ঢাকা, ০১ নভেম্বর ২০১৫, নিরাপদনিউজ : প্রথম দুই কিলোমিটারের জন্য ৪০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে আজ রোববার থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার বর্ধিত ভাড়া কার্যকর হচ্ছে। প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া আগে ছিল ২৫ টাকা।
ভাড়া বাড়ানোর সঙ্গে বাড়ছে চালকদের জন্য দৈনিক জমার পরিমাণও। মালিকের জমা বাবদ আজ ১ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা করে দিতে হবে চালককে, যা এত দিন ছিল ৬০০ টাকা।
নিয়ম অনুযায়ী অটোরিকশায় উঠলে এটাই সর্বনিম্ন ভাড়া হওয়ার কথা, যদিও ওই ভাড়া বা ওই দূরত্বে যেতে কখনোই রাজি হন না চালকরা। বর্ধিত ভাড়া হিসেবে এবার প্রথম দুই কিলোমিটারের পরে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ৭ টাকা ৬৪ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ১২ টাকা করা হয়েছে। যানজট বা অন্য কোনো কারণে আটকে থাকলে প্রতি মিনিট বিরতির জন্য যাত্রীকে গুনতে হবে ২ টাকা করে, আগে যা ছিল ১ টাকা ৪ পয়সা।
ভাড়া বাড়ানোর পরও চালকরা মিটারে যেতে রাজি হবেন কি না সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। কারণ ‘মালিক বেশি জমা আদায় করেন এবং যানজটের মধ্যে মিটারে গেলে পোষায় না’-এই যুক্তিতে নিজেদের ইচ্ছামাফিক ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করে থাকেন চালকরা। উপায়হীন যাত্রীরাও মিটারে ওঠা ভাড়ার তিনগুন-চারগুন টাকা খরচ করে অটোরিকশায় চড়তে বাধ্য হন।
এই নৈরাজ্য নিয়ে খোদ সড়ক পরিবহণমন্ত্রী একাধিকবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সরকারের কোনো নির্দেশনা কাজে আসেনি।
২০০২ সালে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালু হওয়ার পর পাঁচ বার সরকার ভাড়া বাড়ালেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ করতে পারেনি। অটোরিকশা নীতিমালা-২০০৭ অনুযায়ী নির্ধারিত স্ট্যান্ডে অবস্থানকালে কোনো সিএনজি বা পেট্রোলচালিত থ্রি হুইলারের চালক স্বল্প দূরত্বসহ সরকার নির্ধারিত এলাকার মধ্যে যেকোনো দূরত্বে যেতে বাধ্য থাকলেও বাস্তবে রাজধানীর কোনো সিএনজি অটোরিকশা চালকই স্বল্প দূরত্বে এবং যাত্রীদের চাহিদামতো গন্তব্যে যেতে চান না।
নীতিমালার আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণবিষয়ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘অটোরিকশা চালক-মালিকদের মিটার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে এবং মিটার টেম্পারিং (কারসাজি) থেকে বিরত থাকতে হবে।’
এ ছাড়া ‘নির্ধারিত স্ট্যান্ড ছাড়া যাত্রী নেওয়ার উদ্দেশ্যে রাস্তার যেখানে-সেখানে থেমে থাকতে পারবে না, চলাচলরত অবস্থায় থাকতে হবে।’ নীতিমালায় এসব কথা উল্লেখ থাকলেও তা মানেন না কোনো চালকই।
বিআরটিএ সূত্র জানিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে অটোরিকশার ভাড়া বাড়ার পর কেউ যাতে অতিরিক্ত ভাড়া না নিতে পারে এবং চালকরা যাতে মিটারে চলেন সেজন্য কড়া নজরদারি থাকবে।
সিএনজি অটোরিকশা মিটারে চলছে কি না তা দেখতে ইতিমধ্যে চালক, মালিক, বিআরটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের সমন্বয়ে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। আজ রোববার থেকেই এ টিম কাজ শুরু করবে। এ ছাড়া রাস্তায় বিআরটিএর ভ্রাম্যমাণ আদালত থাকবে। যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়ামাত্র প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।