হটনিউজটোয়েন্টিফোরবিডি.কম,ঢাকা: র্যাবের গুলিতে পা হারানো ঝালকাঠির রাজাপুরের কলেজছাত্র মো. লিমন হোসেনের বিরুদ্ধে র্যাবের দায়ের করা অস্ত্র ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার মামলা দু’টিই প্রত্যাহার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার লিমন নিজেই হটনিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান তাকে এটি নিশ্চিত করেন বলেও জানান তিনি।
সূত্রে জানা গেছে, ড. মিজানুর রহমানের প্রস্তাবের ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলা দু’টি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে লিমনের মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরও।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য দেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, লিমনের বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তার বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে তা ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী প্রত্যাহার করা হবে।
লিমনের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করা হলো, কিন্তু যাদের দ্বারা পা হারালেন লিমন, তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী প্রেক্ষাপট বিবেচনার কথা বলেন সাংবাদিকদের।
তিনি বলেন, কোনো কিছু করার প্রয়োজন মনে করি না। একটি কথা মনে রাখতে হবে, যে অবস্থায় লিমন ৠাবের কাছে আটক হয়েছে, র্যাবের কাছে তার প্রতিরোধের বিষয়ে সেই প্রেক্ষাপটে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।
আর কোনো কথা না বলে মন্ত্রী তার অফিস কক্ষে ঢোকেন।
এর আগে লিমনের বিরুদ্ধে ব্যাবের করা মামলা দু’টি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে র্যাবের দায়ের করা সরকারি কাজে বাধা দানসহ দু’টি মামলা চলছে। এসব মামলায় পুলিশ লিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে আদালতে।
এর মধ্যে একটি মামলা ঝালকাঠি জেলা চিফ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এবং একটি মামলা ট্রাইব্যুনালে চলছে।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া গ্রামে র্যাবের গুলিতে আহত হন লিমন। এর ফলে ওই বছর তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
এ বিষয়ে লিমনের অভিযোগ, বাড়ির পাশে মাঠ থেকে গরু আনতে গেলে ৠাব সদস্যরা তার পায়ে গুলি করেন। চিকিৎসার ভার বহন করা পরিবারের পক্ষে অসম্ভব হওয়ায় গ্রামবাসী চাঁদা তুলে চিকিৎসা করান। একপর্যায়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে লিমনকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এখানে চিকিৎসকেরা লিমনের জীবন বাঁচাতে বাম পা ঊরুর নিচ থেকে কেটে ফেলেন।
এ ঘটনার পর বরিশালে র্যাব-৮-এর তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমান বাদী হয়ে রাজাপুর থানায় লিমনসহ আটজনের নামে দু’টি মামলা করেন। এর মধ্যে একটি অস্ত্র আইনে, অপরটি সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে।
অন্যদিকে র্যাবের ছয় সদস্যের বিরুদ্ধে লিমনের মায়ের করা মামলা নেয়নি পুলিশ। পরবর্তী সময়ে আদালতের নির্দেশে পুলিশ মামলাটি নেয়। কিন্তু পরে মামলাটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে শেষ করে দেয় পুলিশ। এ চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করলে তাও খারিজ করে দেন ঝালকাঠির ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। অবশ্য ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে হেনোয়ারা বেগম জজ আদালতে রিভিশন দায়ের করেছেন, যা এখনো চলছে।
র্যবের দায়ের করা মামলা দুটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও মঙ্গলাবার লিমন তার মামলা প্রত্যাহার না করার কথা বলে পঙ্গুত্বের জন্য দায়িদের বিচার দাবি করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।