সকল মেনু

বাংলাদেশে এ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ছেলে তালহা

4338_Tolha islamনিজস্ব প্রতিবেদক,হটনিউজ২৪বিডি.কম:  হরকাতুল জিহাদ(হুজি)  নেতা আলোচিত মুফতি শহীদুল ইসলাম বর্তমানে দুবাইতে অবস্থান করলেও বিশেষ এ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে তার ছেলে তালহা ইসলাম এখন অবস্থান করছে বাংলাদেশে। ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের পাশপোর্টধারী তালহা ইসলাম এখন মধ্যপ্রাচ্য সহায়াতা ভিত্তিক এনজিও আল মারকাজুল ইসলামীর চেয়ারম্যান। সম্প্রতি তিনি সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নিজের চেয়ারম্যান পদটিও অনুমোদন করিয়ে নিয়েছেন। তালহা ইসলামের পিতা মুফতি শহীদুল ইসলাম নড়াইল ২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নির্বাচন করে পরাজিত হন পরে জোট সরকারের আমলে  উপ-নির্বাচনে তিনি এমপি হন।
মুফতি শহীদুল ইসলাম প্রকাশ্যে খেলাফত মজলিশ দল করলেও ভেতরে ভেতরে তিনি ছিলেন হরকাতুল জেহাদের সংগঠক এবং হুজির একটি উপধারার নেতা। আফগান ফেরত মুজাহিদদের সংগঠন হুজির নেতৃত্বের কোন্দলে এক সময়ে চারটি উপধারার সৃষ্টি হয়। এ চার উপধারার নেতা ছিলেন,মুফতি হান্নান,মাওলনা আবদুর রউফ,মাওলানা শফিকুর রহমান ও মুফতি শহীদুল ইসলাম। এরা সকলেই আফগান ফেরত মুজাহিদ।
আফগানিস্থানে সোভিয়েত উপস্থিতির সময়ে সোভিয়েতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে বিভিন্ন মুসলিম দেশ থেকে উগ্রবাদী মুসলিম যুবদের জড়ো করা হয়। প্রথম দিকে বাংলাদেশের যে সকল যুবক ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসায় পড়ে গিয়েছিলো তাদেরকে প্রথম ফুসলিয়ে নেয়া হয় পাকিস্তানের করাচী মাদ্রাসায়। সেখান থেকে নেয়া হয় আফগানিস্থানে। হুজির এ চার উপধারার নেতার মধ্যে মুফতি হান্নান ও আবদুর রউফ পড়াশোনা করতেন ভারতের দেওবন্দ মাদ্রসায়। অন্যদিকে মুফতি শহীদুল ইসলামও শফিকুর রহমান পড়াতেন পাকিস্তানের করাচী মাদ্রাসায়। এই করাচী মাদ্রাসতেই তাদের চারজনের পরিচয়।
আফগান যুদ্ধ শেষে চারজনই একসঙ্গে দেশে ফিরেন এবং হরকাতুল জেহাদ(হুজি) সংগঠিত করেন। এরা সে সময়ে ঢাকার আগারগায়ের তালতলায় হরকাতুল জেহাদের একটি অফিস খুলে। আমরা সবাই তালেবান-বাংলা হবে আফগান শ্লোগান ধারন করে প্রথমে মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের সমর্থনে যুদ্ধ করার সিন্ধান্ত নেয়। এ সময়ে মূফতি শহীদ ও শফিকুর রহমান লাগেজ ব্যাবসা শুরু করে। কিছুদিনের মধ্যেই তাদের ভেতরে  বিরোধ বেধে দলে উপধারার সৃষ্টি হয়।
কোটালী পাড়ায় শেখ হাসিনার জনসভায় বোমাপুতে রাখার ঘটনা ধরা পড়লে মুফতি হান্নানের নাম আলোচিত হয়ে উঠে। এ সময়ে খুলনার কাদিয়ানী মসজিদে বোমা হামলার ঘটনায় মুফতি শহীদুল ইসলাম জড়িত বলে গোয়েন্দা তদন্তে বেরিয়ে আসে। তিনি ওই হামলার আসামী হন। এছাড়াও কমিউনিষ্ট পাটির জনসভায় বোমা হামলার অর্থদাতা হিসেবে মুফতি শহীদুল ইসলামের নাম বেরিয়ে আসে। এ সময়ে তিনি দলের নাম বদল করে জনসেবা আন্দোলন রেখে নতুন ভাবে সকলের চোখে ধুলা দেয়ার চেষ্টা করেন।
