মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: এএসআই বিকাশকে ঢাকায় আনা হচ্ছেমৌলভীবাজার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক বিকাশ চন্দ দের (৪০) ওপর হামলাকারী জালাল মিয়া ছিলেন একটি মামলার সাক্ষী। বার বার নোটিশ দেওয়ার পরও তিনি সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসছিলেন না। শনিবার রাতে ফোর্সসহ তার বাড়িতে যান এএসআই বিকাশ। সঙ্গে ছিলেন ইউপি সদস্য আব্দুল মুহিতও। সেখানে এক পর্যায়ে জালাল মিয়া বিকাশের ওপর হামলা করেন। ইউপি সদস্য আব্দুল মুহিত বাংলা ট্রিবিউনকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিকাশের বুকে দেশীয় ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়।’ জালাল মিয়া (৪০) মৌলভীবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের সিআর মামলার (দায়রা ১০২/১৫) সাক্ষী। এএসআই বিকাশ চন্দ্র এখন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমইচ) চিকিৎসাধীন।
ইউপি সদস্য আব্দুল মুহিত বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘জালাল মিয়া মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ১০ নম্বর নাজিরাবাদ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নারায়ণপাশা গ্রামের মৃতু ছন্দু মিয়া ছেলে।তিনি বিচারাধীন একটি মামলার সাক্ষী। একাধিকবার নোটিশ দেওয়ার পরও তিনি সাক্ষ্য দিতে না আসায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। জালালকে আদালতে হাজির করার জন্য নির্দেশ দিলে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক বিকাশ চন্দ্র দে ফোর্সসহ শনিবার (১৭ মার্চ) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তার বাড়িতে অভিযান চালায়। এসময় আমিও উপস্থিত ছিলাম। তখন তার বসতঘরের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে পুলিশ তার নাম ধরে ৩০/৩১ বার ডাকাডাকি করে। কিন্তু, জালাল মিয়া কোনও জবাব দেয়নি। বরং পুলিশের ডাকাডাকির শব্দ শুনে পাশের মানুষ জেগে উঠলেও তিনি ঘুম থেকে ওঠেননি। তারপরও পুলিশ জোরে জোরে বলে, আমরা আইনের লোক। আমাদের সঙ্গে স্থানীয় মেম্বার ও এলাকার লোকজন আছে দরজা খোলেন। এক পর্যায়ে জালাল ঘর থেকে বের হয়ে হাতে থাকা লম্বা দা দিয়ে বিকাশের বুকে কোপ দেয়। এতে এএসআই বিকাশ চন্দ্র দে গুরুতর আহত হন। এ সময় সঙ্গে থাকা পুলিশ ফোর্সরা জালালকে দাসহ ঝাপটা ধরে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে থানায় নিয়ে যায়।’
ইউপি সদস্য আব্দুল মুহিত আরও বলেন, ‘জালাল মিয়ারা তিন ভাই। দুই ভাই মারা গেছে। তার এক ছেলে ও স্ত্রী আছে। বিরোধ থাকায় স্ত্রী তার সংসার ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে গেছ।’ মৌলভীবাজার মডেল থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপ-পরিদর্শক ফিলা বেগম রবিবার সন্ধ্যায় হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘ভোররাতে গুরুতর আহতাবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিকাশকে ভর্তি করানো হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার বক্ষব্যাধী হাসপাতালে নেওয়া হয়। দায়ের কোপে বিকাশের বুকের হাড় কেটে গেছে। তবে তিনি শঙ্কামুক্ত।’
ফিলা বেগম আর ও বলেন, ‘জালাল মৌলভীবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের সিআর মামলার (দায়রা ১০২/১৫) সাক্ষী। দীর্ঘদিন ধরে তিনি পলাতক। আদালত থেকে একাধিক বার নোটিশ জারি করলেও তিনি হাজির হননি।’ তার বিরুদ্ধে আর কোনও মামলা অথবা সে কোনও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে আর কোনও মামলা নাই। শুধু একটি মাত্র মামলার সাক্ষী হিসেবে তার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। তবে এখন পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।