নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা ও বাগেরহাট প্রতিনিধি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আমরা সুন্দরবনকে নিরাপদ হিসাবে দেখতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক সুন্দরবনকে একটি পর্যটন জোন হিসাবে গড়ে তুলতে নানা পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’
মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে বাগেরহাটে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ইঞ্জিনিয়ারিং জেটিতে সুন্দরবনের বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্যের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বনদস্যুরা সমাজের ক্ষতিকর মানুষ হিসাবে রূপ নিয়েছে। এই উপলব্ধি থেকে তারা আজ আত্মসমর্পণ করেছে। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে যে কাজ শুরু করেছে, সে কাজের জন্য আমরা তাদের সব ধরনের আইনি সহায়তা দিয়ে যাবো।
তিনি আরো বলেন, সুন্দরবনে জেলে, বাওয়ালী, মৎস্যজীবী, বনজীবীরা যাতে সুন্দরভাবে কাজকর্ম পরিচালনা করতে পারে তার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এই সুন্দরবনটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য আকষর্ণীয়। এজন্য কোষ্টগার্ড র্যাব, নৌ-পুলিশ, তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নানা ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কোষ্টগার্ড সাগর ও উপকূলীয় এলাকায় যাতে নির্বিগ্নে টহল দিতে পারে এজন্য বিদেশ থেকে ৪টি জাহাজ আনা হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, যারা আত্মসমর্পণ করেনি- তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চাইলে- আমরা সব ধরনের সহায়তা করবো। এজন্য গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে বাগেরহাটে মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের ইঞ্জিনিয়ারিং জেটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে মাষ্টার বাহিনীর প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাষ্টারসহ ১০ সদস্যের দস্যুদল ৫২টি দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৫ হাজার রাউন্ডের বেশি গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন।
র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফরিদুল আলম বলেন, আত্মসমর্পণের মধ্যদিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পথ সুগম হলো সুন্দরবনের ত্রাস এ মাস্টার বাহিনীর।
ফরিদুল আলম আরো বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে হেলিকপ্টারযোগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল মংলায় এসে পৌঁছান। বিকেল ৩টার দিকে মাস্টার বাহিনীর ১০ সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল আনোয়ার হোসেন, খুলনা রেঞ্জের পুলিশের উপ মহাপরিদর্শক মো. মনিরুজ্জামান , র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফরিদুল আলম, র্যাব-৬ এর অধিনায়ক মো. রফিকুল ইসলাম, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্যা প্রমুখ।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন- বনদস্যু মাষ্টার বাহিনীর প্রধান মো. মোস্তফা শেখ ওরফে কাদের মাষ্টার, সেকেন্ড-ইন-কমান্ড সোহাগ আকন, মো. সোলায়মান শেখ, ফজলু শেখ, মো. সুলতান খাঁ, শাহীন শেখ, সুমন সরদার, আরিফ সরদার. মো. হারুন ও আসাদুল ইসলাম ওরফে কোকিল।
তাদের জমাকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ১৮টি একনলা বন্দুক, ৮ টি দোনলা বন্দুক, ৬টি পয়েন্ট টুটু বোর, ১টি থ্রিনাট থ্রি, ৩টি ওয়ান শুটারগান, ৫টি রাইফেল, ২টি সিঙ্গেল রাইফেল, ৫টি সর্টগান, ২টি এয়ার গান, ২ টি সাটারগান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।