সকল মেনু

ক্ষমতার ঢাল নিয়ে অপরাধে তারেক: হাই কোর্ট

imageshjgj-290x164হটনিউজ২৪বিডি.কম : মুদ্রা পাচার মামলায় বিএনপি নেতা তারেক রহমানের খালাসের রায় বাতিল করে হাই কোর্ট বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ‘রাজনৈতিক ঢাল’ ব্যবহার করে ‘সচেতনভাবে’ আর্থিক অপরাধে জড়িয়েছিলেন।

“তিনি তার রাজনৈতিক উচ্চ শ্রেণির অবস্থান ব্যবহার করে ‘কনসালটেশন ফির’ নামে তার সহযোগীর (গিয়াসউদ্দিন আল মামুন) মাধ্যমে ‘ডার্টি মানি’ অর্জন করেছেন।”

‘রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে’ সংঘটিত এ ধরনের দুর্নীতিকে সুশাসন, টেকসই উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য ‘হুমকি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে হাই কোর্টের রায়ে।

আদালত বলেছে, “দেশের কল্যাণ ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এখন সময় এসেছে এ ধরনের রাজনৈতিক সহানুভূতি ও পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে হওয়া দুর্নীতি রুখে দেওয়ার।”

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করে।

দুদকের আপিল মঞ্জুর করে রায়ে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমানকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে এই রায়ে।

মামলার আরেক আসামি গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের আপিল খারিজ করে তার সাত বছরের কারাদণ্ড বহাল রাখা হলেও বিচারিক আদালতের দেওয়া ৪০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড পরিবর্তন করে ২০ কোটি টাকা করা হয়েছে।
ঘুষ হিসেবে আদায়ের পর ২০ কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে ২০০৯ সালে এ মামলা দায়ের করে দুদক, জজ আদালতে যার রায় হয়েছিল ২০১৩ সালে।

বিগত বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের সময়ে ২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন পন্থায় ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা সিঙ্গাপুরের সিটি ব্যাংকে মামুনের হিসাবে পাচার করা হয়; ওই অ্যাকাউন্ট থেকে তারেক ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা খরচ করেন বলে এ মামলার অভিযোগ।

তারেক রহমানের মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ছিলেন ওই সরকারের প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় তারেক নিয়ন্ত্রিত হাওয়া ভবন সরকার পরিচালনার ‘দ্বিতীয় কেন্দ্র’ হয়ে উঠেছিল এবং তখন হাওয়া ভবনের ‘ইশারা ছাড়া’ কোনো কাজ হত না বলে আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ।

রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, “দুঃখের সাথে লক্ষ্য করা গেছে, তারেক রহমান এমন রাজনৈতিক শ্রেণির ব্যক্তি যার দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখার কথা, তিনি সচেতনভাবে ফাইনানশিয়াল ক্রাইমে জড়িয়ে পড়েছেন।”
আদালত মনে করছে, তারেকের মত ‘রাজনৈতিক ঢাল’ ব্যবহার করে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের প্রবণতা দেশে বাড়ছে।

“আমরাও দেখছি যে দুর্নীতি চর্চা ও রাজনৈতিক প্রভাব অবধারিতভাবে ব্যক্তি বা গুচ্ছকে মানি লন্ডারিংয়ের মত অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িয়ে পড়ার মত ক্ষেত্র তৈরি করে দিচ্ছে, যা পুরো সমাজের ওপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর ‘অবৈধ অর্থ অর্জনের অনৈতিক আনুকূল্য নেওয়ার প্রবণতা’ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।

“রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে বড় ধরনের সুসংগঠিত অর্থনৈতিক অপরাধ যেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে না পারে সেজন্য সমাজকে সচেতন হতে হবে, নিন্দা করতে হবে।”

দুদকের আইনজীবী বলেন, “এ রায়ে প্রমাণিত হল, এ দেশে কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়- সে যেই হোক। আইন যদি কেউ অমান্য করে তার বিরুদ্ধে আইন অনুসারে বিচার হবে।”

এ মামলার পুরো বিচার প্রক্রিয়ায় পলাতক তারেক রহমান ২০০৮ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টাসহ দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ ও মানহানীর অভিযোগে কয়েক ডজন মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top