সকল মেনু

সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন: মির্জা ফখরুল

হটনিউজ ডেস্ক:

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন, বিচার বিভাগে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। দেশে কোনো সরকার আছে কিনা এটাই জনগণের কাছে প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

দলটির স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। এছাড়া বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার চরমভাবে উদাসীন বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের ২১ সদস্যের একটি ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার আহ্বায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সদস্য সচিব ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াসীন। এই ত্রাণ কমিটি শিগগিরই তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করবে।

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত স্থায়ী কমিটির এ বৈঠক হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। একের পর এক জেলা বন্যাকবলিত হচ্ছে। জনগণের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকারের যে উদ্যোগ প্রয়োজন সেটা আমরা লক্ষ্য করছি না। সরকারের চরম উদাসীনতা বন্যার ব্যাপারে। তারা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে পারছে না। তিনি বলেন, এ রকম পরিস্থিতিতে সরকারের যে রকম উদ্যোগ-সহায়তা নেয়ার কথা সেটা দেখা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত ত্রাণমন্ত্রী কোথাও ঘুরে আসেননি। সরকারের পদক্ষেপগুলো মানুষ দেখতে চায়।

তিনি বলেন, এখানে বিরোধী দলের তেমন কিছু করার নেই। তারা ত্রাণ কমিটি পাঠাতে পারে, সেখানে কিছু কিছু সাহায্য নিয়ে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব বন্যাকবলিত মানুষকে রক্ষা করা। যেটা সরকার করছে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জনগণের নিরাপত্তা ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্রমেই ভেঙে পড়ছে। এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে যেন মনে হচ্ছে দেশে একটা নৈরাজ্য চলছে। আদালতের ভেতরে গিয়ে হত্যা করা হচ্ছে, ছোট্ট শিশুর মাথা কেটে ফেলা হচ্ছে। প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করা হচ্ছে এবং এরপর- প্রধান আসামিকে (নয়ন বন্ড) ক্রসফায়ারে হত্যা করা হল। দেখা গেল সেই মামলার যে বাদী তাকে আবার গ্রেফতার করা হল। দেখা যাচ্ছে যে, সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণহীন এবং বিচার বিভাগে একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে।

ডেঙ্গু প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ডেঙ্গু এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ডেঙ্গুর ভয়ে অফিসে যাচ্ছেন না, মশা কামড়াতে পারে। অথচ একজন মেয়র বলেছেন, এখন পর্যন্ত নাকি কিছুই হয়নি। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত ২১ জন মারা গেছেন, কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সবাই এখন দিনের বেলায় শিশুদের মশারির নিচে রাখছেন। বড়রা মোজা পরে থাকেন, কখন এডিস মশা কামড় দেবে সেই ভয়ে। আমি নিজে উত্তরায় থাকি, এখন পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশনের কোনো উদ্যোগ দেখতে পাইনি- এটাই বাস্তবতা।

সরকারের হজ তত্ত্বাবধান কমিটিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার একেএম নুরুল হুদার অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এ বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে ব্যাখ্যা দাবি করছি।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আত্মসম্মানবিবর্জিত ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশনের প্রধান করা হয়। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা কোথায় নিয়ে গেছে?

এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন দেশের বাইরে যাচ্ছেন সেটা জানা যায়নি। তিনি কি অফিসিয়াল সফরে, নাকি ব্যক্তিগত সফরে, না চিকিৎসার জন্য যাচ্ছেন তাও আমরা জানি না। অর্থাৎ সরকার এ বিষয়ে কিছু বলেনি এখনও। এই রহস্যময়তার প্রয়োজনীয়তা কি আমি জানি না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top