সকল মেনু

পার্বতীপুরে মুক্তিযোদ্ধা কাইয়ুমের পরিবারে হতাশা

unnamed (12) রাইসুল ইসলাম, পার্বতীপুর (দিনাজপুর):  বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মচারী মোঃ আব্দুল কাইয়ুম ও তার স্ত্রী মোছাঃ আমেনা বেগম তাদের দুই পুত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও পোষ্য কোটায় চাকুরী না হওয়ায় চরম হতাশার মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। বড় ছেলের সরকারী চাকুরীতে ঢোকার মুক্তিযোদ্ধা কোটার যে বয়সসীমা তাও এখন শেষ হওয়ার পথে।
আব্দুল কাইয়ুম বলেন, আমার বড়ছেলে মোঃ আরিফুল জামান বাংলাদেশ রেলওয়েতে খালাসী পদে গত ২ নভেম্বর ও পোর্টার পদে ২২ আগষ্ট রাজশাহীতে মৌখিক পরীক্ষা দিয়েছে। এ দু’টি পদে এখনও অফার লেটার প্রদান করা হয়নি। অন্যদিকে, গত জুন মাসে কলম্যান পদে আরেকটি দরখাস্ত করেছে সে। এছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে এমএলএসএস ও খাদ্য অধিদপ্তরে দারোয়ান পদে পৃথক দু’টি আবেদন করেছে। তারমধ্যে খাদ্য অধিদপ্তরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান এমপি একটি ডিও লেটার প্রদান করেছেন।
অনুরুপভাবে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমের কনিষ্ঠপুত্র সোহেল রানা রেলওয়ের খালাসী ও পোর্টার পদে পরীক্ষা দিয়েছেন। পোর্টার পদে নতুন করে আরেকটি আবেদন করেছেন সে। এছাড়াও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে অফিস সহায়ক ও খাদ্য অধিদপ্তরে দারোয়ান পদে পরীক্ষা দিয়েছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আবেদনের সপক্ষে একটি ডিও লেটার দিয়েছেন এ অধিদপ্তরে। তবে এই পদে এখনও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল ও নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি বলে জানা গেছে।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ১৬ মে বিহারীরা আমার বাবা আজগার আলীকে বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে বেদম প্রহার করে। তারা বাবার হাত পা শরীর থেকে বিছিন্ন করে রেলওয়ের লোকোসেডের কয়লার ইঞ্চিনে জ্বলন্ত বয়লারে নিক্ষেপ করে হত্যা করে। বিহারীরা সেদিন আমাদের বাড়ীর ঘরদোর সব কিছু আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনার পর আমাদের পরিবার নিয়ে আমি ভারতে চলে যাই এবং মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করি। কাইয়ুম বলেন, দেশ স্বাধীন হলে আমি শূন্য ভিটায় ফিরে আসি। বাবার অবর্তমানে আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমের বাড়ী উপজেলার বাসুপাড়া গ্রামে। তার তিন ছেলে দুই মেয়ের সবার বিয়ে হয়েছে। বড় ছেলে বিয়ে করে পৃথক সংসার করছেন। আব্দুল কাইয়ুম জানান, স্বাধীনতার পর ১৯৮৩ সালে রেলওয়ের ছোট একটি পদে আমার চাকুরী হয়। চাকুরী করে ৬ ছেলে মেয়ের ভরনপোষন ও ২ মেয়ের বিয়ে দিতে সর্বশান্ত হতে হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাইয়ুমের দুই পুত্র মোঃ আরিফুর জামান ও মোঃ সোহেল রানা এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমাদের দুই ভাইয়ের চাকুরী না হওয়ায় মা ও বাবা দু’জনের শরীর একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। উল্লেখ্য, আব্দুল কাইযুমের গেজেট নং ২৬৪৭, ভারতের গেজেট নং ৮৭১৬, মুক্তি বার্তা নং ০৩০৮০৮০০৩২, মন্ত্রণালয়ের সনদ নং ম-৩৯১৭৮ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সনদ নং ১৭০১৭।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top