এর মাঝেই মুফতি শহীদুল ইসলাম মধ্য প্রাচ্যের কয়েকটি দেশের আর্থিক সহায়াতা ও লন্ডনের মসজিদগুলোতে জুমার নামাজের সময়ে বাংলাদেশের দরিদ্র মানুষদের সহায়াতা করার আবেদন জানিয়ে খয়রাত করার অর্থে গড়ে তোলেন আল মারকাজুল ইসলাম নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এ অর্থ দিয়ে তিনি নির্বাচনী এলাকায় দানখয়রাত করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং একবার নির্বাচনী এলাকায় ৮০ টি গরু কোরবানী করে আলোচিত হন।
একের পর এক মামলায় জড়িয়ে পড়ায় এবং অব্যাহত ভাবে জঙ্গী তৎপরতায় অর্থদানের অভিযোগ উঠায় শেষ পর্যন্ত ২০১০ সালে দেশ থেকে পালিয়ে যান মুফতি শহীদুল ইসলাম। সেই থেকে পরিবার পরিজন নিয়ে দুবাইতে আছেন ,দুবাই থেকে যোগাযোগ  রাখেন দেশের জঙ্গী সংগঠনগুলোর সঙ্গে । এ সময়ে ঢাকার কাকরাইল এলাকার কর্নফুলী গার্ডেন সিটি টাওয়ারের একটি ফ্লাট থেকে বেশ কয়েজন নারী ও এক পাকিস্তানীকে জাল মুদ্রাসহ গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের মধ্যে ছিলেন মুফতি শহীদুল ইসলামের কন্যা।
মুফতি শহীদের ছেলে তালহা সমাচার
মুফতি শহীদুল ইসলাম দুবাইতে অবস্থান করলেও তার ছেলে তালহা ইসলাম এখন আছেন বাংলাদেশে। সম্প্রতি তিনি আল মারকাজুল ইসলামের চেয়ারম্যান হয়েছেন। তালহা পড়াশোনা করেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের দেওবন্দ মাদ্রাসায়। দেওবন্দে পড়াশোনা করার সময়ে তিনি ভারতের নাগরিকত্ব নিয়ে ভারতীয় পাশপোর্ট গ্রহনে করেন। সূত্রমেত ভারতীয় পাশপোর্ট ব্যবহার করে তিনি দক্ষিন আফ্রিকায় পড়াশোনা করেন। তালহা ইসলাম তার ফেসবুক পরিচিতিতেও লিখেছেন তিনি দক্ষিন আফ্রিকার দারুল উলুম জাকারিয়া মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেছেন। সূত্রমতে ভারতীয় পাশপোর্ট ব্যবহার করে তিনি বাংলাদেশেও এসেছেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশী পাশপোর্ট ব্যবহার করছেন। গত ১ আগস্ট তারিখে আল মারকাজুলের আরেক সদস্য মুফতি শরাফতের নামে তালহা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করতে গিয়ে ওই দরখাস্তে তিনি স্বীকার করেছেন তার একাধিক পাশপোর্ট ব্যবহারের কথা,সেখানে ভারতীয় পাশপোর্টের কথাও আছে।
তালহা কেবল আল মারকাজুল-ই দেখাশোনা করছেন না তার পিতার ট্রাভেল এজেন্সী মিনা ভিশনও দেখা শোনা করছেন। এই মিনা ভিশনের অফিস রাজধানীর বিজয় নগরের সাব্বির টাওয়ারে। অ্যদিকে আলমারকাজুলের অফিস ২১/১৭ বাবর রোডে।
সম্প্রতি সময়ে আল মারকাজুল ইসলামে ও মিনা ভিশনের অর্থিক লেনদেনে অস্বচ্ছতার বিষয়ে প্রশ্ন তোলা হলে মিনা ভিশনের ম্যানেজার সরোয়ার মধ্য প্রাচ্যে চলে যান। অন্যদিকে আল মারকাজুলের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য সদস্যরা সমাজ সেবা অধিদপ্তরে একটি লিখিত দিয়ে জানান,তারা প্রতিষ্ঠানের অর্থিক লেনদেনের বিষয়ে অবগত নন। এখানে অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে অন্য কোথাও যাচ্ছে কি না বা কোন জঙ্গীখাতে ব্যয় হচ্ছে কি না ,সে বিষয়ে তাদের জানা নেই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top