সকল মেনু

হবিগঞ্জে ডাকাতি ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা

ab8b14ea0c4077912fbfaac7ed39c63d-582a81000641eহটনিউজ২৪বিডি.কম : হবিগঞ্জ শহরে ডাকাতি ও চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। ফলে জনসাধারণের মধ্যে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে। আর ডাকাতি ঠেকাতে পাড়া মহল্লায় রাত জেগে দেশীয় অস্ত্র হাতে পাহারা দিচ্ছেন যুবক, বৃদ্ধা, ছাত্ররা। ফলে স্থানীয় লোকজন কিছুটা শান্তিতে রয়েছেন।

এদিকে, ডাকাতি ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসন হবিগঞ্জ শহরে রাত ১২টার পর চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। তারপরও ডাকাতি বন্ধ হচ্ছে না। পুলিশ প্রশাসন বলেছে, কিছুদিনের মধ্যে এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব হবে। তবে ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতিমধ্যে শহরে বিক্ষোভ মিছিলও মানববন্ধন করেছে সম্মিলিত যুব সমাজ। আর চিহ্নিত ডাকাতদের ধরিয়ে দিলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছেন স্থানীয় এমপি মো. আবু জাহির।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় গত অক্টোবরে আটটি বাসায় ডাকাতি হয়। শুধু প্রথম সপ্তাহেই চারটি ডাকাতির ঘটনা ঘটে। একই সময়ে চুরির ঘটনা ঘটেছে এর দ্বিগুণ। ডাকাতির প্রতিটি ঘটনার সময় ডাকাতেরা কৌশলে ঘরের দরজা বা জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে বাসার লোকজনকে বেঁধে ফেলে এবং মারধর করে সব লুট করে নিয়ে যায়। এ সকল ডাকাতি ও চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশ অক্টোবরের শেষ সপ্তাহ থেকে রাত ১২টার পর শহরবাসীর চলাচলের ওপর অলিখিত নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। এই সময়সীমার পর কেউ রাস্তায় বের হলে সন্তোষজনক কোনও জবাব দিতে না পারলে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তার বিষয়ে কোনও ধরনের অভিযোগ না থাকলে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এরপর থেকেই মূলত শহরের শায়েস্তানগর, উত্তর শ্যামলী, রাজনগর, গোসাইপাড়া, নাতিরাবাদসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় দলবেধে রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন এলাকাবাসী। এ সময় স্থানীয় লোকজনের হাতে দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। তবে ডাকাতদের মোকাবেল কারতে এ ধরনের অস্ত্রই যথেষ্ট বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে শহরের শায়েস্তানগর এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘শহরের ভেতরে যেভাবে ডাকাতির ঘটনা ঘটছে, তাতে শহরে আর জঙ্গলে বসবাস করার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। পুলিশের ওপর জনগণের কোনও আস্থা নেই। তারা এ পর্যন্ত ডাকাতির ঘটনায় জড়িত কোনও ব্যক্তিকেই শনাক্ত কিংবা তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। পুলিশের দুর্বলতার কারণে এই ডাকাতি বন্ধ হচ্ছে না। ফলে আমরা বাধ্য হয়ে রাতজেগে পাহারা দিচ্ছি।’

একই এলাকার জিকে গাফ্ফার বলেন, ‘পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। ফলে এলাকার লোকজন শান্তিতে ঘুমাতে পাড়ছেন। ডাকাতদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে আমরা মাঠে নেমেছি।’

একই এলাকার ঝলক জানান, ‘সম্প্রতি শহরে ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় আমরা প্রশাসনের প্রতি আস্থা রাখতে পারছি না। ফলে নিজেরাই নিজেদের জানমাল রক্ষায় নেমে পড়েছি।’

উত্তর শ্যামলী এলাকার রণি নামে এক কলেজ ছাত্র জানান, ‘রাতের ঘুম হারাম করে কলেজ ফাঁকি দিয়ে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছি। কেননা ডাকাতদের ভয়ে এলাকার লোকজন শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি। সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়।’

এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিনুল হক জানান, ‘ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন ডাকাতকে ধরে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছ। ডাকাতি বন্ধে পুলিশ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রতিদিন পুলিশ সন্ধ্যা থেকে ভোর রাত পর্যন্ত শহরের অলিতে গলিতে টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি ছোট রাস্তাগুলোতে মোটরসাইকেলে টহল দেওয়া হচ্ছে। আশা করি শিগগিরই এ থেকে পরিত্রাণ পাবেন এলাকাবাসী।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top