সকল মেনু

ছাতকের সুরমা ব্রিজের নির্মাণ দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ

unnamed চান মিয়া ছাতক,সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের ছাতকের সুরমা সেতুর নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ রয়েছে। ফলে দোয়ারাবাজারও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলাসহ ছাতকের উত্তরাঞ্চলের সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়নি। সেতুর না থাকায় দু’টি সিমেন্ট কারখানার মালামাল নদী পারাপারসহ পরিবহনের ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে চরম দূর্ভোগ। জমি অধিগ্রহন, বাজেট স্বল্পতাসহ বিভিন্ন জটিলতায় বছরের পর বছর বন্ধ রয়েছে নির্মাধীন এ সেতুর অবশিষ্ট কাজ। তবে সেতুটির অসম্পূর্ন কাজ শেষ করতে প্রায় ১শ’১৩কোটি টাকার নতুন একটি প্রকল্প সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বিগত বিএনপি সরকারের আমলে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হলেও পরবর্তীতে তত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তা বন্ধ হয়ে যায়। ছাতকবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে ছাতক উপজেলার সঙ্গে পাশ্ববর্তী দোয়ারাবাজার উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের জন্য শহরের ভাজনামহলের পাশে সুরমা নদীর ওপর ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেতু নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। সরকারের একটি বিশেষ প্রকল্পের আওতায় ২০০৬ সালের জানুয়ারী মাসে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০০৭সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর কাজটি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১০সালে সেতুর অসমাপ্ত কাজ শেষ করার জন্য ৫১কোটি টাকার একটি প্রকল্প যোগাযোগ মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়। ঐ প্রকল্পটি অনুমোদন না হওয়ায় নির্মান কাজ আবারও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
সেতুর ছাতক শহর অংশে তিনটি  পাকা ভিত পিলার ও নদীর ওপারে আরও দুটি পিলারের কাজ শেষ করা হয়েছে। সেতুর দুই পাড়ের সংযোগ অংশের কিছু পাকা কাজও হয়েছে। এ ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কোন কাজ হয়নি। নদীর দক্ষিণ পাড়ে সেতুর ঠিক মুখেই গড়ে উঠেছে আকিজ গ্রুপের কারখানাসহ আরো বেশ কয়েকটি প্রতিষ্টান।
সুরমা নদীতে সেতু নির্মান কাজ শেষ হলে ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। পার্শ্ববর্তী দোয়ারাবাজার উপজেলা হয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সদরে যেতে ২ঘন্টা সময় বাচবে। এদিকে শহরের থানা রোডের আল-মক্কা গার্মেন্টেসর স্বত্বাধিকারি হাজি আলী আকবর, আজহার ম্যানশনের শাহ জালাল ট্রেডিং এর প্রোপাইটর আখতার হোসেন, ট্রাফিক পয়েন্টের আতিক হোটেলের স্বত্বাধিকারী আলতাবুর রহমান-কাঁচা মিয়া, ব্যবসায়ি ছইল মিয়া, সমাজসেবী জাহাঙ্গীর আলম, আলীজ হোটেলের পরিচালক সুলাইমানসহ ব্যবসায়িরা জানান, সুরমা নদীর উপর সেতু নির্মাণ করা এঅঞ্চলের মানুষের প্রানের দাবি ছিল। কিন্তু অনেক দূর এগিয়ে যাবার পর সরকার বদল হলে কাজটি বন্ধ হয়ে পড়ে। সেতুর কাজ পূনরায় শুরু করার জন্যে তারা সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। আ’লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ছানাউর রহমান ছানা বলেন, ছাতক-দোয়াারাবাজার উপজেলার বাসিন্দাদের জন্য এ সেতু নির্মান অত্যন্ত জরুরী। সেতুটি সম্পন্ন হলে অত্র অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ উপকৃত হবেন। যোগাযোগের সুবিধা সহ বাড়বে বিনিয়োগ, এলাকায় ঘটবে ব্যবসা-বানিজ্যের প্রসার ।
সুনামগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন বলেন, তত্ত্বাবধাক সরকারের আমলে হঠাৎ করেই সেতুর নির্মান কাজ বন্ধ হবার পর আর কোন কাজ হয়নি। সেতু নির্মাণ শুরু করতে সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। তবে কাজ বন্ধ করা অত্যন্ত সংকীর্ণতার পরিচয় বলে তিনি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ছাতক উপজেলার দায়িত্বে থাকা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সজিব আহমদ জানান, সেতুটি নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে নতুন করে ১শ’১২কোটি ৯৯লাখ ৪৯হাজার টাকার প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেতুর বর্তমান পিলার গুলোকে টিক রেখেই অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে। সওজ এর প্রধান কার্যালয় থেকে নতুন প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে ভুমি অধিগ্রহন জটিলতা নিরসনে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সহায়তার জন্য চিটি দেয়া হবে। নতুন প্রকল্পে সেতুর ভুমি অধিগ্রহন বাবদ খরচ ধরা হয়েছে ২২কোটি টাকা। কবে সুরমা সেতুটি নির্মাণ করা হবে সে প্রত্যাশায় দিন গুনছে দু’উপজেলাবাসী।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top