সকল মেনু

পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে: খালেদা জিয়া

81090_7854444নিজস্ব প্রতিবদক : বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি চলছে এবং পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত চলবে।  একই সঙ্গে সবার অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আবারো জোর দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।  দীর্ঘ ১৫ দিন কার্যালয়ে অবরুদ্ধ থাকার পর প্রথমবারের মধ্যে গণমাধ্যমে কথা বললেন তিনি।

বেগম খালেদা জিয়া বলেন,  আমরা বাধ্য হয়ে সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছি। কর্মসূচি চলছে এবং পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত তা চলতে থাকবে। আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের কোনো সুযোগ না দিতে ক্ষমতাসীনরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। সারা দেশে বিএনপি ও ২০ দলের নেতা-কর্মীরা সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ বিরাট মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামছেন। সঙ্গে সঙ্গে মিছিলে গুলী চালানো হচ্ছে। কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করা হচ্ছে। পুলিশের ছত্রছায়ায় ক্ষমতাসীনদের মদতপুষ্ট সন্ত্রাসীরাও হামলা করছে।

দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, দেশের চলমান সংকট নিছক কোনো আইন-শৃংখলার সমস্যা নয়। এটি রাজনৈতিক সংকট। এর রাজনৈতিক সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা আবারও আহ্বান জানাচ্ছি। অবৈধ ক্ষমতাসীনদের হিংসা ও নাশকতা, অন্তর্ঘাত ও জুলুমের পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই। অত্যাচার, দমন অভিযান, গণগ্রেফতার বন্ধ করুন। মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা বন্দীদের মুক্তি দিন। গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারের ওপর থেকে সব বাধা তুলে নিন। যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন তা স্বাভাবিক করুন। মানুষকে স্বস্তি ও শান্তি দিন। উস্কানী, ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাচারের অপরাজনীতি বন্ধ করুন।  জনগণের ভোট দেওয়ার যে অধিকার কেড়ে নিয়েছেন তা ফিরিয়ে দিন এবং অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পদক্ষেপ নিন।

অবরোধে নাশকতা প্রসঙ্গে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, চলমান নাশকতার জন্য আওয়ামী লীগই দায়ী। আমরা এর দায় নেব না। এসব ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগই জড়িত। পুলিশকে সামনে দিয়ে নাশকতা চালাচ্ছে। মানুষের জীবনের বিনিময়ে আমরা রাজনীতি করতে চাইনা, কখনো করিনি। অতীতে যাত্রীবাসে গান পাউডার দিয়ে আগুনে মানুষ পুড়িয়ে মারা, বোমা মেরে ও লগি বৈঠার তা-ব চালিয়ে মানুষ হত্যা এবং পুলিশ খুনের অপরাজনীতি আওয়ামী লীগই করেছে। এখনো তারাই সুপরিকল্পিতভাবে এসব নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছে।

২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বলেন,  বিএনপি ও ২০ দল নিরীহ নিরপরাধ জনগণকে হত্যা ও তাদের ওপর আক্রমণ করা কিংবা তাদেরকে পুড়িয়ে মারার নৃশংস অপতৎপরতায় বিশ্বাস করেনা। ঘটনাস্থল থেকে ঘাতক বোমাবাজদের গ্রেফতার না করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ঘর-বাড়িতে হানা দিয়ে তাদের আটক করা হচ্ছে। মহিলাসহ পরিবারের সদস্যদের হেনস্তা করা হচ্ছে। যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে বিভিন্ন জনপদে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হচ্ছে। এসব হত্যা-নির্যাতনের ঘটনার জড়িতদের আগামীতে অবশ্যই আইনামলে আনা হবে।

খালেদা জিয়া বলেন, বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় এখনো তালাবন্ধ। দলের নেতা-কর্মীরা কেউ নিরাপদে বাসায় থাকতে পারেনা। হত্যার উদ্দেশ্যে রিয়াজ রহমানের উপর গুলী হয়েছে। তার গাড়ি পোড়ানো হয়েছে। আমাদের দলের অনেক সিনিয়র নেতার বাসা ও অফিসে গুলি ও বোমা হামলা হয়েছে। আমাদের দলের অফিস অনেক জায়গায় পোড়ানো হয়েছে। কাউকে ধরা হয়নি। ঘটনাস্থল থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা অনেক জায়গায় অস্ত্র, বোমা ও গুলীসহ ধরা পড়েছে। তাদের সকলকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার (অব.) হান্নান শাহ, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, আরএ গনি, নজরুল ইসলাম খান ও সারোয়ারি আলম প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top