সকল মেনু

বেলাব ডিবির হেফাজতে নিহত আলীর বাড়িতে স্থানীয় সাংসদ

unnamedবেলাব(নরসিংদী) প্রতিনিধি: বেলাবতে ডিবির হেফাজতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছে নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসি। গতকাল শনিবার সকালে স্থানীয় সংসদ সদস্য এডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন নিহতের বাড়িতে আসলে এ দাবি জানানো হয়। এসময় প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের পরিবারের সদস্যদের মুখ থেকে নরসিংদী ডিবি পুলিশ কর্তৃক মোহাম্মদ আলীকে নির্মম নির্যাতন ও লাশ আনতে গিয়ে ডিবি পুলিশের হয়রানির কথা শুনে কাঁদলেন সাংসদ কাঁদলেন এলাকাবাসি।
এলাকাবাসি ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,নিহত মোহাম্মদ আলী কোন সময় মাদক ব্যবসায়ী ছিলনা তবে মাঝে মধ্যে সে মাদক সেবন করতো। গত ৭ সেপ্টেম্বর বুধবার ডিবি এস,আই খোকন চন্দ্র সরকারের নের্তৃত্বাধীন টিমের মোতাহার নামে একজন প্রথমে এয়ারটেল টাওয়ারের ভিতর গিয়ে ফটক লাগিয়ে দেয় এবং ইয়াবা ক্রেতা সেজে বসে। তারা এসময় সোর্স সজল,বায়েজিত ও সি,এন,জি চালক ফারুককে নিয়ে বেলাব গাংকুল পাঁড়া থেকে ইয়াবা ক্রয় করে নিয়ে আসে। এর মধ্যে সজল ও বায়েজিত ডিবির সোর্স হিসেবে তাদের মাধ্যমে মোঃ আলীর নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা আদায়ের চেষ্ঠা করে। তাতে রাজি না হওয়ায় ডিবির আরো দুইজন সদস্য ডেকে এনে তাকে আটক করে রড ও ইট দিয়ে বেদম প্রহার করে। এসময় মোঃ আলীর চিৎকারে তার মা অনুফা, স্ত্রী  ফাতেমা,মামা লিটন সহ এলাকাবাসি এগিয়ে গেলে তার মা স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল সহ তার স্ত্রীকে তার স্বামীকে আর ফেরত পাবেনা বলে হুমকী দিয়ে পিটাতে পিটাতে নরসিংদী নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। পরে নরসিংদী ডিবি পুলিশ কর্তৃক চিকিৎসার জন্য নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নেয়ার পর মোহাম্মদ আলীর মৃত্যু হয়। এসময় এলাকাবাসি স্থানীয় সাংসদকে জানান,ডিবি পুলিশ প্রায়ই বেলাব থানাকে অবহিত না করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মাদকের নামে নিরহ মানুষকে গ্রেফতার করে স্থানীয় ভাবে নিয়োগ দেয়া সোর্স দিয়ে রফাদফা করে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। তাদের দাবি অনুযায়ী টাকা না দিতে পারলেই গ্রেফতারকৃতদের উপর চলে ডিবির অত্যাচারের ষ্টিমরোলার।

এসময় ডিবি কার্যারয় থেকে মোহাম্মদ আলীর লাশ আনতে গিয়ে ডিবি কর্তৃক  কঠোর আচরনের স্বীকার হওয়ার বর্ণনা তুলে ধরেন বেলাব উপজেলা সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ শমসের জামান ভূইয়া রিটন। তিনি বলেন,আমরা ডিবি কার্যালয়ে লাশ আনতে গেলে দুইশতাধিক পুলিশ দিয়ে কর্ডন করে রাখাসহ আমাদের সাথে কঠোর আচরন সহ এক ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রাখা হয়। এসময় আমাদের ভালভাবে কোন কথা বলা ও লাশ দেখতে দেয়া হয়নি। তিনি দাবি করেন,সুরোতহাল রিপোর্ট তৈরীর আগে লাশের গাঁয়ে ঔষধ দিয়ে আঘাতের চি‎‎‎হ্ন মুছে ফেলা হয়। পরের দিন ময়না তদন্তে সময় আমি কৌশলে আগর বাতির প্যাকেট নিয়ে লাশ কাটা ঘরে ঢুকে লাশের গাঁয়ে অসংখ্য আঘাতের চি‎হ্ন দেখতে পেয়েছি। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,বেলাব উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদা,নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবিবা,ওসি মোঃ কায়ুম আলী সরদার,উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান খান,সাংসদের ব্যক্তিগত সহকারী এডবোকেট শহিদুল্লাহ,সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম,মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আলী সাফি সহ স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ সহ মিডিয়ার কর্মীরা। এলাকাবাসি এসপি কর্তৃক গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি সহ এলাকায় মাদক নির্মূলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এমপি নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিঠি গঠনের দাবির প্রতি সমর্থন দিয়ে এ ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। তিনি এ ব্যাপারে দোষী ব্যক্তির সর্বোচ্চ বিচারের দাবি করে তার পরিবার ও এলাকাবাসিকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহবান জানান। এসময় তিনি নিহত মোঃ আলীর আতœার মাগফেরাত কামনা সহ  পরিবারের সদস্যদের শান্তনা প্রদান করেন এবং নিহত পরিবারকে নগদ ১০ হাজার টাকা ও তার একমাত্র শিশু মেয়ে তোবার লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়ার ঘোষনা প্রদান করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top