সকল মেনু

আগামীকাল ৫ম পর্বের ইউপি নির্বাচন : সব প্রস্তুতি সম্পন্ন

up-vote_12306 (1)হটনিউজ২৪বিডি.কম : সারাদেশে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে পঞ্চম পর্বে আগমীকাল শনিবার ৭২০টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই নির্বাচন কামিশন থেকে সম্পন্ন হয়েছে ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি। নির্বাচনী কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় সামগ্রী। কেন্দ্রগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার সদস্য। আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে জানা যায়, আজ শুক্রবার ছুটির দিন নির্বাচনী প্রচারণায় যুক্ত হয়েছিল নতুন মাত্রা। এদিকে আজ সকাল থেকেই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ব্যালট বক্স ও অন্যান্য সরঞ্জাম পাঠানো হয় বিভিন্ন কেন্দ্রে। সহিংসতা মোকাবিলায় শনিবার র‌্যাব-পুলিশের পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে বিজিবি।

এদিকে দেশে ইউনিয়ন পরিষদের ৪ পর্বের নির্বাচন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ধাপে সহিংসতা ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ঘটনায় উদ্বিগ্ন নির্বাচন কমিশন। এ সমস্ত নির্বাচনে ভোটের আগের দিন রাতে ব্যালটে সিল মারা কেন্দ্র দখল, ভাংচুর, অগ্নি সংযোগসহ নির্বাচনের আগে ও পরের ঘটনা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

আগামীকাল ২৮ মে ও ৪ জুন পরবর্তীতে ২ পর্বের নির্বাচনে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে এবং যে কোনভাবেই নির্বাচনে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে নিয়ন্ত্রনে থাকে সে লক্ষেই গত ৯ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ওই চিঠিতে সন্ত্রাসী ও অস্ত্রবাজদের গ্রেফতার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, যে কোনো সহিংসতা কঠোর হস্তে দমন, সহিংসতাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার, নির্বাচন এলাকায় পুলিশি টহল ও দৃশ্যমান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী- ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র গ্রহণ ও দাখিলে বাধা প্রদান, ভয়-ভীতি প্রদর্শন ও চাপ প্রয়োগ করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করারও অভিযোগ উঠেছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ মাঠপর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব ও নিস্ক্রিয়তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ও অস্ত্রধারীদের গ্রেফতারে জোরালো পদক্ষেপ না নেয়া এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় দিন দিন সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে বলেও বিভিন্ন পর্যায় থেকে অভিযোগ উত্থাপন করা হচ্ছে।

জানা যায়, এর আগের ৪ ধাপে ২ হাজার ৬০০’র বেশি ইউনিয়নের নির্বাচনে ৭০টির বেশি প্রাণহানি ঘটেছে। আহত হয়েছে ৫ হাজারেরও বেশি। প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা অনেকটা গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যেখানেই ক্ষমতাসীন দলের বিদ্রোহীপ্রার্থী, সেখানেই সহিংসতা, প্রাণহানি ও ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ প্রার্থীর যোগসাজশে ভোটের আগের রাতেই ব্যালট পেপারে সিল মারার ন্যক্কারজনক ঘটনাও ঘটেছে।

পুলিশের নিস্ক্রিয়তায় প্রকাশ্যে ব্যালট পেপারে সিল মেরে কেন্দ্র দখল, ব্যালট ছিনতাই, প্রতিপক্ষের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগ, গুলির ঘটনা ঘটেছে। এ সব ক্ষেত্রে ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী পুলিশ প্রশাসন দায়িত্ব পালনে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলেই এসব ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে বেসরকারি সংস্থা সুজনের তথ্যানুযায়ী, ২০১১ সালের ইউপি নির্বাচনে সব মিলিয়ে ২০ থেকে ৩০ জন নিহত হয়েছিল। তখন আহত হয়েছিল ২ হাজারের বেশি। কিন্তু এবার অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। নির্বাচনের আগে ও পরে যে হারে প্রতিপক্ষের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে, তা ছিল নজিরবিহীন। এসব হামলার ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা ছিল রহস্যজনক। নামকাওয়াস্তে অথবা লোক দেখানোর জন্য হলেও ইসি দু’চারজন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার ও বদলি করলেও পরিস্থিতির তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। আগামি দুই পর্বের নির্বাচনে আরও বেশি সহিংসতার আশঙ্কা করে সুজনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব পুরোটাই ইসির ব্যর্থতা। এ ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব ইসিকেই বহন করতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top