নিজস্ব প্রতিবদেক : পণ্যে কেমিকেল মেশানো, ওজনে কম দেয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল পণ্য বিক্রিসহ প্রতিনিয়ত নানাভাবে ক্রেতাদের প্রতারিত করছে এক শ্রেণির বিক্রেতা। অনেক সময় ক্রেতারা এসব টের পেলেও আইন না জানার কারণে নীরবেই তা সহ্য করছেন। গবেষকরা বলছেন, সরকারের অর্পিত দায়িত্ব ভোক্তা অধিকার সংস্থাগুলো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণেই ক্রেতার স্বার্থ সংরক্ষিত হচ্ছে না। তবে কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ – ক্যাব বলছে, তাদের নানা প্রচার প্রচারণার ফলে ভোক্তারা এখন অনেক বেশি সচেতন। আর এ বিষয়ে কথা বলতে নারাজ ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
একই পেয়াজ তিনটি পাত্রে রেখে ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রি করা হচ্ছে রাজধানীর পলাশী বাজারের কয়েকটি দোকানে। আর এই চালাকি ধরতে না পেরে ক্রেতারাও একই পেয়াজ কিনছেন ভিন্ন ভিন্ন দামে। নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটিই পণ্যের ক্ষেত্রই দেশজুড়ে ক্রেতাদের ঠকানো হচ্ছে এমন সব অভিনব কায়দায়। অথচ আইন অনুযায়ী ক্রেতা ঠকানোর দায়ে সর্বোচ্চ ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্রেতা বা বিক্রেতাই জানেন না এই সব আইন বা দণ্ডের কথা।
বিপণন গবেষকরা বলছেন, সরকারের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও কনজুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ – ক্যাব তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করলেই এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।
বিপণন গবেষক অধ্যাপক ড. বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘সরকার এই অধিদপ্তরের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে চান, কিন্তু তাদের কার্যক্রম দৃশ্যত দেখা যায় না। ক্যাব একটি বেসরকারি সংস্থা, তাদেরও কিছু দায়িত্ব রয়েছে। তবে তারা যদি কেবল অফিসেই তাদের কার্যকলাপ সীমাবদ্ধ রাখে তাহলে এটা ঠিক হবে না।’
যদিও ক্যাব বলছে, ভোক্তাদের অধিকার সচেতন করতে নানা কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা।
ক্যাব’র সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভুঁইয়া বলেন, ‘ক্যাব ভোক্তাদের সচেতন করতে নানা সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করে থাকে। আমরা প্রতিনিয়ত মানববন্ধন করছি। এছাড়াও সরকারের কাছে দাবি রেখেছি যাতে এই বিষয়গুলো স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যাতে ভোক্তারা অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে পারে।’
আর এ ব্যাপারে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হয়নি ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করেছে ৪৮ হাজার ১শ ৫৪টি। এসময় অধিদপ্তরে ভোক্তাদের অভিযোগ জমা পড়েছে মাত্র ৬শ’ ৫৪টি। আর বিভিন্ন অপরাধে প্রায় সাড়ে ১১হাজার প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে ৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।