সকল মেনু

দিনাজপুরে ফুলবাসী রাণীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য ঘনীভূত

mail.google.comমোঃ বেলাল উদ্দিন, দিনাজপুর: দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে ফুলবাসী রাণীর মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। মৃত্যুর ২ সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি এলাকাবাসী। তবে ফুলবাসীর বাবা বলছে, তার মেয়েকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে। আর পুলিশ বলছে এটা নিছক একটি আত্মহত্যা। এ ব্যাপারে ফুলবাসীর পিতা দীনেশ চন্দ্র রায় খানসামা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং-০৮, তারিখ: ১৬-০৭-২০১৫ ইং।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী কামারপাড়া নিবাসী দিন মজুর দীনেশ চন্দ্র রায়-এর বড় কন্যা শ্রীমতি ফুলবাসী রায় (২০) এর সাথে খানসামা উপজেলার ভান্ডারদহ মেম্বারপাড়া গ্রামের প্রকাশ চন্দ্র রায়ের পুত্র শ্রী কমল কুমারের ভালবাসা চলতে থাকে। ভালবাসার টানে এক পর্যায়ে তারা সবার অজান্তে ঢাকায় পালিয়ে যায়। পরে তারা বাড়িতে ফিরে আসলে উভয় পরিবারের আলোচনা সাপেক্ষে গত ২২ ফেব্রুয়ারী রবিবার (১০ ফাল্গুন) আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়। কমল কুমার একজন কসমেটিক্স ব্যবসায়ী। তিনি খানসামা পাকেরহাটে কসমেটিক্সের দোকান করেন। এ বিয়েতে ফুলবাসী রাণীর বাবা জামাইকে ৮০ হাজার টাকা যৌতুক হিসাবে প্রদান করেন। বিয়ের ৬/৭ মাস অতিবাহিত হতে না হতেই গত ১৬ই জুলাই তারিখে স্বামীর বাড়িতে ফুলবাসী রাণী ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে শ্বশুরালয়ের লোকজন জানান। এই ব্যাপারে তার বাবা দীনেশ চন্দ্র রায়ের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, তার জামাই কমল কুমারকে ৮০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়ার পরও সে একটি মোটর সাইকেল কেনার টাকা দাবী করে। এই টাকা দিতে না পারায় তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ দেখা দেয়। স্বামী কমল কুমার ও তার মাতা সবসময় ফুলবাসীকে মানসিক নির্যাতন করত। তিনি দাবী করেন, আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি তাকে হত্যা করা হয়েছে। আত্মহত্যার গুজব ছড়িয়ে স্বামীর পরিবার নিজেদের বাঁচাতে চেষ্টা করছে। মৃত ফুলবাসীর পিতা দীনেশ চন্দ্র রায় থানায় দেওয়া এজাহারে উল্লেখ করেন “তার মৃত্যুর ব্যাপারে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। খবর পেয়ে খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ কৃষ্ণ সরকার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ফুলবাসীর লাশ মাটিতে শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান। এ ব্যাপারে ওসি কৃষ্ণ সরকারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, তার পরিবারের লোকজনরা পুলিশ উপস্থিত হওয়ার আগেই লাশ নামিয়ে ফেলেছে। তবে লাশের শরীরে কোন দাগ পাওয়া যায়নি বা ফাঁসির আলামত পাওয়া যায়নি। এটা নিছক আত্মহত্যা বলে জানান খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ কৃষ্ণ সরকার। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন মেম্বার নুরুল ইসলাম বলেন, এটা হত্যা নয়, আত্মহত্যা আর ফুলবাসীর স্বামী কমল কুমারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমি আসার আগেই আমার মা ও পরিবারের লোকজন ফুলবাসীর লাশ নামিয়ে ফেলে। কিন্তু আইনগতভাবে কেউ আত্মহত্যা করলে পুলিশের উপস্থিতি ছাড়া লাশ নামানোর কোন এখতিয়ার নেই। অপরদিকে ফুলবাসীর বাবা জানান, মামলা তুলে নেওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে আমাকে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এমন কি মামলা তুলে না নিলে আমার ছোট মেয়েকেও তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। এদের ভয়ে আমি আমার ছোট মেয়েকে ঢাকায় পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হই। উল্লে“খ্য যে, আমার মৃত মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকজন প্রভাবশালী ও অর্থশালী হওয়ায় মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এবং আমাদের বড় ধরণের ক্ষতিসাধন করতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top