সকল মেনু

মহেশখালীতে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত: ৪ পাইলট উদ্ধার

 কক্সবাজার প্রতিনিধি : জেলার মহেশখালীতে আকাশে সংঘর্ষের পর বিমানবাহিনীর দুটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় পাইলটসহ চারজনই প্রাণে বেঁচে গেছেন।। বিমান বাহিনীর উদ্বৃতি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন।

বুধবার রাতে আইএসপিআরের পরিচালক রাশিদুল হাসান বলেন, দুই বিমানে থাকা চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।

আজ বুধবার রাত ৬ টা ৫০ মিনিটের দিকে মহেশখালী থানা থেকে প্রায় কিলোমিটার দূর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পৌরসভার পুটিবিলার সরওয়ার চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে।

বিমানটি বিধ্বস্তের পরপরই স্থানীয়দের মাঝে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে মহেশখালী ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার পুলিশের বিশেষ শাখা সূত্রে জানা যায়, বিধ্বস্ত বিমানটি বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এতে স্থানীয় বাটা মাঝির বসতবাড়ির বেশীরভাগ অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয় বলে জানা গেছে। ওই সময় আঁখি (১৫) নামে এক কিশোরী আহত হয়েছে। বিমানটিতে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ২০ মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তারা আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। এসময় বাড়িসহ বিমানটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল পৌর এলাকার পুটিবিলায় এখনও বিধ্বস্ত হওয়া বিমানে আগুন জ্বলছে। আগুন যাতে এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট কাজ করছে।

আইএসপিআর জানায়, বিধ্বস্ত বিমানের একটিতে ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শরীফ ও স্কোয়াড্রন লিডার মনির। অপর বিমানে ছিলেন উইং কমান্ডার আজিম ও রাজীব। চার পাইলট বুধবার সন্ধ্যা ৫টা ৫৬ মিনিটে প্রশিক্ষণ বিমান দুটি নিয়ে উড্ডয়ন করেন। ৫০ মিনিট পর কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম শাম্মী বলেন, মহেশখালীতে বুধবার সন্ধ্যায় আকাশে সংঘর্ষের পর বিমানবাহিনীর দুটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে ঘণ্টাখানেক ধরে রাডার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল বিমান দুটি। এর একটির মডেল ইয়াক-৮। দুটি বিমানে দুজন করে চারজন ছিলেন।

বিমানবাহিনীর বরাত দিয়ে কক্সবাজারের এএসপি (ডিএসবি) শহীদুল ইসলাম সন্ধ্যা সাতটার দিকে বলেন, বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে বিধ্বস্ত হওয়ার পর বিমান দুটি দুই জায়গা পড়েছে। একটি মহেশখালীর পালপাড়ায় এবং অন্যটি কম্পনিয়া পাহাড়ি এলাকায় পড়েছে। বিধ্বস্ত হওয়ার পর একটি বিমানে আগুন ধরে যায়। কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে।

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সাধন কুমার মোহন্ত জানিয়েছেন, বিমান বাহিনীর দু’টি প্রশিক্ষণ বিমান সান্ধ্যকালীন মহড়ায় উড়তে গিয়ে আকাশে সংঘর্ষ হয়। পরে মাটিতে পড়ে বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত অংশটি মহেশখালী উপজেলার দু’টি স্থানে পড়েছে বলে জানালেও এতে কেউ হতাহত হয়েছে কি-না তা জানাতে পারেননি তিনি।

তিনি বলেছেন, বিধ্বস্ত বিমান দু’টি এয়ারফোর্সের অতটুকুই সংশ্লিষ্ট বিভাগ তাকে জানিয়েছেন। সেখানে কে বা কারা ছিলেন তা আইএসপিআর তথ্য বিবরণী মাধ্যমে জানাবে।

এদিকে, খবর পেয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুল কালাম ও সংশ্লিষ্টরা ঘটনাস্থলে গেছেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছে মহেশখালীর দমকল বাহিনী।

মহেশখালীর ইউএনও মো. আবুল কালাম জানান, সন্ধ্যার পর পর আকাশে দু’টি বিমানের সংঘর্ষে বিকট শব্দ শোনা যায়। এর পরই মহেশখালী পৌরসভার পুটিবিলা পালপাড়া এলাকায় বিমানের একটি অংশ পড়ে আগুন জ্বলে। আর একটা অংশ পড়েছে উপজেলার নিকটবর্তী ছোট মহেশখালী এলাকায়।

মহেশখালী থানা পুলিশের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, খবর পেয়ে পুলিশের পৃথক ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছে। কক্সবাজারের পুলিশ সুপার ড. ইকবাল হোসেন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরোজুল হক টুটুলসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলের পথে রয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top