সকল মেনু

বেহেশতে যেতে হলে শিরক ও মাজার পূজা করা যাবে না : আল্লামা শফী

Pic--Allama Sofi--2মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা মুফতি শাহ আহমদ শফী বলেছেন, বেহেশতে যেতে হলে শিরক করা যাবে না, মাজার পূজা, মাজারে গিয়ে সন্তান চাওয়া, চাকরী চাওয়া এবং মাজারে টাকা দেওয়া যাবে না। একই সঙ্গে তিনি এগুলো পরিহার ও সঠিকভাবে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার মাধ্যমেই কেবল বিপদাপদ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর সাহায্য আশা করা যায় বলেও মন্তব্য করেছেন। তিনি গত রোববার রাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের শ্রীনাথপুর মোহাম্মাদীয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এতে জেলা প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাজার হাজার ওলামায়ে কেরাম ছাড়াও দশ সহস্রাধিক মুসল্লির সমাবেশ ঘটে। রোববার সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এই সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুল বারী ধর্মপুরী, মাওলানা সৈয়দ মাসউদ আহমদ, মাওলানা সৈয়দ মুজাদ্দিদ আলী।
কারানির্যাতিত আলেম মাওলানা লুৎফুর রহমান জাকারিয়া ও মাওলানা শামসুল ইসলামের যৌথ পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য পেশ করেন, হাটহাজারী মাদরাসার প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, শায়খুল হাদিস আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি রশিদুর রহমান বর্ণভী, শায়খুল হাদিস আল্লামা আব্দুস সালাম, প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুর রহমান, অধ্যাপক মাওলানা আব্দুস সবুর, মাওলানা নুরুল মুত্তাকিন জুনাইদ প্রমুখ।
আল্লামা শাহ আহমদ শফী আরও বলেন, আমরা সব মুসলমান আস্তিক। কিছু আছে নাস্তিক। নাস্তিকদের স্থান বাংলার জমিনে হবে না। ইসলামে অসত্য, অন্যায়, সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের কোনো স্থান নেই। ইসলাম ন্যায় ও শান্তির ধর্ম। ইসলামকে অনুসরণ করতে পারলে এদেশে কোনো হানাহানি ও সন্ত্রাস থাকবে না। আর ইসলামী শিক্ষায়ও কোনো সন্ত্রাসের স্থান নেই। তিনি উপস্থিত হাজারো জনতার কাছ থেকে প্রতিশ্র“তি নেন, তাদের সন্তানদেরকে কওমী মাদরাসায় পড়ানোর, মিথ্যা কথা না বলার, নামাজে গাফলতি না করার, যাকাত আদায়ে অলসতা না করা।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশকে ইসলামশূন্য ও ঈমানি চেতনাহীন করার ষড়যন্ত্রে ওলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদি জনতা চোখ বুঁজে থাকবে না। অন্যথায় তৌহিদি জনতার ক্ষোভ কোনোভাবেই থামাতে পারবে না সরকার। ইসলাম ও আলেম ওলামা বিরোধী সব ষড়যন্ত্র বন্ধে অবিলম্বে সরকারের পদক্ষেপ নিতে হবে।
আল্লামা শফি স্টেইজে ওঠার পরই প্রথমে বাইয়াত (মুরিদ) কার্য সম্পাদন করেন এবং দীর্ঘ মোনাজাত করেন। মুনাজাতের পর সংক্ষিপ্ত নসিহত পেশ করেন ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের উপর। সম্মেলনে প্রশাসনের বিভিন্ন লোক, পুলিশ, ডিবি, আনসার বাহিনীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। উল্লেখ্য, নাস্তিক ব্লগারদের শাস্তির দাবিসহ ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়ে সাসম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বহুল আলোচিত হেফাজতে ইসলাম ও আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শ্রীনাথপুর মোহাম্মাদীয়া মাদ্রাসার বার্ষিক ইসলামী মহাসম্মেলনে যোগ দিতে হেফাজতে ইসলামের আমীর, বাংলাদেশের সবোর্চ্চ কওমী বিদ্যাপিঠ হাটহাজারি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি শাহ্ আহমদ শফি গত ১ ফেব্র“য়ারি রোববার বেলা ২.৫০ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে মাদ্রাসা সংলগ্ন মাঠে  মাধমে সংশ্লিষ্ট ময়দানে এসে পৌছেন এবং সোমবার দুপুর ১২.৫০ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে কমলগঞ্জ ত্যাগ করেন বলে জানান শ্রীনাথপুর মোহাম্মদিয়া মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল মাওলানা মাসুক আহমদ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top