিশু তাইবা চুরি হওয়ার ঘটনা প্রচণ্ড আলোচনার সৃষ্টি করে। তাইবার মা কান্নায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তাঁর সন্তানকে পাওয়ার জন্য। পুলিশের ওপর অগাধ আস্থা রেখে শিশুটির পরিবার থানায় আসেন। আমরা এ তথ্য শোনার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে যাই। গিয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রত্যেক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করি এবং মায়ের কথা শুনি, তাঁর পরিবারের কথা শুনি। এবং তাঁদের কান্নাকে আমরা বুকে ধারণ করে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে অভিযান চালাই।’

কী কারণে শিশুটিকে চুরি করা হয়েছিল জানতে চাইলে এসপি বলেন, ‘শাকিলার একটা সন্তান হয়েছিল একই সময়ে। তাঁর স্বামী ওই সন্তানকে মেনে নেননি। তাই শাকিলা সেই সন্তানটিকে দত্তক দিয়েছিল। এর মধ্যে তাঁর স্বামী ট্রাক ড্রাইভার সাইদুল যখন বাড়িতে ফেরেন, তখন তিনি সন্তানকে ফিরে পাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। আর শাকিলা যেহেতু এরই মধ্যে দত্তক দিয়েছেন, তাই তিনি একটি বিকল্প চিন্তা করে হাসপাতাল থেকে একটি সন্তান পাওয়ার চেষ্টা করেন। এবং তিনি যথারীতি একটি সন্তান পেয়ে যান। এবং মাকে ভুলিয়ে সন্তানটিকে নিয়ে চলে যান। শাকিলা অকপটে এ বিষয়টি আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। আমরা মনে করছি, এই স্বীকারোক্তি কোর্টের মাধ্যমে তিনি দেবেন।’

সন্তানকে পাওয়ার পর শিশু তাইবার মা বলেন, ‘আমি গতকাল আমার বাচ্চাকে ফিরে পেয়েছি। পুলিশকে অনেক ধন্যবাদ। তাদের কারণেই আমার বাচ্চাটা আমার কোলে ফিরে এসেছে। আমি অনেক সন্তুষ্ট। আমার মতো আর কোনো নারী যেন বাচ্চাহারা না হয়। এভাবে যেন কষ্ট না পায়। এবং যে চুরি করেছে, তাঁর কঠিন শাস্তি ও বিচার চাই।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top