সকল মেনু

পাখী আর কিরন মালা জামার দাপটে হুমকির মুখে তাঁত শিল্প

 mail.google.com দিলীপ গৌর : ভিন দেশী শাড়ীর সহজ লভ্যতা আর মহিলাদের থ্রীপিচ পড়ার প্রবনতা বেড়ে যাওয়ায় এবারের ঈদে ধ্বস নেমেছে তাঁতশিল্প সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জের কাপড়ের হাট গুলোতে। বেচা কিনি কম হবার কারনে একদিকে ব্যস্ততা কমে গেছে তাঁত পল্লীগুলোতে  অন্য দিকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঋনের দায় এসে চাপছে তাঁত মালিকদের ঘাড়ে । এ অবস্থায় সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে পথে বসতে হবে ক্ষুদ্র তাঁত মালিকদের।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের কাপড়ের হাট দেশের বৃহত্তম কাপড়েরর হাট। প্রত্যেক বছর ঈদকে সামনে রেখে এসময় হাটটি ক্রেতা আর বিক্রেতার ভীড়ে থাকে জমজমাট। শুধু সিরাজগঞ্জ জেলা নয় দেশের বিভিন্ন স্থানে থেকে পাইকাররা  আসে এখানকার তাঁতের শাড়ী কেনার জন্য। তবে শাড়ীর ব্যবহার কমে যাওয়ায় এবং তাঁত শিল্পে মন্দা ভাবের কারনে এবার  পুরোপুরী জমে উঠেনি  এই হাটটি। একই অবস্থা এনায়েত পুরের কাপড়ের হাটের। গুনগত মানসম্মত আর দামে কম হওয়ার সিরাজগঞ্জের তাঁতের শাড়ীর খ্যাতী রয়েছে দেশ জুড়ে। বিশেষ করে বেলকুচি ও শাহজাদপুর  উপজেলার উৎপাদিত জামদানী, কাতান, সিল্ক সহ বাহারী সব শাড়ীর সুনাম দীর্ঘদিনের। তাই প্রতিবছর ঈদকে সামনে রেখে তাঁতের খুট খাট শব্দ আর শ্রমিকদের ব্যস্তাতায় মুখরিত থাকে পল্লীগুলো। তবে এ বছর সেই চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। বর্তমানে তাঁত শিল্পের মন্দা ভাবের কারনে এখনো পুরোপুরি ব্যস্ততা বাড়েনি তাঁতীদের। চাহিদামত পাইকার না আসায় উৎপাদিত কাপড় বিক্রি করতে পারছে না তাঁত মালিকরা। সারা বছর কাপড় উৎপাদন করে ঈদের সময়সে গুলো বিক্রি করা হয়। অনেকে ব্যাংক ঋন নিয়ে সারা বছর কাপড় তৈরি করে। কিন্তু এবার ঈদকে সামনে রেখে আশানরুপ কেনা বেচা না হওয়ায় হতাশ তাঁত মালিকরা। শাহজাদপুরেরপোতাজিয়ার তাঁত ব্যবসায়ী আবুলহোসেন বলেন এবার হাটেরযে অবস্থা তাঁেত লস দিয়ে শাড়ী বিক্রি করলেও গুদামে পড়ে থাকবে লক্ষ লক্ষ টাকার শাড়ী। হাটের এই অবস্থা আগে কখনও দেখিনি। হাটে তাঁতের আরেক ব্যবসায়ী বলেন প্রত্যেক বছর এসময়ক্রেতার ভীড়ে পা ফেলানোর যায়গা থাকে না তবে ২ বছর ধরে দেখছি এমন ভাব।কেন ব্যবসার এ অবস্থা জানতে চাইলে তিনি বলেন স্টার জলসার পাখী আর কিরন মালার জন্য ব্যবসারন এই অবস্থা।কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম টিভি সিরিয়ালের সাথে তাঁতের শাড়ীর ব্যবসার কি সম্পর্ক । উত্তওেসেই বয়স্ক তাঁত মালিক বললেন সিরিয়ালের অবিনেতাদের পড়া থ্রিপিচ গুলো তাদেও নামে ছারা হয় গত বছর ছিলো পাখী জামা আর এবার নেমেছে কিরন মালা ।ছোটথেকে বড় এমন কি বয়স্ক মহিলারাও ঝুকে পড়ছে এই সকল থিপিচের দিকে।সেই সাথে ভারতের শাড়ী বাজারেযে দামে বিক্রি হচ্ছে তারচেয়ে আমাদের তাঁতের শাড়ীর দামবেশীসে কারনেযে টুকু শাড়ীরর চাহিদা আছে তারবেশী কিনছে ভারতীয় শাড়ী। ব্যবসারযে অবস্থা এ ভাবে চলতে থাকলে বড় বড় মহাজন  টিকে থাকতে পারলেও আমরা যারা অল্প কয়েকটা তাঁত নিয়ে ব্যবসা করছি তাদের পথে বসতে হবে। তাঁতীরা সারা বছর আশায় থাকে ঈদের আগে হাটে ভালোবেচা কিনি হবে কিন্তু তা হচ্ছে না। এক সময় এখানকার তাঁতের শাড়ী ভারতে বিক্রয় করা হতো বর্তমানেসেইখানেও আগের চাইতে কম শাড়ী বিক্রয় করা হচ্ছে। একদিকে রং,সুতা আর মুজুরীর দাম দিন দিন বাড়ছে অন্য দিকে বাজাওে চাহিদা দিন দিন কমছে । ফলে সব মিলিয়ে হুমকির মুখে পড়ছে তাঁত শিল্প। এই শিল্পটিকে রক্ষায় বাজারে ভিনদেশী শাড়ীর দৌরাত্ব কমানোর পাশাপশি সরকারের সহযোগীতা না পেলেজেলার পাওয়ারলুম ও হ্যান্ডলুম মিলে ২ লক্ষ তাঁত রয়েছে। আর এর সঙ্গে জড়িত ৩ লাখ শ্রমিক, কর্মচারীর বেকার হয়ে যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top