আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া রিজার্ভের ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনে পাচারে সন্দেহভা জন সাহায্যকারী রিজাল ব্যাংকের প্রাক্তন ব্যবস্থাপক মাইয়া সান্তোস দেগুইতো রাজসাক্ষী হতে পারেন। রিজার্ভের অর্থ উদ্ধারে চলমান তদন্তে সহায়তা করতে চান তিনি। দেগুইতোর আইনজীবী ফার্দিনান্দ তোপাসিও এ তথ্য জানিয়েছেন।
ফার্দিনান্দ তোপাসিও শুক্রবার ব্লুমবার্গ পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ফিলিপাইনের সাক্ষীসুরক্ষা আইনের অধীন ‘সঠিক সময়ে’ সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাইতে পারেন দেগুইতো। সিনেটের গত শুনানিতে আমার মক্কেলের (দেগুইতো) অবস্থানের বিষয়ে আমরা অবহিত করেছি। তিনি এই ষড়যন্ত্রের হোতা নন। আমরা চাই, সরকার এ বিষয়ে শেষ পর্যন্ত জানুক।
ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার চুরি করা হ্যাকারদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। চুরি হওয়া অর্থের ৮১ মিলিয়ন ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের মাধ্যমে জুয়ার বোর্ডে চলে যায়। বাকি অর্থ শ্রীলঙ্কার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় পাঠানোর সময় সন্দেহ হওয়ায় তা আটকে দেয় রিজাল ব্যাংক।
রিজার্ভ চুরির তদন্তের কেন্দ্রে আছেন দেগুইতো। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুরোধ সত্ত্বেও গত ৫ ও ৯ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক থেকে অর্থ উত্তোলনের অনুমতি দেন তিনি। এ জন্য তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা হতে পারে। গত ১৭ মার্চ ফিলিপাইনের সিনেটের শুনানিতে দেগুইতো পাচারকৃত অর্থ সম্পর্কে খোলামেলা কথা বলেন এবং নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। বর্তমানে ফিলিপাইনের বিচার বিভাগ বিষয়টি তদন্ত করছে। দেগুইতোর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে তাদের হাতে।
ফিলিপাইনে সাক্ষীদের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং সুবিধা যে কাউকে রাজসাক্ষী হতে উৎসাহিত করে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত কেউ যদি আদালতে সাক্ষ্য দিতে রাজি হন, তাকে আর আইনি ঝামেলায় পড়তে হয় না। দেগুইতোর আইনজীবী তোপাসিও বলেছেন, ‘রাজসাক্ষী হলে ফিলিপাইন সরকার দেগুইতোকে অভিযোগ থেকে মুক্তি দেবে।’
৫ এপ্রিলের শুনানিতে দেগুইতো দাবি করেন, ‘আন্তর্জাতিক ব্যাংকিংয়ের বাঘা বাঘা খেলোয়াড়দের দাবার ঘুঁটি’ তিনি। অন্যদের মাধ্যমে তিনি ব্যবহৃত হয়েছেন- মূলত এমনটিই দাবি করেন দেগুইতো।
ক্যাসিনো জাঙ্কেট অপারেটর কিম অংয়ের বয়ানের সঙ্গে দেগুইতোর বক্তব্য মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। কিম অং দাবি করেন, ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে চান, এমন দুজন চীনা মক্কেলকে তিনি দেগুইতোর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। যে অ্যাকাউন্টে পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরির অর্থ জমা করা হয়। কিম অং নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
কিম অং এ পর্যন্ত ৫.৪৬ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দিয়েছেন। এ অর্থ তিনি দুই চীনা মক্কেলের কাছ থেকে ‘ধার শোধ’ হিসেবে পেয়েছিলেন। কয়েক মাসের মধ্যে আরো প্রায় আড়াই কোটি ডলার (৪৫০ মিলিয়ন পেসো) ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।