সকল মেনু

জনগণের জানমাল রক্ষায় গুলি চালাবে পুলিশ

46601নিজস্ব প্রতিবেদক : সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় এবং নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে গুলি চালাবে পুলিশ।
রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম চেম্বারে দেশের বিরাজমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও পণ্য পরিবহণ নির্বিঘ্ন করার বিষয়ে এক বৈঠকে এই ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার একেএম হাফিজ আকতার। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম।
পুলিশ সুপার বলেন, কেউ যদি পেট্রোলবামা নিক্ষেপ করে গাড়ি পোড়াতে আসে, কেউ যদি নাশকতা চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যা করে এই অবস্থায় পুলিশ গুলি চালালে আইনের কোন ব্যত্যয় ঘটবে না।
হাফিজ আকতার বলেন, চলমান অবরোধের নামে যা চলছে তা কোন রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। আন্দোলনের নামে নাশকতা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী সব মানুষেরই আত্মরক্ষার অধিকার আছে। কেউ যদি নাশকতা চালিয়ে কাউকে হত্যা করতে আসে। জানমালের ক্ষতি সাধন করে তাহলে পুলিশ গুলি চালাবে। সাধারণ মানুষও তা করতে পারে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে পুলিশ সব রকম কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। চট্টগ্রাম অংশে ১৫৩ কিলোমিটার হাইওয়েতে ২ হাজার পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। কয়েকদিনের মধ্যে এই জনবল আরো বাড়ানো হবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হাজার হাজার গাড়ি নিরাপদে নির্বিঘ্নে চলাচল করছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, সন্ধ্যার পর পর হাইওয়েতে প্রতিটি স্পর্শকাতর পয়েন্টে পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণকে সচেতন করে তাদেরকেও মহাসড়ক পাহারায় রাখা হয়েছে।
একই অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল বলেন, যারা অবরোধের নামে গাড়িতে আগুন দিচ্ছে তা কখনো রাজনৈতিক আন্দোলন হতে পারে না। আন্দোলনের নামে ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটি হচ্ছে। চিহ্নিত এবং হাতেগোনা কিছু দুষ্কৃতকারী এই নাশকতার ঘটনাগুলো ঘটাচ্ছে। তাদেরকে ইতিমধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব নাশকতার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারী সন্ত্রাসীদের প্রত্যেককে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন বলেন, বর্তমানে দেশে যে অবরোধ আন্দোলন হচ্ছে তা আন্দোলনের নামে নাশকতা। জনসম্পৃক্ততাহীন ডিজিটাল বা অনলাইনের মাধ্যমে আন্দোলন। এই আন্দোলন জনগণের কোনো কাজে আসবে না। যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা এসি রুমে বসে আছেন। আর কিছু টাকা খরচ করে ৫শ’ ১ হাজার টাকা দিয়ে ককটেল আর বোমা হামলা পরিচালনা করছেন। এই পথ সুপথ নয়। এই পথ কুপথ। এই দুষ্কৃতকারীদের প্রতিরোধে জনগণকে সচেতন হতে হবে। প্রশাসন জনগণের সঙ্গে আছে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি শফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ চট্টগ্রাম বিভাগের সব সড়ক মহাসড়কে নিরাপদে যানবাহন চলাচলে সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। এরপরও ব্যবসায়ীরা নিরাপত্তাহীনতায় যানবাহন চালাতে বা পণ্য পরিবহণে শঙ্কা বোধ করেন। তবে পুলিশকে জানালে পুলিশ টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত স্কট দিয়ে ব্যবসায়ীদের পণ্য পৌঁছে দেবে। ব্যবসায়ীরা সহায়তা চাইলেই পুলিশ সর্বনিম্ন ৫০/৬০টি এবং সর্বোচ্চ ২০০টির গাড়ির বহরে আগে পিছে এবং মাঝখানে স্কট দিয়ে দেশের যে কোন প্রান্তে পণ্য পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন চেম্বারের সহ-সভাপতি সৈয়দ জামাল আহাম্মেদ, বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। এ ছাড়া সভায়, র‌্যাব, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন, উপজেলা চেয়ারম্যান সমিতির নেতৃবৃন্দ, গার্মেন্টস ব্যবসায়ী, দোকান মালিক সমিতি, পরিবহণ সমিতির নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top