সকল মেনু

জি-৭ আউটরিচেও বিশ্ব নেতৃত্বের অবস্থানে শেখ হাসিনা

50আন্তর্জাতিক ডেস্ক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৮ মে : জি-৭ আউটরিচে বাংলাদেশের গুরুত্ব বিশ্ব নেতৃত্বের কাছে দৃঢ়তর হয়েছে। বিশ্ব নেতারা আরও সুর্নিদিষ্ট করে জানতে পেরেছেন বাংলাদেশের অগ্রগতি কোন পথে। এই সম্মেলনে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নেতৃত্বের অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই উন্নয়নে তার নিজস্ব কৌশল ও ভবিষ্যৎ উন্নয়ন ভাবনাগুলো তুলে ধরেছেন।

জাপানের কাশিকো দ্বীপের ইসে-শিমায় অনুষ্ঠিত জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আউটরিচ প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে অবদান রেখেছেন, তা এভাবেই তুলে ধরলেন তার মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ ও পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক।

শুক্রবার দুই দিনব্যাপী মূল শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়। আর এই দিন আউটরিচ প্রোগ্রামের দু’টি অধিবেশনে সক্রিয় অংশ নিয়ে বিশ্ব শীর্ষ নেতৃত্ব, আউটরিচ দেশগুলোর নেতৃত্ব এবং জাতিসংঘসহ বিশ্বের প্রধান প্রধান আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কর্তাব্যক্তিদের কাছে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের গল্প শোনান প্রধানমন্ত্রী।

পরে ইসে-শিমা থেকে নাগোয়ায় ফিরে হোটেল হিলটনে সাংবাদিকদের কাছে ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ও পররাষ্ট্রসচিব। ব্রিফিং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ইহসানুল করিম। এতে আরও কথা বলেন টোকিওতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

তারা সকলেই জানান, একজন বিশ্ব নেতার অবস্থান থেকেই এই কর্মসূচিতে তার চিন্তা-দর্শন ও কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সম্মেলনে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব প্রধানমন্ত্রী আরও একধাপ এগিয়ে গেছেন বলেই তাদের দৃঢ় বিশ্বাস।

ব্রিফিংয়ের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ জানান, এই আউটরিচ প্রোগ্রামে জি-৭ শীর্ষ নেতাদের বাইরে যেসব দেশের নেতারা যোগ দিয়েছেন, তারা সকলেই কোনো না কোনো আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক জোটের প্রতিনিধি হয়ে এসেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সম্মলনে ডাক পেয়েছেন তার নিজের অর্জনগুলোকেই তুলে ধরার জন্য। তাকে রোল মডেল হিসেবে সামনে এনে শীর্ষ দেশগুলোর নেতারা চেয়েছেন, এখান থেকেই শিক্ষা নেবে আরও অনেক অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ।

প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে উন্নত অবকাঠামো বিনির্মাণ, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ে তার বৈশ্বিক ভাবনা তুলে ধরেন। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে যুগান্তকারী উন্নয়ন ঘটিয়েছে তা সকলেরই জানা, এখন অন্যদেশগুলোকে শিক্ষা নিয়ে তাদেরও একইভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে, এটাই ছিলো এই কর্মসূচিতে শেখ হাসিনার অংশগ্রহণের মূল লক্ষ্য- বলেন আবুল কালাম আজাদ।

এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরতে গিয়ে পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হক জানান, কানেকটিভিটিকে সামনে রেখেই অবকাঠামোগত উন্নয়নের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। আর পরিবেশ ইস্যুতে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে এগিয়ে যাওয়ার কৌশলের কথা জানান, স্বাস্থ্য খাতে সবার জন্য সুস্বাস্থ্য অর্জনে বাংলাদেশ এমডিজিতে যেমন নেতৃত্ব দিয়েছে, এসডিজিতেও তেমনি নেতৃত্ব দেবে এই দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে গোটা বিশ্বকে স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়নে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবার কৌশলে জোর দেওয়ার আহ্বান জানান।

নারীর ক্ষমতায়নে তার কৌশলের সুনির্দিষ্ট দর্শন বিশ্ব নেতৃত্বর কাছে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী- বলেন শহীদুল হক।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিশ্চিত করার কথা বলেছেন। এক. নারীকে নীতিপ্রণয়ন ও রাজনীতিতে বেশি বেশি সম্পৃক্ত করা, দুই. নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করা; আর তিন. সমাজে নারীর অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। বিশ্বব্যাপী এই মডেল অনুসরণ করা হলে নারীরা সারা বিশ্বে কোথাও পিছিয়ে থাকবে না, বিশ্ব নেতাদের প্রতি এই আহ্বানই জানান প্রধানমন্ত্রী।

এই আউটরিচ প্রোগ্রামেও শীর্ষ বিশ্ব নেতাদের পাশাপাশি অন্য দেশসমূহের নেতাদের কাছেও প্রধান আকর্ষণ হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্ডসহ সকলকেই মূল আলোচনার পাশাপাশি করিডোরে-গার্ডেনে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায়।

করিডোরেই আসল আলাপ, বলেন শহীদুল হক।

এসময় জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জানান, এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে জাপানের সংবাদমাধ্যমে। এখানকার লিডিং সংবাদপত্র এরই মধ্যে শেখ হাসিনার নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। সম্মেলন উপলক্ষে প্রকাশিত শ্যুভেনিরে বিশ্ব নেতাদের লেখার পাশাপাশি স্থান পেয়েছে শেখ হাসিনার বিশেষ নিবন্ধ। এছাড়া, জাপানের শীর্ষ টেলিভিশন চ্যানেল এনএইচকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সাক্ষাৎকার নিতে যাচ্ছে।

এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী রোববার  তার জাপান সফরের শেষ দিনে দেশটির শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও জানান রাবাব ফাতিমা।

বিশ্ব নেতৃত্বে শেখ হাসিনা ক্রমেই যে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাতে এই জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আউটরিচ মিটিংয়ে অংশগ্রহণ নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে ব্রিফিংয়ে মত দেন সবাই।

হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top