সকল মেনু

আসামির ঘরে জন্মেও তারকাখ্যাতি

Lohan1437502461বিনোদন প্রতিবেদক: প্রবাদ আছে, জন্ম হোক যথা-তথা, কর্ম হোক ভালো। আর এ প্রবাদের প্রমাণও আছে ভুরিভুরি। কোথায় জন্ম হল, তাই দিয়ে কাউকে মানুষ মনে রাখে না। মানুষকে মনে রাখে কর্মের মধ্যে দিয়ে। তারকাদেরও তাই। তাদের জন্ম কোথায়, তাই দিয়ে কেউ তারকা হতে পারে না। কাজ দিয়েই তারা তারকা হয়ে ওঠেন। আর তাই গরিব ঘরের সন্তানও যেমন বিশ্ববিখ্যাত তারকা হতে পারেন, তেমনি তারকা হতে পারেন আসামির সন্তানও। আসামির ঘরে জন্মেও তারকাখ্যাতি অর্জন করেছেন, সত্যিই এমন তারকাও আছেন।

বাপকা বেটি লিন্ডসে লোহান
লিন্ডসে লোহান। তার কেবল তারকাখ্যাতিই নয়, আছে প্রবলেম চাইল্ড হিসেবে খ্যাতিও। বেশ কয়েকবারই তাকে পোহাতে হয়েছে পুলিশি ঝামেলা। সেজন্য অবশ্য লিন্ডসেকে খুব বেশি দোষ দেওয়া যায় না। ব্যাপারটা যে তার রক্তে মিশে আছে। লিন্ডসে যখন তার ক্যারিয়ার শুরু করছেন, তার বাবা মাইকেল তখন জেলে। শেয়ারবাজারে দুর্নীতির দায়ে তিনি তখন তিন বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। আরো পাঁচ বছর থাকতে হবে নজরদারিতে। পরে শর্তভঙ্গের জন্য সে পাঁচ বছরের সঙ্গে আরো এক বছর যুক্ত হয়।

সেবার জেল খেটেও অবশ্য মাইকেল শোধরাননি। এরপরও বেশ কয়েকবারই আদালতে যেতে হয় তাকে। কোনোবার শারীরিক আঘাতের অভিযোগে, কোনোবার মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে, কোনোবার পাওনা পরিশোধ না করতে পেরে তার হাতে হাতকড়া পরে। সেই মাইকেলের কন্যা লিন্ডসে লোহান যে এমন প্রবলেম চাইল্ড, তাতে আর অবাক হওয়ার কী আছে!

১-হিটম্যান-পুত্র উডি হ্যারেলসন
হলিউড-অভিনেতা উডি হ্যারেলসন দ্য পিপল ভার্সেস ল্যারি ফ্লিন্ট সিনেমার জন্য অস্কারে পর্যন্ত মনোনয়ন পেয়েছিলেন। এই অভিনেতা যেসব সিনেমাতে অভিনয় করেন, তার বাবার জীবনকাহিনি সেসব সিনেমার চেয়ে কম কিছু নয়। তার বাবা চার্লস প্রথম জীবনে এনসাইক্লোপিডিয়া বিক্রি করতেন। পরে তিনি হয়ে যান হিটম্যান। মানে টাকার বিনিময়ে মানুষ খুন করতেন। আর তার খুন করার ঘটনাগুলোও বেশ বিখ্যাত হয়ে ওঠে। তিনি প্রথম খুন করেন অ্যালান হ্যারি বার্গ নামের এক কার্পেট ব্যবসায়ীকে। প্রতিদ্বন্দ্বী এক ব্যবসায়ী বার্গকে খুন করার জন্য তাকে দেন ২,৫০০ ডলার। খুনের জন্য চার্লস অভিযুক্ত হলেও, বিচারে শেষ পর্যন্ত খালাস পেয়ে যান। একই বছর তিনি স্যাম ডেগেলিয়াকে খুনের চুক্তিবদ্ধ হন। এবারও আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত আইনের জালে আটকা পরেন ১৯৭৩ সালে। তার ১৫ বছরের জেল হয়। অবশ্য ভালো ব্যবহারের জন্য তিনি ৫ বছরের মাথায়ই জেল থেকে বেরিয়ে আসেন।

