নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর বদলগাছীতে রেহেনা (৩৫) নামে এক বাক প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষনের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষনের শিকার বাকপ্রতিবন্ধী মিঠাপুর নতুনপাড়া গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে তার নামে প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ডও আছে।
পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, ঐ বাক প্রতিবন্ধী নারী কয়েকদিন ধরে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছেন না, কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলেই অঝোরে কাঁদছেন, সব সময় ভীত আচরণ করছে। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ওই নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। পারিবারের সদস্যদের ভাষ্য মতে, ওই নারী জন্ম থেকে বাক প্রতিবন্ধী।
গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে তিনি বাড়ির পাশে হাসুয়া নিয়ে উত্তর মাঠে জ্বালানী খড়ি কুড়াতে গিয়েছিলেন। এসময় প্রতিবেশি নজরুল ইসলাম(৪৮) সেখানে তাঁকে একা পেয়ে প্রথমে পাট ক্ষেতে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা চালায়, সে তাতে রাজি না হলে ধর্ষক নজরুল তার হাসুয়া কেড়ে নিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এবং জোরপূর্বক পাট ক্ষেতের ভেতর নিয়ে ধর্ষণ করে। একই গ্রামের ফাতেমা নামে এক নারী ঘটনাটি দেখতে পান। তিনি সেখান থেকে ফিরে অভিভাবকদের ঘটনাটি জানান।
পরে বাকপ্রতিবন্ধী বাড়িতে ফিরে এসে তাঁর মা ও ভাবীকে ইশারায় ঘটনার বিবরণ দেন। অভিভাবকগন ঘটনাস্থলে গিয়ে পাট ক্ষেতের নির্দিষ্ট স্থানে কিছু পাট ভাঙা দেখতে পেয়েছেন। ওইদিনই অভিভাবকগন ঘটনাটি গ্রামের লোকজনদের জানান। সন্ধ্যায় গ্রামের মসজিদ সংলগ্ন মাঠে সালিসী বৈঠক বসে। বৈঠকে গ্রামবাসীরা ছাড়া অন্য কেউ ছিলেন না। বাকপ্রতিবন্ধী নারী বলে সালিস বৈঠকে কোন সুরাহা হয়নি।
উক্ত বাকপ্রতিবন্ধী নারীর ভাবী শাহানাজ বেগম বলেন, আমার বাকপ্রতিবন্ধী ননদ মাঠে খড়ি কুড়াতে গেলে প্রতিবেশি নজরুল ইসলাম পাট ক্ষেতে ধরে নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ননদ বাড়ি এসে আমাদের ইশারায় ঘটনাটি জানিয়েছেন। আমরা পাট ক্ষেতে গিয়ে পাট ক্ষেত ভাঙা দেখতে পেয়েছি।
আমরা এই ঘটনাটি ইউপি চেয়ারম্যান, ওর্য়াডের মেম্বার ও প্রতিবেশিদের জানিয়েছিলাম। প্রতিবেশি নজরুল ইসলাম বড়লোক হওয়ায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বাকপ্রতিবন্ধী নারীর মা বলেন, আমার মেয়েটি জন্ম থেকেই বাকপ্রতিবন্ধী। একারণে তাকে বিয়ে দিতে পারিনি। মেয়েটি সব সময় হাসি-খুশিতে মেতে থাকতো। গ্রামের লোকজন সবাই আমার মেয়েকে ভাল বলে জানে। কিন্তু ওই ঘটনার পর মেয়েটি ঠিকমতো আর খাওয়া-দাওয়া করছে না। কিছু জিজ্ঞেস করলেই অঝোরে কাঁদছে সে।
অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঐ বাক প্রতিবন্ধী নারীকে নিয়ে গ্রামের অন্য এক নারী আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েছে।
মিঠাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন জানান,শনিবার বিকেলে আমি ঘটনাটি লোক মুখে শুনেছি। তবে কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেননি।
বদলগাছি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জালাল উদ্দিন ঘটনাটি জানার পর শনিবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।