সকল মেনু

মরমি কবি পাগলা কানাইয়ের ১২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

indexএস,আই মল্লিক, ঝিনাইদহ: “ জিন্দা দেহে মুরদা বসন, থাকতে কেন পরোনা, মন তুমি মরার ভাব জানো না ,কী মজার ঘর বেঁধেছে, হায়রে ঘর বাইন্ধাছে, দুই খুঁটির উপর। জিন্দা দেহে মুরদা বসন, থাকতে কেনো পরনা। মন তুমি মরার ভাব জান না, মরার আগে না মরিলে পরে কিছুই হবে না।” এরকম অসংখ্য দেহতত্ত্ব, জারি, বাউল, মারফতি, ধূয়া, মুর্শিদী গানের শ্রষ্ঠা মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ১২৭ তম মৃত্যু বার্ষিকী মঙ্গলবার পালিত হয়েছে।
ইতিহাস থেকে জানা গেছে, লোক-সাধনা ও মরমি সঙ্গীতের এ কবি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে বাংলা ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন জন্মগ্রহণ করেন এবং বাংলা ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় তিনি ইন্তেকাল করেন।
ছোটবেলা থেকেই তিনি দূরন্ত ও আধ্যাত্মিক স্বভাবের ছিলেন। বাল্যকালে পিতৃহারা পাগলা কানাই এর ঘরে মন না টেকায় ও অর্থের অভাবে পড়ালেখা হয়নি। তিনি অন্যের বাড়িতে রাখালের কাজ করেছেন।
গরু চরাতে গিয়ে ধুয়ো জারি গান গাইতেন। নিরক্ষর হলেও তার স্মৃতি, মেধা ছিল প্রখর। তিনি উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গান রচনা করে নিজ কণ্ঠে পরিবেশন করতেন। তার সঙ্গীতে তিনি যেমন ইসলাম ধর্মের তত্ত্বকে প্রচার করেছেন তেমনি হিন্দু-পুরাণ রামায়ণ ও মহাভারত থেকেও নানা উপমার প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। এ কারণেই তার গান সর্বজনীনতা লাভ করে। তার মধ্যে বাউল ও কবিয়াল এ দুয়ের যথার্থ মিলন ঘটেছে। পাগলা কানাই এর গান গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
এ পর্যন্ত পাগলা কানাই রচিত গানের মধ্য মাত্র তিনশ সংগৃহীত হয়েছে। মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন, ড. মাজহারুল ইসলাম, আবু তালিব, আমিন উদ্দিন শাহ, দুর্গাদাস লাহিড়ী, উগ্রন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যসহ মনীষীগণ পাগলা কানাইয়ের গানের সংগ্রহ ও গবেষণা করেছেন।
মঙ্গলবার কবির  মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জন্মভিটা ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সকালে সমাধিস্থলে পুষ্পমাল্য অর্পন  করেন জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার ও  পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেনসহ অতিথিগন। এরপর পাগলা কানাই অডিটরিয়ামে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। দুপুরে দুস্থ ও গরীবদের মাঝে খাবার বিতরন করা হয়। বিকালে কবির রচিত গান পরিবেশন করা হয়।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু ইউসুফ মো. রেজাউর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকেন জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন, জেলা পরিষদ প্রশাসক আব্দুল ওয়াহেদ জোয়ার্দ্দার, জেলা পরিষদ সচিব মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুর রশিদ ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top