ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার ইলিশা ফেরী ঘাট এলাকা থেকে মানবপাচারকারী সন্দেহে এক যুবতীসহ দুই জনকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা। বুধবার ভোরে তাদেরকে আটক করার পর ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল বশারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে কি কারণে তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন ইনচার্জ আবুল বশার তা কারো বোধগম্য নয়। এ নিয়ে ওই এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃস্টি হয়েছে। স্থানীয়রা ইনচার্জ আবুল বশারের বিরুদ্ধে ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোলার ইলিশা ফেরীঘাট এলাকায় গতকাল বুধবার ভোর ৬টার দিকে মানবপাচারকারী সন্দেহে রোকসানা (১৮), মোয়জ্জেম হোসেন (৫৫) কে আটক করে স্থানীয় জনতা। পরে তাদেরকে ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আবুল বশারের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় তাদেরকে কাছে দুটি পাসপোর্ট পাওয়া যায়। যার একটি হচ্ছে আলাউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির। যার নং- ইক০৩৮৩২১৩, অপরটি হচ্ছে- রায়হান উদ্দিন নামের একজনের। যার নং- ইখ০৭৭৪৯৬০। এছাড়াও তাদের কাছে একটি ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও দুটি নাগরিকত্ব সনদ উদ্ধার করা হয়েছে। তখন তাদেরকে ইনচার্জ আবুল বশার জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, মোয়াজ্জেম হোসেনের বাড়ী নোয়াখালী জেলার সোনাইমুরি থানার ট্রলার ঘাট এলাকার মৃত রহিম মাস্টারের ছেলে এবং রোকসানার বাড়ী নোয়াখালী জেলার হাতিয়া থানার জাহাজমারা ইউনিয়নের মৃত আমিনুল হকের মেয়ে। তারা উভয়ই ভোলার উপ-শহর বাংলাবাজার এলাকায় বিদেশ জাওয়ার জন্য ভাষা শিকতে এসেছেন। তবে রোকসানা জানান, তিনি মোয়াজ্জেমের মাধ্যমে জর্ডান যাবেন। তাই এখানে এসেছেন বিদেশী ভাষা শিখতে।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে মোয়াজ্জেম হোসেন স্বীকার করেন যে তিনি দীর্ঘদিন যাবত দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোক বিদেশে পাঠান। তাই তিনি রোকসানাকে নিয়ে ভোলায় এসেছেন বিদেশী ভাষা শিখাতে।
কিন্তু কথা হচ্ছে ভোলায় এমন কোন ভাষা শেখানোর প্রতিষ্ঠান আছে কি না তা ভোলাবাসী-ই জানে না। তবে কি কারণে তারা ভোলাতে এসেছেন তাও কারো বোধগম্য নয়। প্রায় ৪ ঘণ্টা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে আটক রাখার পর কি কারণে ইনচার্জ তাদেরকে ছেড়ে দিলেন তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই আবুল বশার বলেন, স্থানীয় জনতা তাদেরকে আটক করে আমার কাছে পাঠায়। আমি তাদের সকল কিছু পর্যালোচান করে দেখেছি যে তারা সহজ-সরল। তাই তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। ভোলায় ভাষা শেখানোর এমন কোন প্রতিষ্ঠান আছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি কোন তথ্য দিতে পারেন নি। এছাড়া দুটি পাসপোর্ট কি করছেন তা জানতে চাইলে বলেন, ওই দুটি পাসপোর্ট তাদের আত্মীয়-স্বজনের বলে তারা দাবী করায় সেগুলো দিয়ে দেয়া হয়েছে।
এখন সাধারণ জনগণের মধ্যে একটাই জিজ্ঞাসা আটককৃত ওই দুইজন আসলেই কি মানবপাচারকারী ? না কি বিদেশে যাওয়ার জন্য ভোলায় এসেছেন ভাষা শিখতে ? আর এসআই আবুল বশার কি ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন ? এই বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।