সকল মেনু

শ্রমিকদের দাবি ঈদের আগে বেতন বোনাস : মালিকরা চান প্রণোদনার অর্থ

garment-w-290x151হটনিউজ২৪বিডি.কম : ঈদকে সামনে রেখে বেতন-বোনাসের দাবিতে বরাবরই উত্তপ্ত হয় দেশের পোশাক শিল্প খাতে। সময় মতো বেতন আর বোনাস না পেয়ে ঈদের আগে মাঠে নামেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। তাই ঈদে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে মালিকদের উপর পড়ে বড় ধরনের চাপ। আর এ বাড়তি চাপ মোকাবেলায় সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণসহ রফতানি মূল্যের বিপরীতে সরকারের দেয়া প্রণোদনার অর্থ দ্রুত ছাড় চান পোশাক মালিকরা।

পোশাক শিল্প মালিকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, বেশির ভাগ পোশাক কারখানায় কর্মীদের ঈদের আগে বেতন বোনাস দেয়া হবে। তবে অনেক কারখানা আছে যাদের পক্ষে বেতন ভাতা দেয়া একটু কষ্টকর হয়ে যাবে। তাই তারা ব্যাংক ঋণসহ অন্যান্যভাবে ঋণ নিয়ে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের চেষ্টা করছে।

তারা আরো বলেন, পোশাক শিল্পে নতুন মার্কেট ধরার জন্য এবং লোকাল মার্কেটের জন্য সরকার প্রণোদনা দেয়। সরকারের নগদ সহায়তা (ক্যাশ ইনসেনটিভ) বাবদ তৈরি পোশাক খাতে এখন প্রায় ৫০০ কোটি টাকা পাওনা আছে। প্রণোদনার এ অর্থ ঈদের আগে দেয় সরকার। যদি এই অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে (অর্থাৎ ২০ রমজানের মধ্যে) ছাড় দেয় তাহলে পোশাক কারখানায় কর্মরতদের বেতন বোনাস সময়মতো পরিশোধে সহায়ক হবে। তাই নগদ সহায়তার এই অর্থ দ্রুত ছাড়ের পাশাপাশি সহজ শর্তে ব্যাংক ঋণের দাবি জানান পোশাক শিল্প মালিকরা।

এ সম্পর্কে বিজিএমইএ সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বেশির ভাগ কারখানাই ঈদের আগে বেতন ভাতা দিয়ে দেবে। তবে যাদের সমস্যা আছে তাদেরকে যদি নতুন বাজার সৃষ্টির জন্য সরকার যে নগদ সহায়তা দেয় তা আগেই দিয়ে দেয় তাহলে বেতন ভাতা দেয়ার সমস্যা সমাধান হবে।

অর্থ ছাড়ের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক শুভংকর সাহা বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেটে রফতানি মূল্যের বিপরীতে সরকারের নগদ সহায়তার (ক্যাশ ইনসেনটিভ) সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। যা চার কিস্তির মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিশোধ করা হয়েছে। তবে সরকারের কাছে রফতানিকারকদের এ অর্থের বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়ে আরো কিছু দাবি রয়েছে। সরকার তা মেনে আমাদের যখন নির্দেশ দেবে তখনই আমরা দ্রুত সেই অর্থ ছাড় দেবো।
এদিকে প্রতি বছরই ঈদের আগে বেতন-বোনাস নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে ঈদের আগে বেতন-বোনাস পরিশোধে মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শ্রমিক সংগঠনগুলো অভিযোগ করছে, প্রতি বছরই কিছু কিছু চিহ্নিত পোশাক কারখানার মালিক বেতন ভাতা পরিশোধ না করে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। শ্রমিকদের ঘামে ঝরা মজুরি ও বেতন বোনাস পরিশোধ না করে তারা কারখানায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। ফলে ঈদের পূর্বে শ্রমিকরা অমানবিক ও অনিশ্চিত পরিস্থিতির শিকার হন। যা কোনো অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এবারের ঈদে যাতে এমন কোনো পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য সরকার, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও সংশ্লিষ্ট মালিকদের সতর্ক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন নেতা নাজমা আক্তার বলেন, আমরা মঙ্গলবার (২১ জুন) সমাবেশ ও মানববন্ধন করে ২০ রোজার মধ্যে বেতন ভাতা দেয়ার দাবি জানিয়েছি। যদি একজন কর্মীকেও ঈদের তিন চার দিন আগে বেতন দেয়া হয় তাহলে তা কোনো কাজে লাগানো যায় না। তাই একটু সময় নিয়ে বেতন ভাতা দিলে তা সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়। যদি ২০ রমজানের মধ্যে বেতন ভাতা দেয়া না হয় তাহলে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top