হটনিউজ২৪বিডি.কম : জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর বগুড়ার সম্ভাব্য চেয়ারম্যান, সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য প্রার্থীরা সরব হয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পেতে ইতিমধ্যে ৮ জন আবেদন করেছেন। মনোনয়নের ব্যাপারে চেয়ারম্যান প্রার্থীরা আওয়ামী লীগ দলীয় সভানেত্রী ও সদস্য এবং সংরক্ষিত আসনে মহিলা সদস্য প্রার্থীরা জেলা নেতাদের দিকে চেয়ে আছেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন একক প্রার্থী হবার আশা করলেও তাকে ছাড় দেওয়া হয়নি। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনের ব্যাপারে তারা এখন পর্যন্ত কেন্দ্রের কোন সিদ্ধান্ত পাননি; তাই তাদের এ নির্বাচনে যাবার সম্ভবনা কম।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন ছাড়াও দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আরও যারা আবেদন করেছেন তারা হলেন বগুড়া জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. মকুবল হোসেন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বিএমএ জেলা শাখার সভাপতি ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, সাবেক মহিলা এমপি জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক কামরুন্নাহার পুতুল, আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সোলায়মান আলী মাস্টার, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী ও তাঁতী লীগ নেতা মঞ্জুর হোসেন।
জানা গেছে, আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় ভোটার জনপ্রতিনিধিদের সমর্থন আদায়ে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বিজয়ী হতে দলের স্বার্থের দিকে নজর দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে সংবর্ধনার নামে ভোটের প্রচারণা চালাচ্ছেন। নাশকতার মামলার আসামী জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীদেরও বুকে টেনে নিচ্ছেন। তাদের ক্রেষ্ট ও নানা উপহার দিচ্ছেন। তারাও তাকে প্রকাশ্যে সমর্থন করছেন। তবে এত কিছুর পরেও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির বিষয়ে তার অনুসারীরা শতভাগ নিশ্চিত হতে পারছেন না। কারণ এতদিন তাদের ধারণা ছিল জেলা সভাপতিকে সম্মান করে দলের কেউ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আগ্রহী হবেন না। সেক্ষেত্রে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে দলীয়ভাবে মমতাজ উদ্দিনই একক প্রার্থী হবেন। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের তিন সিনিয়র নেতাসহ বিভিন্ন স্তরের আরও ৭ নেতা একই পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে সভানেত্রীর কাছে আবেদন করেছেন। এতে মমতাজ উদ্দিনের অনুসারীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
মমতাজ উদ্দিনের অনুসারীদের দাবি যেহেতু তিনি কখনোই জনপ্রতিনিধি হতে পারেননি; তাই তাকে এখানে সুযোগ দেয়া হবে। তবে ভোটের জন্য নাশকতার মামলা আসামীদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ও তাদের অতিথি করায় সাধারণ এবং ত্যাগী নেতাকর্মীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতারাও পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছেন। যদি দলীয় মনোনয়ন প্রদানের সাথে সংশ্লিষ্টরা ওই বিষয়টি খেয়াল করে থাকেন তাহলে মমতাজ উদ্দিনের মনোনয়ন পাবার সম্ভবনা কম থাকবে। সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান পদে জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ডা. মকুবল হোসেন, সহ-সভাপতি রেজাউল করিম মন্টু ও বিএমএ বগুড়া শাখার সভাপতি ডা. মোস্তফা আলম নাননু’র মধ্যে যে কোন একজনকে বেছে নেওয়া হতে পারে।
তবে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিন এখনও আশাবাদী। তিনি বলেছেন, দলের জেলা নির্বাহী কমিটির সভায় তাকে সর্বসম্মতিক্রমে একক প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পেতে এর রেজুলেশন কপিসহ আবেদন করা হয়েছে। তাই তাকে অবশ্যই মনোনয়ন দেয়া হবে।
অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, তিনি বগুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালে জনগণের অনেক সেবা করেছেন। এবার জেলা পরিষদ থেকে জনগণের সেবা করতে চান। তিনি আশা করেন, দল তাকে মূল্যায়ন করবে। ডা. মোস্তফা আলম নান্নু বলেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে জনগণের সেবা করে আসছেন। আগামীতে জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার ইচ্ছা আছে। তাই তিনি চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। তিনিও মনোনয়ন প্রাপ্তির ব্যাপারে আশাবাদি। বর্তমান প্রশাসক ডা. মকবুল হোসেন বলেছেন, তিনি গত কয়েক বছর জেলা পরিষদ থেকে মানুষের অনেক সেবা ও অনেক উন্নয়ন কাজ করেছেন। আবার মনোনয়ন পেলে অবশিষ্ট কাজ সমাপ্ত ও জনগণের সেবা করে যাবেন।
এদিকে বগুড়ায় জেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের কোনও আগ্রহ নেই। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চাঁন জানান, কেন্দ্র থেকে ভোটের ব্যাপারে কিছু বলা হয়নি। তাই তাদের নির্বাচনে যাবার সুযোগ এখনও নেই।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।