সকল মেনু

ব্লগার রাজীব হত্যা মামলায় দুই জনে মৃত্যুদন্ড, অন্য ৬ আসামির জেল জরিমানা

indexকোর্ট রিপোর্টার হটনিউজ২৪বিডি.কম: ব্লগার রাজীব হায়দার হত্যা মামলায় দুইজনকে মৃত্যুদন্ড, একজনকে যাবজ্জীবন এবং ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার তিন নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-এর বিচারক সাঈদ আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফয়সাল বিন নাইম ওরফে দিপু (২২) ও পলাতক আসামি রেদোয়ানুল আজাদ রানা (৩০)। অন্য আসামিদের মধ্যে মাকসুদুল হাসান অনিককে (২৬) যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ১০ হজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এহসানুর রেজা রুম্মান (২৩), মো. নাঈম সিকদার ওরফে ইরাদ (১৯) ও নাফির ইমতিয়াজকে (২২) ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড এবং ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আসামি সাদমান ইয়াছির মাহমুদকে (২০) ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অপর আসামি শাইখুল ইসলাম মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানীকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার আগে বিচারক বলেন, ‘নিহত রাজীব হায়দার শোভনকে ব্লগার হিসেবে উল্লেখ করা হলেও তিনি কি ধরনের লেখালেখির ম্যাধমে ব্লগার হিসাবে পরিচিত হয়েছেন তা পত্র-পত্রিকায় রয়েছে। কিন্তু মামলার তদন্তে তা উঠে আসেনি। রাজীবকে কি উদ্দেশে হত্যা করা হয়েছে তা তদন্তেও উঠে আসেনি।’ তিনি আরো বলেন, ‘মামলায় আসামিরা গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ব্লগে লেখালেখির কারণে রাজীবকে হত্যার পরিকল্পনা করার বিষয় এবং তা কীভাবে তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে, তা প্রকাশ করেছেন। মামলার তদন্তে ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। মামলায় কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী নেই। ভিকটিম একজন প্রকৌশলী ও আসামিরাও প্রকৌশলী। প্রকৌশলী দ্বারা প্রকৌশলীকে হত্যা করা হয়। মামলার নথি পযালোচনায় কোনো আসামি খালাস পাওয়ার উপদান নেই। তাই সব দিক বিবেচনা করে আসামিদের সাজা প্রদান করা হল।’
রায় ঘোষণার পর মামলার বাদী ব্লগার রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দিন এ রায়কে প্রহসনের রায় বলে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেকে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। যা পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই রায় প্রহসনের রায়। তাই এ রায়কে আমি প্রত্যাখ্যান করলাম এবং এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালত যাব। আমার ছেলেকে হত্যার পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন রাজীব শুধু আপনার ছেলে নয়, সে আমাদের ছেলে। তার হত্যাকারীদের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি হবে। অপরদিকে রায় ঘোষণার পর আসামি পক্ষের স্বজনরা জানান, আসামিরা খালাস পাওয়ার যোগ্য। তাই তারা খালাসের জন্য উচ্চ আদালতে যাবেন। রাজীব হত্যা মামলায় মোট ৫৫ সাক্ষীর মধ্যে ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত সোমবার রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য বৃহস্পতিবার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন বিচারক।
মামলার নথি সুত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বাসায় ফেরার পথে পল্লবীর কালশীর পলাশনগরে দুর্বৃত্তের হামলায় নিহত হন রাজীব। ওই ঘটনায় রাজীবের বাবা ডা. নাজিম উদ্দীন পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক নিবারণ চন্দ্র বর্মণ ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top