জেলে যতই ভালো ব্যবহার করুন না কেন, জেল থেকে বেরিয়েই চার্লস আবার তার পুরোনো ‘পেশা’তেই ফিরে যান। ১৯৭৯ সালে তিনি আবারও পুলিশের হাতে ধরা পরেন। এবার অভিযোগ, তিনি বিচারক জন উড জুনিয়রকে হত্যা করেছেন। যেদিন জন উড খুন হন, সেদিনই তার একটি বিচারের রায় দেয়ার কথা ছিল। মাদক পাচারের মামলা। আর এ ধরনের মামলায় কঠিন শাস্তি দিতেন বলে বিচারক জন উডের নামই হয়ে গিয়েছিল ম্যাক্সিমাম জন। এবারও হয়তো চার্লস বেঁচে যেতেন। কিন্তু খুনের পরিকল্পনা করার একটি ধারণকৃত অডিও ক্লিপ এফবিআইয়ের হাতে চলে আসে। দুটি মামলায় চার্লসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ২০০৭ সালে জেলখানাতেই তিনি মারা যান।

২-চোরাচালানির মেয়ে লেইটন মিইস্টার
গসিপ গার্ল তারকা লেইটন মিইস্টার তখন তার মায়ের পেটে। তার মা কনস্ট্যান্সকে দাঁড়াতে হল আসামির কাঠগড়ায়। বিচারে তার ১০ বছরের জেল হল। অভিযোগ— তিনি মাদকপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত। এবং তিনি একা নন, তার স্বামীও। তারা দুজনে মিলে জ্যামাইকা থেকে আমেরিকাতে মারিজুয়ানা নিয়ে এসেছিলেন। পরিমাণটাও নিতান্ত কম নয়, প্রায় ১২০০ পাউন্ড!

লেইটনের জন্ম দেয়ার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অনুমিত দেয়া হয়। লেইটনের দেখাশুনা করার জন্য তাকে ৩ মাস জেলখানার বাইরে একটি বাড়িতে থাকার অনুমতিও দেয়া হয়। পরে শিশু লেইটনের দেখভালের দায়িত্ব নেন তার বাবা-মায়ের বাবা-মা।

৩-আফিম, জুয়া এবং জ্যাকি চ্যান
জ্যাকি চ্যান যে প্রথম জীবনে পর্নো তারকা ছিলেন, সে তো সবার জানা। না, তার বাবা-মা পর্নো তারকা ছিলেন না। তবে তার বাবা-মার গল্পও বেশ অদ্ভুত। চীন তখন এক টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে ন্যাশনালিস্টদের আন্দোলন চলছে। জ্যাকি চ্যানের বাবা চার্লস চ্যান ছিলেন ন্যাশনালিস্টদের সিক্রেট এজেন্ট। কমিউনিস্টদের লোক বেশ কয়েকবার তাকে হত্যা করারও চেষ্টা করে। এমনকি চার্লস চ্যানের শরীরে কমিউনিস্টদের ছোঁড়া বেশ কয়েকটি গুলিও স্থায়ী বসত গাড়ে। পরে চার্লস চ্যান একটি বন্দরের ইন্সপেক্টর হন।

ওদিকে জ্যাকি চ্যানের মা লি-লি বিধবা হওয়ার পর, এক সময়ে আফিম চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। বেশ ভালোই দিন কাটছিল তার। সঙ্গে জুয়াখেলাও শুরু করেছিলেন তিনি। জুয়াখেলায় রীতিমতো ভালো ছিলেন। তবে একদিন আফিম পাচার করতে গিয়ে ধরা পরে যান বন্দর ইন্সপেক্টর চার্লস চ্যানের হাতে। চার্লস অবশ্য লি-লিকে ছেড়ে দেন। সেই ছেড়ে দেয়া থেকেই তাদের কাছে আসার শুরু। তারা নাকি একসঙ্গে জুয়াও খেলতেন। পরে তারা বিয়ে করেন। আর তাদের ছেলে জ্যাকি চ্যান একদিন হয়ে যান দুনিয়া-কাঁপানো অ্যাকশন হিরো।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top