সকল মেনু

১৯৫ পাকিস্তানি সেনার যুদ্ধাপরাধের ‘তদন্ত হবে’

1451219131নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৭ ডিসেম্বর : মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তানে ফিরিয়ে নেয়া ১৯৫ জন সেনা সদস্যের যুদ্ধাপরাধের তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
গাইবান্ধা, হবিগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের দুই মামলায় আট যুদ্ধাপরাধীর বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ নিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তদন্ত সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক আবদুল হান্নান খান এ কথা জানান।
পরে তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ চলছে, প্রক্রিয়া চলমান আছে। অন্যান্য মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এ বিষয়েও তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি।
আন্তঃরাষ্ট্রীয় বিষয় হওয়ায় এ বিষয়ে সরকারের দিকনির্দেশনার প্রয়োজন আছে। ক্ষেত্র প্রস্তুত হলে এবং দিক-নির্দেশনা পেলে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু হবে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের পর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আটক ১৯৫ সেনা সদস্যকে ত্রিদেশীয় চুক্তির আওতায় বিচারের মুখোমুখি করার শর্তে ফেরত নেয় পাকিস্তান। এরপর ৪৪ বছর পার হলেও তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করায়নি দেশটি।
সম্প্রতি বাংলাদেশে দুই যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি কার্যকরের পর পাকিস্তান উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয়ায় এবং একাত্তরের গণহত্যার দায় অস্বীকার করায় সেই ১৯৫ জনের বিচারের দাবি নতুন করে আলোচনায় আসে।
আগামী ২৬ মার্চ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই ১৯৫ জনের প্রতীকী বিচার করার ঘোষণা দিয়েছে ‌‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার’ নামের একটি সংগঠন।
তদন্ত সংস্থার সংবাদ সম্মেলনে আবদুল হান্নান খান বলেন, পাকিস্তানের ১৯৫ জনের বিচারের বিষয়ে সিভিল সোসাইটির যে দাবি, আমি মনে করি, এ দাবি যৌক্তিক; তাদের বিচার হওয়া উচিৎ।
পলাতক যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের বিধান যুক্ত করে ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন সংশোধনের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে জোর দেন তদন্ত সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এম সানাউল হক।
তিনি বলেন, ফৌজদারি মামলায় পলাতক আসামিদের সম্পত্তি জব্দ করার বিধান থাকলেও আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইনে তা নেই। পুলিশ প্রবিধান অনুসারে তথ্য থাকার পর একই সময়ে একাধিক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করতে পারলে পলাতক আসামিদের ধরা সম্ভব।
সানাউল হক জানান, দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ও চলমান মামলায় সব মিলিয়ে ট্রাইব্যুনালের ৬৯ জন আসামি বর্তমানে পলাতক।
পরে তিনি বলেন, ট্রাইব্যুনাল যখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে, গ্রেপ্তারের সে আদেশ তদন্ত সংস্থায় আসে না। কারণ আসামিকে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা তদন্ত সংস্থাকে দেয়া হয়নি। তদন্ত চলাকালে প্রাথমিক অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে বিনা পরোয়ানায় আসামিকে গ্রেপ্তার অধিকার চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব করা হয়েছিল। মন্ত্রণালয় এর সঙ্গে একমত পোষণ করে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এরপর আর অগ্রগতি দেখিনি।
যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসা গণজাগরণ মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন আগে থেকেই মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনে এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো নির্দেশনা না থাকায় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে আসা কোনো রায়েই সম্পদ জব্দ বা ক্ষতিপূরণের বিষয়টি আসেনি।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, সকল যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বর্তমান সংবিধানে না হলে প্রয়োজনে তা পরিবর্তন করে যুদ্ধাপরাধীদের সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে।
ওই প্রসঙ্গ টেনে সানাউল হক বলেন, যদি আইনে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত বা জব্দ করার বিধান যুক্ত হতো, তাহলে এতো আসামি পলাতক থাকার সুযোগ পেত না, তাদের ধরা সম্ভব হতো। এজন্য ওই বিধান যুক্ত করে আইন সংশোধন প্রয়োজন। বিডিনিউজ।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top