সকল মেনু

দল-মত যার যার ,বঙ্গবন্ধু সবার

3109_ruma আগস্ট। শোকের মাস। বাঙ্গালীর কান্নার মাস,বেদনার মাস। ১৯৭৫ সালের এ মাসের ১৫ তারিখে একদল বিশ্বাসঘাতক বাঙ্গালী সন্তান রাতের  আধারে  হত্যা করেছিলো বাঙ্গালীর হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ঘাতকের ঘটিয়েছিলো ইতিহাসের জঘন্যতম এক হত্যাকান্ড। তারা কেবল বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি,হত্যা করেছিলো সর্বংসহা বেগম মুজিব ,শিশু রাসেল,নব বধু সুলতানা কামাল , অন্তস্বত্বা আরজু মনি সহ নারী-পুরুষ ও শিশুদের।
আমরা বাঙ্গালীরা পরাধীন ছিলাম যুগ যুগ ধরে। বলতে গেলে সম্রাট অশোকের পর বাঙ্গালীর কোন স্বাধীন রাষ্ট্রের অস্থিত্ব ছিলো না। নবাব সিরাজউদদ্দৌলা বাঙ্গালী ছিলেন না,বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব ছিলেন। পলাশীর প্রান্তরে গুটিকতক মানুষের বিশ্বাসঘাতকতায় ভাগীরথি নদী তীরে ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন বাংলার শেষ স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়েছিলো। তারপর দীর্ঘ ইতিহাস পুরোটাই বাঙ্গালীর ওপর অত্যাচার আর নির্যাতনের। পৌনে দুশো বছর আমাদেরকে বৃটিশ বেনিয়াদের গোলামী করতে হয়েছে।
বৃটিশ খেদাও আন্দোলনে বাংলার সন্তানদের ভূমিকা ছিলো সবার আগে। ক্ষুদিরামকে জীবন দিতে হয়েছে ফাঁিসতে ঝুলে। জীবন উৎসর্গ করেছেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার,মাষ্টার দা সুর্যসেন । আন্দোলন করেছেন ফকির মজনু শাহ । বৃটিশদের বিরুদ্ধে ফকির বিদ্রোহ হয়েছে,সন্ন্যাসী বিদ্রোহ হয়েছে। ফরাজী আন্দোলন করেছেন হাজী শরীয়তউল্লাহ। বহু জীবনের বিনিমিয়ে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট বৃটিশরা ভারত ছাড়লেও আমরা আবার পরাধীন হয়ে গেলাম। আমাদের প্রভু হয়ে গেল এখান থেকে ১২ হাজার মাইল দূরের পশ্চিম পাকিস্তানীরা।
পাকিস্তানীদের কবল থেকে আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি স্বাধীন করতে নিজের জীবনের সর্বোচ্চ ত্যাগ করেছেন বঙ্গবন্ধু। জীবনের ১২টি বছর তিনি কারগারে কাটিয়েছেন। পাকিস্তানীরা তার ওপর তার পরিবারের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে।
আমাদের অনেকেরই জানা নেই, পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খানের সময়ে সরকার একটি আইন পাশ করেছিলো যাতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে ঢাকায় কেউ বাসা ভাড়া না দেয়। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ  হাসিনা সহ বঙ্গবন্ধুর পুত্র কন্যারা বাবার স্নেহ পায়নি। বড় হয়ে তাদেরকে বাবাকে দেখতে যেতে হতো কারাগারে। বাবাকে এক  নজর দেখে কাদঁতে কাদঁতে বাড়ি ফিরেছেন তারা। বঙ্গবন্ধু জেল থেকে বের হয়ে বাড়িতে ফিরেছেন আবার সে রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়েগেছে পুলিশ। এ ভাবে ১২টা বছর তাকে জেলে থাকতে হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে পাকিস্তানে বন্দি থাকা অবস্থায় পাকিস্তানীরা তাকে প্রহসনের বিচার করে ফাসিঁ দিতে চেয়েছিলো। বঙ্গবন্ধুর সেলের পাশে কবর খোড়া হয়েছিলো। বঙ্গবন্ধু শুধু বলেছিলেন,আমার লাশটা বাংলার মাটিতে পাঠিয়ে দিও।
বঙ্গবন্ধু তার জীবনে এত কষ্ট স্বীকার করেছেন তার নিজের জন্য নয়, তিনি চাইলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্ত তিনি স্পস্ট ভাষায় বলেছেন, আমি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীত্ব চাইনা ,আমি আমার মানুষের অধিকার চাই।’
বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলার স্বাধীনতা আরো বহু দূর ছিলো এটা নিশ্চিকভাবেই বলা যায় – তিনি স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। আজ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই বাঙ্গালীর সন্তানেরা সেনা বাহিনীর প্রধান হয়, পুলিশের আইজি হয়। প্রধান বিচারপতি হয়,তারা এমপি হয়,মন্ত্রী হয়। দুনিয়া বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা উড়ে। আজ আমাদের ক্ষমতা নিয়ে বিরোধ থাকতে পারে। নিজেদের মধ্যে মত পার্থক্য থাকতে পারে। তবে আমাদের সকলেরই উচিত বঙ্গবন্ধুকে সকলের উদ্ধে রাখা। না হলে আমরা অকৃজ্ঞ জাতি হয়ে যাবো। বঙ্গবন্ধু কেবল একজন শেখ হাসিনার বাবা নন তিনি গোটা বাঙ্গালী জাতির নেতা,আমাদের জাতির জনক,বাংলাদেশের স্রষ্টা।
—-  লূৎফুন নাহার রুমা

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top