১১ নভেম্বর ২০১৫, নিরাপদ নিউজ : আগামীকাল ১২ নভেম্বর যশোরের উপশহর মাঠ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় শুরু হচ্ছে ৩দিন ব্যাপী বিশেষ ইজতেমা। ইজতেমা সফল করার জন্য এখন চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। ইজতেমাকে ঘিরে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নেয়া হয়েছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আয়োজকরা আশা করছেন এ জমায়েতে লক্ষাধিক মুসুল্লি অংশগ্রহণ করবেন।
ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য প্রফেসর জাকির আহম্মেদ জানিয়েছেন, বাংলাদেশে প্রতি জানুয়ারি মাসে ঢাকার টঙ্গীর তুরাগ পাড়ে তাবলীগ জামাতের সবচেয়ে বড় সমাবেশ বিশ^ ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম ঘটে এ ইজতেমায়। কিন্তু কয়েক বছর ধরে লোকসমাগম এত বেড়ে গেছে যে তুরাগ পাড়ে স্থান সংকুলন হচ্ছে না। যে কারণে গত দু’বছর দু’ দফায় ইজতেমার জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এরপরও লোকসমাগম বেড়ে যাওয়ায় ২০১৬ সালের ইজতেমায় মাত্র ৩২ জেলাকে তুরাগের পাড়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। বাকী জেলার লোকজন নিজ নিজ এলাকায় বিশেষ ইজতেমার আয়োজন করছে। তারই ধারাবাহিকতায় যশোরে আগামীকাল শুরু হবে এ বিশেষ ইজতেমা। ১৪ নভেম্বর আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে ইজতেমা।
ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির অপর সদস্য মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, ইজতেমা সফল করতে চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। ইতিমধ্যে উপশহর মাঠ, বাদশা ফয়াসল স্কুল মাঠ, উপশহর ঈদগাহ মাঠের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া মুসুল্লিদের সমাগম বৃদ্ধির বিষয়টি মাথায় রেখে বিরামপুর স্কুল মাঠ, সারথী টেক্সটাইল মাঠ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, অতিথিদের জন্য বানানো হয়েছে অস্থায়ী বাসস্থান। এছাড়া ইজতেমা মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিশুদ্ধ পানির ট্যাংক ও ওজুর স্থান করা হয়েছে। নির্মাণ করা হয়েছে ৫শ’র অধিক অস্থায়ী টয়লেট। এছাড়া মুসুল্লিদের গোসলের জন্য উপশহর পার্কের লেকের চতুর্দিকে বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ঘাট।
যেখানে একসাথে হাজার হাজার মুসুল্লি গোসল করতে পারবেন। মুসুল্লিরা পুকুরে পড়ে যাতে দুর্ঘটনার শিকার না হন সে জন্য লাইফ বোটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া ইজতেমার মাঠের চারপাশে খোলা জায়গা রাখা হয়েছে, যেখানে ইজতেমায় আগত মুসুল্লিরা রান্না করতে পারবেন।
মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান আরো বলেন, এছাড়া এক হাজার স্বেচ্ছাসেবীর একটি দল গঠন করা হয়েছে। যারা পুরো ইজতেমা মাঠে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে থেকে কাজ করবে।
এছাড়া বিপদ ও সমস্যাগ্রস্ত মুসুল্লিদের সার্বিক সহযোগিতা করবেন। এ সব স্বেচ্ছাসেবীর মধ্যে এলাকার তরুণ, যুবকসহ বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা রয়েছে। পাশাপাশি আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে প্রশাসনের সহায়তা কামনা করা হয়েছে।
যশোর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী পুলিশ সুপার মীর শাফিন মাহমুদ বলেন, ইজতেমা নিরাপত্তা বিধানের জন্য পুলিশ সুপারসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময় ইজতেমা মাঠ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। নিরাপত্তার জন্য ২০টি পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব পয়েন্টে ২শ’ ফোর্স নির্ধারণ করা হবে।
এর পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ, থানার মোবাইল টিম থাকবে। এছাড়া আয়োজক কমিটি ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দেবে। তারাও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করবে। এছাড়া ইজতেমা এলাকা সিকিউরিটি সার্ভিলেন্স ক্যামেরার (সিসি টিভি) আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষে এটা করা সম্ভব নয় বলে অন্যদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
এদিকে, মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে ব্যবসায়ীদের নিয়ে প্রশাসনের এক বৈঠকে ইজতেমায় সিকিউরিটি সার্ভিলেন্স ক্যামেরা (সিসি টিভি) বসানোর বিষয়ে আলোচনা হয়।
ওই সভায় প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, কুইন্স হসপিটাল লিমিটেডের এমডি হুমায়ুন কবীর কবু ও সিটি ক্যাবল লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাজী বর্ণকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। ইজতেমা মাঠ ও এর আশপাশের এলাকায় ৯০টি ক্যামেরা লাগানোর চিন্তা করা হচ্ছে। যশোরে যেসব ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানে ক্যামেরা আছে তাদের কাছ থেকে নিয়ে এ প্রয়োজন মেটানো হবে।
তিনি আরো বলেন, আজ বুধবার থেকেই সিকিউরিটি সার্ভিলেন্স ক্যামেরা (সিসি টিভি) স্থাপনের কাজ শুরু করতে পারবেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।