সকল মেনু

আমাদের পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি রফতানিও বাড়াতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

হটনিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে সামনে আরও এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের পণ্যের প্রসার করতে হবে। নতুন নতুন পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি রফতানিও বাড়াতে হবে। পাশাপাশি কোন কোন দেশে বাজার আছে তাও খুঁজে বের করতে হবে। তবেই এগিয়ে যাবে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য। আজ সোমবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা উদ্বোধনকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নিজেদের সচ্ছলতার কথা ভাবলেই শুধু হবে না। পাশাপাশি মানুষ যাতে আপনাদের পণ্য কিনতে পারে, সেটার কথাও ভাবতে হবে।’আওয়ামী লীগ সরকার গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা যদি ভালো হয়, তাহলে তারা আপনাদের উৎপাদিত পণ্য ক্রয় করতে পারবে।’এ জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ নানাভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা জোরদার করছে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘শুধু নিজের দেশ নয়, বাইরের দেশ এমনকি নতুন নতুন বাজার এবং সেখানে নিজেদের পণ্য রফতানির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের বাজার ব্যবস্থা আরও বিস্তৃত করতে সরকার ১২টি নতুন দূতাবাস এবং ১৭টি নতুন মিশন খুলেছে।‘সারা বিশ্বের দূতাবাস, মিশনের কর্মকর্তাদের ডেকে তাদের নতুন বাজার, বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশে ১০০টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েই আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে চাই। আর ২০৪১ সালে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হতে চাই।’

দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় আসেননি বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই, আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলব না। পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের ওপর যখন দুর্নীতির দোষ দেওয়া হলো। আমরা চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম এটাতে কোনও দুর্নীতি হয়নি। আমরা দেশ গড়তে এসেছি, দেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়টুকু সম্পূর্ণ কাজে লাগাতে চাই। দুর্নীতি করতে বা নিজের ভাগ্য গড়তে ক্ষমতায় আসিনি। দেশের প্রতিটি মানুষ বা নাগরিক যাতে মাথা উঁচু করে চলতে পারে সে জন্য কাজ করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় এসে বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দিয়েছি। নতুন শিল্প কলকারখানা গড়ে তুলতে মেশিনারিজ আমদানিতে ট্যাক্স কমিয়েছিলাম। বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্রণোদনা দিয়েছি। যাতে দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গড়ে ওঠে। বিনিয়োগ বাড়াতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করা হয়েছে। যেখানে দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ওয়ানস্টপ সার্ভিস দেওয়া হয়। বাজেটের আকার বাড়ানো হয়েছে। আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ ও আমদানির ৭৫ শতাংশ নিজস্ব অর্থায়নে করি। এখন আর কারও কাছে হাত পাততে হচ্ছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার রোল মডেল। বাংলাদেশ এখন তাদের কাছে বিস্ময়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আমরা ৩৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি করতে পেরেছি।

অনুষ্ঠানের শুরুতে উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ শীর্ষক একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, বাণিজ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম এবং বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের সচিব সুভাশীষ বসু এবং ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বক্তব্য দেন।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান বিজয় ভট্টাচার্য। মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা,ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও রপ্তানিকারক এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের মাঠে আজ থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ এর আয়োজন করেছে।

এবারের মেলায় ১৪ ক্যাটাগরিতে দেশ-বিদেশের ৫২০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পেয়েছে। এর মধ্যে থাকছে ৬৪টি প্রিমিয়াম প্যাভিলিয়ন, ৩৬টি মিনি প্রিমিয়াম প্যাভিলিয়ন, ১৭টি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, ২৫টি মিনি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, চারটি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ছয়টি মিনি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ২৭টি বিদেশি প্যাভিলিয়ন ও আটটি মিনি বিদেশি প্যাভিলিয়ন। এ ছাড়া ৬৭টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৮টি বিদেশি স্টল, ২৬০টি সাধারণ স্টল ও ২৪টি ফুড স্টল।

এবারের মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেপাল, হংকং, জাপান, আরব আমিরাত, মরিশাস, ঘানা, মরক্কো ও ভুটান অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করবে।

মেলাকে ভিন্ন আঙ্গিকে সাজাতে মেলায় ফিশ ও বার্ড অ্যাকুয়ারিয়াম প্রদর্শন করা হবে। শিশুদের জন্য থাকবে পার্ক, গেমিং জোন ও খেলার উপকরণ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top