সকল মেনু

মনে জঙ্গি, কাজেও জঙ্গি!

jongi1449400052নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ০৬ ডিসেম্বর : মনে মনে জঙ্গি, কাজে-কর্মেও জঙ্গি। এমনই এক জঙ্গিনেতাসহ তিন জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের একজন এ এইচ এম খায়রুল আসাদ সোহাগ। তিনি একটি বেসরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত। তিনি একাধারে জঙ্গিদের আশ্রয়দাতা, অর্থদাতা এবং বুদ্ধিদাতা। তার বেতনের অধিকাংশই জঙ্গিবাদী কাজে ব্যবহার করা হয়।
আর বাকি দুজন- মীর মোয়াজ্জেম হোসেন সাইফী ওরফে জার্মিন এবং কফিল উদ্দিন বিন আমিন সাধারণ মানুষদের জঙ্গিবাদী কাজে উদ্বুদ্ধ করেন। তারা দুজন বিভিন্ন জায়গায় ওয়াজ মাহফিল করে বেড়াতেন। এর ফাঁকে লোকজনকে উদ্বুদ্ধ করে জঙ্গিতে পরিণত করেন।
রোববার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, হোসেনি দালানে বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে কয়েকজন জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এদের নাম বেরিয়ে আসে। তাদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়। গত রাতে উত্তরা থেকে এই তিন জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, সোহাগ মূলত একটি মোবাইল ফোন কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরি করেন। তিনি যে টাকা বেতন পান, তার বেশিরভাগই জঙ্গি কাজে ব্যয় করেন। এর আগে তার বাসা থেকে একাধিকবার একাধিক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। কারণ তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল, তিনি আসলেই সক্রিয় সদস্য কি না তা জানতে। পরে দেখা যায়, সক্রিয় সদস্যের চেয়েও ভয়ানক তিনি।তারা কেন্দ্রীয়ভাবে মিটিং করেই সিদ্ধান্ত নেন যে, তাদের মধ্যে কিছু লোক শুধু চাকরি ও ব্যবসা করে টাকা সরবরাহ করবেন। সেই সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবেই সোহাগ চাকরিতে প্রবেশ করেন।
মিটিংয়ে আরো সিদ্ধান্ত হয়, যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ভালো চাকরি করেন, যাদের সরকারের প্রতি অনাস্থা রয়েছে, যারা তাগুতি শক্তির বিরুদ্ধে, যারা পুলিশকে পছন্দ করেন না, তাদের যেকোনো উপায়ে সদস্য করা।
সিদ্ধান্ত মোতাবেক মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ও কফিল উদ্দিন সূরা সদস্য পদে শপথ গ্রহণ করেন। তারা সাধারণ লোকদের টার্গেট করে বোঝান যে, আল্লাহর পথে জিহাদ করতে হবে। মনের জিহাদই বড় জিহাদ নয়, শারীরিক জিহাদও করতে হবে। নাহলে বেহেস্ত পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া উগ্রবাদে যারা বিশ্বাস করে, তাদেরও খুঁজে বের করে এ দলের সদস্য বানানোর টার্গেট করে তারা।
যুগ্ম-কমিশনার বলেন, হোসেনি দালানে বোমা হামলার সঙ্গে এদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে বোমা হামলায় যারা সরাসরি অংশ নিয়েছিল, তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল এদের। ওই বোমা হামলায় সরাসরি অংশ নেয় জালাল উদ্দিন। রিমান্ডে জালাল জানিয়েছিল, তার সঙ্গে কফিল, সোহাগ ও মোয়াজ্জেমের সরাসরি যোগাযোগ ছিল।
মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, মোবাইল জ্যামার দিয়ে তারা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরদারি বন্ধ করত। তারা যখন কোনো বাসায় মিটিং করত, তখন এই জ্যামার পাশে বসিয়ে রাখত।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই জ্যামার বাজারে বিক্রি হয় না। এটি অস্ত্রের মতো। অস্ত্র যেমন প্রকাশ্যে বিক্রি হয় না, তেমনই জ্যামারও বাজারে বিক্রি হয় না। তবে তাদের কাছে কীভাবে এই জ্যামার এলো, তা জানতে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। রিমান্ডে জানা যাবে কোথা থেকে কার মাধ্যমে এই জ্যামার এলো বা এদের উদ্দেশ্য কী ছিল।
অন্য আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তরুণদের টার্গেট করে জেএমবিতে আনা হচ্ছে। কারণ তরুণরাই সবকিছু ওলটপালট করে দিতে পারে। তাদের মরারও কোনো ভয় নেই। তাদের উগ্রবাদী বানানো সহজ।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top