সকল মেনু

বইমেলায় অবাধে ঘুরতে না পারার আক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর

হটনিউজ  ডেস্ক: অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীবইমেলায় অবাধে ঘুরতে না পারায় আক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আগে যখন সরকারে ছিলাম না, তখন এই বইমেলায় এসে ঘুরে বেড়াতাম। এখন বলতে গেলে এক ধরনের বন্দি জীবনই যাপন করতে হয়। বইমেলায় আগের মতো আর অবাধে ঘোরার সুযোগ হয় না। আসতে গেলে নিরাপত্তার কারণে মানুষের যে অসুবিধাগুলো হবে, সেটা বিবেচনা করে আর আসার ইচ্ছাটাও হয় না। সত্যি বলতে কী সবসময় মনটা পড়ে থাকে বইমেলায়।’

শুক্রবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৬বার অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্ধোধন করলেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে ‘বিজয়: ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ নবপর্যায়” শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ থেকে দ্বার খুললো অমর একুশে গ্রন্থমেলার।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, শিক্ষাগ্রহণ করে একটি জাতি আরও উন্নত হতে পারে। দারিদ্র-ক্ষুধামুক্ত হতে পারে, তাই বইয়ের চাহিদা কখনও শেষ হবে না। বইমেলা শুধু বই কেনাবেচার না। বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। এটা ঠিক যে, এখন মোবাইল ফোনেই সব পাওয়া যায়। আবার কেউ ছোট ছোট ডিভাইস ব্যবহার করে পড়েন। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কী-আমাদের ছেলেমেয়েরা পড়ে দেখি আমি। কিন্তু বইয়ের পাতা উল্টিয়ে উল্টিয়ে পড়ার মধ্যে যে আনন্দ সেটা পাওয়া যায় না। তাই বইয়ের চাহিদা কিন্তু কখনও শেষ হবে না। বইয়ের পাতা উলটে উলটে পড়ার মাঝে আলাদা একটা আনন্দ আছে। সেই আনন্দটা আমরা সবসময় অনুভব করতে চাই। তারপরও আমি বলবো, অনলাইনে থাকলে পরে সারাবিশ্বের কাছে এবং সবার কাছে খুব দ্রুত পৌঁছানো যায়। কাজেই ডিজিটাল লাইব্রেরি হওয়াটাও একান্তভাবে প্রয়োজন। সেটা জরুরি বলে আমি মনে করি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশকে আজকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছি। এখন আমরা উন্নয়নশীল দেশ। আর্থ-সামাজিকভাবে বাংলাদেশ আরও উন্নত সমৃদ্ধশালী হোক, সেটাই আমরা কামনা করি। বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে, বাঙালি জাতি সারাবিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে, বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে উঠবে এই বাংলাদেশ। যেখানে জঙ্গিবাদ দুর্নীতি বা মাদক কোনও কিছুর স্থান থাকবে না। বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ায় সব থেকে উন্নত সমৃদ্ধ শান্তিপ্রিয় একটি দেশ। যা জাতির পিতা চেয়েছিলেন। কাজেই জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ ইনশাল্লাহ আমরা গড়ে তুলবো, সেটাই আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।’

উদ্ধোধনী স্মারকে স্বাক্ষর করে সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯’র শুভ উদ্ধোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ২০১৮ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-ভলিউম-২, ১৯৫১-১৯৫২ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন। এছাড়াও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত মোহসেন আল-আরিশি রচিত বইয়ের অনুবাদ ‘শেখ হাসিনা: যে রূপকথা শুধু রূপকথা নয়’ বইটি।

উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বিশিষ্ট সংস্কৃতিক কর্মী রামেন্দু মজুমদার।

অনুষ্ঠানে সুরের ধারার শিল্পীরা শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে। এরপর পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের পর ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করা হয়। এরপর ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top