সকল মেনু

বাম্পার ফলন হবার পরেও তরমুজ চাষীদের মুখে হাসি নেই

unnamed  গৌরাঙ্গ লাল দাস , গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: বাম্পার ফলন হবার পরেও গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার তরমুজ চাষীদের মুখে হাসি নেই। অব্যাহত হরতাল,অবরোধের আতঙ্কে পাইকারা না আসায় উপজেলার তরমুজ চাষীরা মৌসুমী এই আস্বাদ ফলটি বিক্রি করতে না পারায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। পাইকারের অভাবে প্রায় শতাধিক আড়তে কয়েক কোটি টাকার তরমুজ পড়ে আছে। লক্ষ লক্ষ টাকার তরমুজ আড়তে তুলে বেঁচা- বিক্রি না থাকায় এসব আড়ৎদার এখন অলস সময় কাটাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, অত্র উপজেলায় ৯শত ১০ হেক্টর জমিতে এ বছর তরমুজের চাষ করা হয়েছে। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে  ১ লক্ষ ২০ হাজার মেঃ টন তরমুজ।
কলাবাড়ী ইউনিয়নের চিতলীয়া, বুরুয়া,নলুয়া ,মাছপাড়া, তেতুলবাড়ী, কুমুরিয়া ,রুথিয়ার পাড়, হিজলবাড়ী, চকপুকুরিয়াসহ প্রায় ২০টি বিলে এ বছর তরমুজের চাষ হয়েছে। এ সব এলাকার তরমুজ চাষীরা কৃষি অফিসের তথ্য মানতে নারাজ। তাদের মতে বিগত দিনের চেয়ে এ বছর তরমুজের ফলন বেশী হয়েছে। তাদের হিসেব মতে এ বছর তরমুজ উৎপদন হবে প্রায় দেড় লক্ষ মেট্রিক টন। তবে ফলন বেশী হলেও বিক্রি না থাকায় এ সব এলাকার তরমুজ চাষীদের মুখে হাসি নেই। অনেক চাষী সরকারি -বেসরকারি ব্যাংক , সমবায় অধিদপ্তর ও বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে।
চিতলীয়া বিলের তরমুজ চাষী নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সমবায় অধিদপ্তর থেকে ১৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ২৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। আশা করেছিলাম তরমুজ বিক্রি করে ঋনের টাকা পরিশোধ করবো। কিন্তু ফলন ভাল হবার পরেও আমরা চাষীরা এখন হতাশাগ্রস্থ । পাইকার না থাকার কারনে তরমুজ বিক্রি করতে পারছি না। কি ভাবে এখন ঋনের টাকা শোধ করবো ভেবে পাচ্ছি না। এখনও যদি পাইকারা আসে তাহলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি।
কালীগঞ্জ বাজারের আড়ৎদার মনিমোহন বল্লভ বলেন, প্রতি বছর এই সময়ে আমাদের এখানে প্রতিদিন প্রায় দু থেকে তিন কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হতো। শতাধিক আড়তের প্রতিটি আড়তে চার পাঁচজন করে পাইকার থাকতো। সেখানে এখন ভরা মৌসুমে পুরো বাজারে দু একজন করে পাইকার আসছে। আড়ৎ থেকে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে না। যার ফলে চাষীরা ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলছে না। এ ভাবে ক্ষেতে তরমুজ পড়ে থাকলে ১০-১৫ দিনের মধ্যে তা নষ্ট হয়ে যাবে।
কুষ্টিয়া থেকে আগত পাইকার তোহা মন্ডল বলেন, প্রায় দশ বছর ধরে এই বাজার থেকে তরমুজ কিনে নিয়ে আমার এলাকার বাজারে বিক্রি করি। এখানের উৎপাদিত তরমুজ খেতে মিষ্টি ও সুস্বাদু । বিগত বছর গুলোতে আমাদের এলাকা থেকে অনেক পাইকার এই বাজারে আসতো। কিন্তু এবছর হরতাল, অবরোধের কারনে পাইকারা আসতে ভয় পাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, স্বাদ ও মানে কোটালীপাড়ার উৎপাদিত তরমুজ অতুলনীয়। দামের দিক বিবেচনা করলে এখানের তরমুজ সাধারণ জনগনের ক্রয় ক্ষতার মধ্যে রয়েছে। এই বাজারে রয়েছে ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংকিং সুবিধা। আমি আশা করি দেশের বিভিন্ন তরমুজ ব্যবসায়ীরা এখান থেকে তরমুজ কিনে নিজ নিজ এলাকায় বিক্রি করলে লাভবান হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top