নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, চাঁদপুর: দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম এমপি অন্য জেলার চেয়ে চাঁদপুর জেলা সবদিক থেকে ভালো বলে উল্লেখ করে বলেছেন, মাদক নিয়ে সবাই চিন্তিত, মাদক নিয়ন্ত্রণে শুধু প্রশাসনের উপর নির্ভর করলেই হবে না, তা নিয়ন্ত্রণে সকলকে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। মাদকসেবীদের চেয়ে মাদক বিক্রেতা ও তার সাথে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নিতে হবে। মনে রাখতে হবে মাদক ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি। আর যারা তা বিক্রি করে তার সংখ্যা কম। এই কম সংখ্যক বিক্রেতাকে চিহ্নিত করতে পারলে আমরা মাদক নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবো। তিনি মা ইলিশ রক্ষায় জাটকা নিধন বন্ধে জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জাটকা রক্ষায় ষাটনল থেকে চরভৈরবী পর্যন্ত রাতের বেলায় সকলকে পাহারা দিতে হবে। প্রয়োজনে আমিও পাশে থাকবো। দেখব জাল নিয়ে কারা নদীতে নামে। এ ব্যাপারে সকলকেই দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি যানজট নিরসনে অবৈধ যানবাহন চলাচলের ব্যাপারেও কঠোর গুরুত্ব আরোপ করেন।
মন্ত্রী গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চাঁদপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বক্তব্য রাখতে যেয়ে এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডলের সভাপতিত্বে সভার শুরুতে বিগত সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আমির আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ মঞ্জুরুল করিম।
সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন আহামেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আশরাফুজ্জামান, সিভিল সার্জন ডাঃ রথীন্দ্র নাথ মজুমদার, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ড. এএসএম দেলওয়ার হোসেন, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি বিএম হান্নান, সাধারণ সম্পাদক সোহেল রুশদী, ছেঙ্গারচর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম জর্জ প্রমুখ।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি পৌর মেয়র নাছির উদ্দিন আহামেদ জনদুর্ভোগ বন্ধে জনস্বার্থে আর যেন কোন সিএনজির লাইসেন্স প্রদান করা না হয় তার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জেলা শহরকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষায় এ সকল যানবাহন চলাচলে কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করতে হবে। সময় অসময় রাস্তাঘাটে যাতে দানব ট্রাক্টর চলাচল না করতে পারে তার জন্য প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। যদি তা না হয় তাহলে যত কোটি টাকা দিয়েই রাস্তা তৈরি হোক না কেন, তা টেকসই হবে না। সরকারিভাবে নদী হতে বালু উত্তোলন হয় কিনা তা জানতে চেয়ে তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ অঞ্চল হতে কোনো ব্যবসায়ী এ অঞ্চলে বালু নিয়ে আসলে এ অঞ্চলের বালু উত্তোলনকারী ব্যবসায়ীদের হাতে হামলার শিকার হন। নদী হতে যারা বালু উত্তোলন করেন তারা বৈধ না অবৈধ তা জানতে হবে।
তিনি আসন্ন ইউপি নির্বাচন সম্পর্কে বলেন, যেহেতু এবারই প্রথমবারের মত জাতীয় মার্কা নিয়ে ইউপি নির্বাচন হচ্ছে, সেহেতু কিছু লোক চেষ্টা করবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে। তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যাতে কেউ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে সে দিকে প্রশাসনকে লক্ষ্য রাখারও অনুরোধ জানান। সভায় বক্তারা পালের বাজার সংলগ্ন রেলওয়ের জমি লীজ না নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মার্কেট নির্মাণ, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুর্বল কার্যক্রম, বিদ্যুৎ বিভাগের অভিযোগ কেন্দ্রের দায়সারা দায়িত্ব পালন, মাত্রাতিরিক্ত অবৈধ সিএনজি, অটোরিক্সা চলাচল বন্ধ সহ তা নিয়ন্ত্রণ করা, শহরে যানজট নিরসনে সময় অসময় তেলের ট্যাংকার প্রবেশ না করা, ছেঙ্গারচর ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ডাক্তারের স্বল্পতা সহ বিভিন্ন সমস্যাবলী উপস্থাপন করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।